
আর্থ্রাইটিস বা বাংলায় বললে অনেকটা বাতের ব্যথা। জয়েন্টে জয়েন্টে ব্যথা প্রদাহ এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণ। আজকাল ঘরে ঘরে ঢুকে পড়েছে এই রোগ। এই রোগের প্রভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হাড় এবং জয়েন্টের তরুণাস্থির ক্ষতি করতে শুরু করে।
প্রাথমিকভাবে হালকা শক্ত হয়ে যায় এবং ফোলাভাব দেখা দেয়। সময়ের সঙ্গে বাড়তে থাকে ব্যথা। এই রোগের কারণে হাঁটাচলা করতে উঠতে বসতেও চরম বিপাকের মধ্যে পড়তে হয়। বহু অ্যালোপাথি ওষুধ খেলেও অনেক সময় সম্পূর্ণ নিরাময় হয় না এই রোগ। কিছু দিন ভাল থাকার পরেই আবার ফিরে আসে ব্যথা। যদিও বিশেষজ্ঞদের দাবি আয়ুর্বেদের মাধ্যমে এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
পতঞ্জলির অর্থোগ্রিট একটি আয়ুর্বেদিক ওষুধ, যা বিশেষভাবে আর্থ্রাইটিস এবং জয়েন্টের ব্যথা কমাতে তৈরি করা হয়েছে। পতঞ্জলি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণায় দেখা গেছে অর্থোগ্রিট আর্থ্রাইটিস এবং জয়েন্টের ব্যথায় অত্যন্ত কার্যকর।
অর্থোগ্রিট সেবন শরীরের প্রদাহ কমায় এবং জয়েন্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। এই ওষুধ হাড়কে শক্তিশালী করে, তরুণাস্থি পুষ্ট করে, যার ফলে ব্যথা এবং জয়েন্ট শক্ত হয়ে যাওয়ার সমস্যার উপশম হয়। অর্থোগ্রিটে উপস্থিত প্রাকৃতিক উপাদানগুলি শরীরে বিষাক্ত পদার্থ কমিয়ে রক্ত প্রবাহ উন্নত করে। এই ওষুধের প্রভাব কেবল ব্যথা কমাতেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি জয়েন্টের জড়তা শিথিল করতে এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও সহায়ক। আয়ুর্বেদিক হওয়ায় এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব কম, দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের জন্যও নিরাপদ বলে মনে করা হয়।
কোন রোগে অর্থোগ্রিট কার্যকর?
অর্থোগ্রিট কেবল আর্থ্রাইটিসেই নয়, বরং বিভিন্ন ধরণের জয়েন্টের ব্যথা এবং হাড় সম্পর্কিত সমস্যায়ও কার্যকর। এটি বিশেষ করে অস্টিওআর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, সার্ভিকাল এবং স্পন্ডিলাইটিসের মতো সমস্যা কমাতে বিশেষভাবে কার্যকর। যারা পুরনো আঘাত বা বার্ধক্যের কারণে হাড়ে দুর্বলতা এবং ব্যথা অনুভব করেন তাঁদের জন্যও এটি উপকারী। খেলাধুলা বা ভারী কাজের কারণে জয়েন্টের চাপ এবং প্রদাহও কমায়। যারা দীর্ঘদিন ধরে জয়েন্টের সমস্যায় ভুগছেন এবং নিরাপদ চিকিৎসা চান তাঁদের জন্য অর্থোগ্রিট একটি প্রাকৃতিক বিকল্প।
কী কী থাকে এই ওষুধে? জানেন সেই সব উপাদান কী কাজ করে?
অশ্বগন্ধা – শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে এবং ফোলাভাব কমায়।
সালাই গুগ্গুলু – জয়েন্টের ব্যথা এবং ফোলাভাব থেকে মুক্তি দেয়।
শালাকি – হাড় মজবুত করে এবং তরুণাস্থির স্বাস্থ্য উন্নত করে।
গিলয় – শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে জয়েন্টের প্রদাহ কমায়।
শুকনো আদা এবং হলুদ – প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যের কারণে ব্যথা কমায়।
সেলারি এবং মেথি – হজমশক্তি উন্নত করে এবং শরীরে জমে থাকা টক্সিন দূর করে।
কুচলা এবং নাগকেশর – জয়েন্টের জড়তা কমায় এবং হাড় মজবুত করে।
কী ভাবে ব্যবহার করা হয়?
আয়ুর্বেদচার্য এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী অর্থোগ্রিট গ্রহণ করা উচিত। সাধারণত এই ওষুধটি ট্যাবলেট আকারে পাওয়া যায় এবং দিনে দু’বার, সকাল এবং সন্ধ্যায় হালকা গরম জলের সঙ্গে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। খাওয়ার সময় খাবারের পরে হওয়া উচিত যাতে হজম সহজ হয়।
যাদের তীব্র ব্যথা আছে তারা ডাক্তারের পরামর্শে ডোজ বাড়াতে পারেন। দীর্ঘ সময় ধরে নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমেই এর সম্পূর্ণ উপকারিতা পাওয়া যায়। এছাড়াও, ভাল ডায়েট এবং হালকা ব্যায়াম করলে এর প্রভাব আরও ভাল হয়। তবে মনে রাখবেন, গর্ভবতী মহিলা, বা এমন কোনও মহিলা যার সন্তান এখনও স্তনদুগ্ধ পান করে, বা অন্য কোনও গুরুতর রোগে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের এটি খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।