বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অন্ত্রে কৃমির সংক্রমণ (Worm Infection) বা সয়েল-ট্রান্সমিটেড হেলমিন্থ ইনফেকশন মানুষের মলে উপস্থিত ডিমের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। এটি বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে সাধারণ সংক্রমণগুলির মধ্যে একটি। যে যে অঞ্চলে দূষণ বেশি, সেই সব জায়গায় কৃমির সংক্রমণ সবচেয়ে লক্ষ্য করা যায়। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে শুধু ভারতেই এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭০ শতাংশ। কৃমি হল এক ধরনের পরজীবী যা সাধারণত অন্ত্রে বাস করে এবং খাদ্যের মাধ্যমে তারাও খাদ্য গ্রহণ করে। আর এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় বাচ্চাদের মধ্যে। শিশুদের (Child Care) মধ্যে এই কৃমির সংক্রমণ একটি সাধারণ সমস্যা। কিন্তু সময় মতো এর সঠিক ব্যবস্থা না গ্রহণ করলে পরবর্তীকালে এই ভয়ানক রূপ নিতে পারে। কৃমির কারণে হওয়া পেটের ব্যথার সমস্যা কখনও কখনও তীব্র হয়ে ওঠে।
সাধারণ দূষিত খাবার খাওয়ার জন্যই বাচ্চাদের মধ্যে এই কৃমির সংক্রমণ দেখা দেয়। খাবারের মাধ্যমে কৃমির ডিম বা লার্ভা বাচ্চাদের পাকস্থলীতে পৌঁছায়। সেখান থেকে এই কৃমি অন্ত্রে বসবাস করতে শুরু করে। আবার স্ত্রী কৃমি মলদ্বারের আশেপাশে ডিম পাড়ে। বাচ্চাদের মধ্যে ফিতাকৃমি বা সুতোকৃমির সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এই কৃমি ক্ষুদ্র, পাতলা, সাদা হয় এবং সর্বদা নড়াচড়া করে।
মূলত দূষিত খাবার খাওয়ার জন্যই বাচ্চাদের মধ্যে এই কৃমির সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও, ৬ মাস বা তার চেয়ে বড় বাচ্চা, যারা হামাগুড়ি দেয় কিংবা যারা বাড়ির বাইরে খেলে- এই কারণেও তাদের মধ্যে এই কৃমির সংক্রমণ দেখা দেয়। কারণ তারা হাত না ধুয়েই ওই হাত মুখে দিয়ে ফেলে। এখান থেকে বাড়ে এই সংক্রমণের ঝুঁকি। এছাড়াও পরিবারের অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রাও শিশুদের মধ্যে কৃমি হওয়ার অন্যতম কারণ। শিশুদের মধ্যে কৃমি হওয়ার সাধারণ কারণগুলি হল পরিচ্ছন্নতার অভাব, সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলা, দূষিত খাবার এবং জল পান করা, কাঁচা খাবার খাওয়া, হাত না ধুয়ে খাবার খাওয়া ইত্যাদি।
বাচ্চারা যদি কৃমির সংক্রমণে আক্রান্ত হয়, তাহলে তার বেশ কিছু উপসর্গ রয়েছে। পেটে ব্যথা, ডায়ারিয়া, বমি, জন্ডিস, পেট খাবার, বদহজমের সমস্যা, ওজন কমে যাওয়ার মত একাধিক লক্ষণ রয়েছে। এই ধরনের উপসর্গগুলি উপেক্ষা করলে আপনার সন্তানের সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।
এছাড়াও যদি আপনার সন্তান বিনা কারণে বার বার থুতু ফেলতে থাকে তাহলে বুঝবেন তার কৃমি হয়েছে। কৃমি মুখে লালা বাড়িয়ে দেয়, তাই এই সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও শিশুর মলের সঙ্গে মারাত্মক দুর্গন্ধ বের হতে শুরু করে। এটিও কৃমির কারণে পেটে হওয়া সংক্রমণের জন্যই হয়। এছাড়াও যদি আপনার সন্তান মলদ্বারের চারপাশে জ্বালা ও অস্বস্তির অভিযোগ করে, তাহলে এই বিষয়টি হালকা ভাবে নেবেন না। স্ত্রী কৃমি সাধারণত মলদ্বারের আশেপাশের অঞ্চলে ডিম দেয়। যে কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়।
আরও পড়ুন: কিডনির কারণে পা ফুলে যাচ্ছে! ঘরোয়া উপায়ে মুক্তির উপায় কী?