
মাত্র ৬৬ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত (Heart Attack) হয়ে মৃত্যু হল বলিউডের জনপ্রিয় ও বিশিষ্ট অভিনেতা সতীশ কৌশিক (Satish Kaushik)। বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁর মৃত্যুসংবাদ পাওয়া যায়। দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে যোগদান করতে গাড়িতে যাওয়ার সময় হঠাত অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই প্রবীণ অভিনেতা। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই গাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। পরে হাসপাতালের চিকিত্সকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। স্বাভাবিকভাবেই জনপ্রিয় এই অভিনেতার মৃত্যুতে গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। সতীশ কৌশিকের হঠাত চলে যাওয়া অনেক প্রবীণ অভিনেতাই মেনে নিতে পারছেন না। বলিউডের কাছের বন্ধুরাই জানিয়েছেন, বয়সের প্রতি খেয়াল রেখেই নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান ছিলেন তিনি। স্বাস্থ্যের কথা ভেবে সময়মতো খাবার খাওয়া, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত মর্নিং ওয়াক করতেন তিনি। স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান থেকেও তাহলে এমন ঘটনা ঘটল কীভাবে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, অধিকাংশ হার্ট অ্যাটাক করোনারি হার্ট ডিজিজের কারণে হয়ে থাকে। করোনারি ধমনীর ভিতরের স্তরে চর্বি জমে থাকলে তার পথ সরু হয়ে যায়। এমন অনেক পরিস্থিতি তৈরি হয় যখন করোনারি ধমনী সংকুচিত হতে পারে আবার করোনারি ধমনী রোগের বিকাশও ঘটতে পারে। সাধারণভাবে হার্টে রক্তের প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়, তখন রক্ত সরবরাহের অভাবে হৃত্পিণ্ডের পেশিগুলি মারা যায়।এমন ঘটনাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়। রক্ত জমাট বেধে হার্টের পেশিগুলি রক্তসরবরাহকারী ধমনীকে ব্লক করে দেয়। যার জেরে ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন ব্যক্তিরা।
হার্ট অ্যাটাকের কারণ কী?
চর্বি, কোলেস্টেরল ও অন্যান্য পদার্থ জমাট বেধে ধমনীর গায়ে একপ্রকার স্তর তৈরি করে। যার ফলে ধমনীর পথ অনেকটাই সরু ও সংকুচিত হয়ে পড়ে। জমাট বাধার ফলে রক্তপ্রবাহেও বাধাপ্রাপ্ত হয়। হার্ট অ্যাটাক এখন অতি -সাধারণ একটি ঘটনা হয়ে গিয়েছে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে তো বটেই, ৩০ বছরের নীচে যাদের বয়স তাদের মধ্যেও হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় অবিলম্বে চিকিত্সকের পরামর্শ না নিলে চরম পরিণতি হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ৪৫ ও ৫৫ বছরের বেশি বয়সী পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজগুলি দেখা যায়। ৬০ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যেও হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বেশি। এই বয়সে এসে স্বাস্থ্যের প্রতি বেশিই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। ৬০ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলি কী কী, তা জেনে নিন এখানে…
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ এজিং অনুসারে,হার্ট ও রক্তনালীগুলি বার্ধক্যের কারণে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত হয়। বিশ্রাম নেওয়ার সময় যদি হৃদস্পন্দন সাধারণ ধীর-স্থির ও শান্ত থাকে। তবে মানসিক চাপ ও শারীরিক ক্রিয়ার কারণে আগের তুলনায় হৃদস্পন্দনের হার অনেকটাই বেড়ে যায়। দ্রুত পাম্প করার ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়।
বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি– ৬০ বছর বসয়ী ব্যক্তিরা যদি হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হোন তাহলে সাধারণত বুকে ব্যথা ও অস্বস্তি দেখা যায়। হার্ট অ্যাটাকের জন্য এই লক্ষণ হল সবচেয়ে সাধারণ ও প্রথম। এমনটা হলে কখনও চেপে রাখবেন না। বুকে চাপ ধরা, চিনচিন ভাব ধরলে, বুকে জ্বালাভাব, ব্যথা শুরু হলে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি তৈরি হলে সাধারণত বুকের বান দিকে ও কেন্দ্রে অনুভূত হয়। দিনের যে কোনও সময় ও কয়েক সপ্তাহ পর আসন্ন হার্ট অ্যাটাকের ইঙ্গিত হতে পারে এটি।
– মহিলাদের ক্ষেত্রে তলপেটে বা বুক ব্যথা অনুভূত হতে পারে। ঘাড়, চোয়াল, বাহুকে ব্যথা অনুভূত হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। অনেকসম ঝিঁঝিঁ বা অসাড় হয়ে যাওয়ার মতো হতে পারে।
অতিরিক্ত ক্লান্তি
চ্যালেঞ্জিং ও ক্লান্তিকর বোধ হলে অতিরিক্ত চাপ পড়ে হার্টের উপর। হৃদপিণ্ডে রক্তপ্রবাহ তখন দ্রুত হয় ও পাম্পের মতো ক্রিয়া আরও দ্বিগুণ হতে থাকে।
ঘাম হওয়া ও শরীরে ঠান্ডা অনুভূত হওয়া
অস্বাভাবিক ও অত্যাধিক মাত্রায় ঘাম হলে বা ঘাম বের হওয়ার সময় ঠান্ডা লাগলে সাবধান হোন বিশেষ করে ৬০ বছর বয়সিদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের আরেকটি সাধারণ লক্ষণ। বিশেষ করে যাঁরা শারীরিকভাবে সক্রিয় নন বা খুব হালকা কাজকর্ম করেন, তাদের জন্য এই লক্ষণ আগাম ইঙ্গিত দেয়।