হার্নিয়া- এই রোগটি সম্বন্ধে আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষেরই সুস্পষ্ট কোনও ধারণা নেই। অথচ রোজকার জীবনে হামেশাই এই শব্দটি আমাদের শুনতে হয়। তবে এই রোগের গভীরতা বুঝতে পারেন না। পেটের ভিতরে রয়েছে বিভিন্ন অঙ্গ। এই অঙ্গের কোনও অংশ যদি পেটের দেওয়াল ভেদ করে অর্থাৎ পেটের কোষকলা ঠেলে বাইরে বেরিয়ে আসতে চায় তখনই সেই অবস্থাকে বলা হয় হার্নিয়া। তাই হার্নিয়া হলে তলপেট ভারি হয়ে যায়। অপারেশন পেটেই করতে হয়। হার্নিয়া অন্ত্রের দেওয়ালে আটকে গেলে তখন তাকে হার্নিয়েটেড বলা হয়। অনেক ক্ষেত্রে পেটে কোনও অপারেশন হলে পরবর্তীতে সেখান থেকেও হার্নিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। হার্নিয়া বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে-
ফিমোরাল হার্নিয়া
হায়াটাল হার্নিয়া
আমব্লায়াকাল হার্নিয়া
ইঙ্গুয়াল হার্নিয়া
সম্প্রতি এইচটি লাইফস্টাইলের একটি সাক্ষাৎকারে চেন্নাইয়ের জেনারেল সার্জন ডাঃ জামিল আক্তার যেমন বলেছেন, হার্নিয়া হওয়ার পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে। পেট আর পেলভিকের মধ্যেকার অঞ্চলে অতিরিক্ত চাপ পড়লে পেটের পেশীর দেওয়ালগুলিতে ফাটল ধরে। পেশি প্রসারিত হয়। তখনই ব্যথা শুরু হয়। হার্নিয়া হওয়ার আরও কিছু কারণ থাকে। COPD,ওবেসিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য, প্রোস্ট্যাটোমেগালি, স্মোকিং, পেশি সংযোগকারী টিস্যুর মধ্যেকার সমস্যা, ওপেন অ্যাপেনডেক্টমি, প্রায়শই ভারী ওজন তুললে সেখান থেকে এই সমস্যা বাড়ে। কুঁচকির দিকে ব্যথা বা ফোলা হল হার্নিয়ার প্রথম লক্ষণ। এছাড়াও পেটের দেওয়ালে যদি ফোলা ভাব থাকে এবং সঙ্গে ব্যথা থাকে তাহলে নিশ্চিত হয়ে যান যে সেটি হার্নিয়া। হার্নিয়া বড় হয়ে গেলে নিজের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যহত হয়। হার্নিয়া খুব বেশি বেড়ে গেলে ধমনী ব্লক হয়ে যায়। সেখান থেকে শ্বাসরোধ হতে পারে।
হার্নিয়ার একমাত্র ওষুধ হল অপারেশন। অপারেশন ছাড়া হার্নিয়ার গতি নেই। দীর্ঘদিন ধরে যদি কাশির সমস্যা থাকে, ধূমপানের অভ্যাস থাকে, ওবেসিটির সমস্যা থাকে তবেই পরবর্তীতে বাদবাকি সমস্যা জটিল হয়। তাই হার্নিয়ার ঝুঁকি কমাতে নিজের মধ্যে যে সব বদল আনবেন-
ওজন বজায় রাখুন- ওজন কোনও ভাবেই বাড়তে দেবেন না। সব সময় ওজন সীমার মধ্যে রাখুন। শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়লে হার্নিয়ার সমস্যা বেশি হয়।
পেশীর চাপ কমানো- ওজন তোলা, নিয়মিত জিম, বডি বিল্ডার, ক্রীড়াবিদদের মধ্যেই এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। তাই অপ্রয়োজনে বেশি ওজন তুলবেন না। এতে হার্নিয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
ধূমপান চলবে না- ধূমপান একেবারেই বর্জন করতে হবে। কারণ ধূমপান করলে একটানা কাশি থাকে। সেখান থেকে পেটে অস্বাভাবিক চাপ পড়ে। হার্নিয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।