অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা (Unhealthy Lifestyle) আমাদের জীবনে সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরলের পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা। এই ফ্যাটি লিভারের (Fatty Liver) মূল কারণ খুঁজতে গেলে যে বিষয়টি সবার উপরে উঠে আসবে তা হল অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা এবং অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া। যকৃৎ হল আমাদের শরীরের অন্যতম প্রধান অঙ্গ। শরীরের রক্ত থেকে বিষাক্ত পদার্থ- এই পুরো ছাঁকনি প্রক্রিয়ার কাজটি করে যকৃৎ। সুতরাং কোনও ভাবেই এই অঙ্গের সঙ্গে অবহেলা করা উচিত নয়। মূলত এই যকৃতে চর্বি জমতে শুরু করে, তখন দেখা দেয় ফ্যাটি লিভারের সমস্যা। এখন এই সমস্যা লাইফস্টাইল ডিজ়িজে (Lifestyle Diseases) পরিণত হয়েছে।
অত্যধিক মদ্যপানে বাড়ে ফ্যাটি লিভারের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। বর্তমানে ভারতের বর্তমান জনসংখ্যার প্রায় ১২-১৫ শতাংশ মানুষ এই ফ্যাটি লিভারের সমস্যার ভুগছেন। আজ পাঁচ জনের মধ্যে একজন মানুষ ফ্যাটি লিভারের বিষয় নিয়ে চিন্তিত। আজ যেভাবে লিভার সিরোসিসের সমস্যা দেখা দিচ্ছে, একই ভাবে বেড়েছে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজ়িজের সমস্যা। ডায়াবেটিস, উচ্চ-রক্তচাপ বা কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া এবং স্থূলতাও নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজ়িজের জন্য দায়ী।
অনেক ক্ষেত্রে শুধু যে মদ্যপান ফ্যাটি লিভারের জন্য দায়ী তা নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ যেমন ব্যথা কমানোর ওষুধ, হৃদরোগের ওষুধও লিভারের ওপর কু-প্রভাব ফেলে। এছাড়াও ভাইরাসের জনিত কারণেও দেখা দেয় ফ্যাটি লিভারের সমস্যা। কিন্তু আসল সমস্যা হল যে এই রোগ সহজে ধরা পড়ে না। অর্থাৎ এটি উপসর্গহীন। যখন লিভার একেবারেই কাজ করা বন্ধ করে দেয়, জন্ডিসের সমস্যা দেখা দেয়, তখন সামনে আসে ফ্যাটি লিভারের বিষয়টি। তবে আপনি যদি প্রথম থেকে নিজের খেয়াল রাখেন, যকৃতের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন হন, তাহলে সাধারণ কয়েকটি বিষয় মেনে চলুন।
-চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া কমিয়ে দিন। প্যাকেটজাত খাবার একদম খাবেন না। প্রক্রিয়াজাত খাবার লিভারের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।
-এমন খাবার খাবেন না যা হজমে সমস্যা তৈরি করে। বদহজমের সমস্যা খারাপ প্রভাব ফেলে লিভারে। এর জন্য আপনি রেড মিট খাওয়া বন্ধ করে দিতে পারেন। অনেক ক্ষেত্রে দুগ্ধজাত পণ্যও হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
– ধূমপান এবং অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন। যদি মাঝে-মধ্যে অ্যালকোহল পান করেন তাতেও ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে লিভারে। এর পাশাপাশি ক্যাফেইন যুক্ত খাবার কম খান।
-প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। এতে শরীর থেকে টক্সিন পদার্থ বের করে দেয় এবং এতে শরীর সুস্থ থাকে।
-সময়মতো খাবার খান এবং ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য এই বিষয় দুটি খুব জরুরি।
আরও পড়ুন: ডায়াবেটিসের রোগী হয়েও নিজের খেয়াল রাখছেন না? বাড়ছে লিভার ফেলিওরের ঝুঁকি