
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’-এর মতে, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪০ শতাংশ গর্ভবতী মহিলা আজ অ্যানেমিয়ায় ভুগছেন। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শরীরে আয়রন ঘাটতি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। আর এর প্রভাব পড়ে নবজাতকের উপরও। বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত শরীরে পুষ্টির অভাব থাকলে এই এই রোগ দেখা দেয়। শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকলে তার উপসর্গও লক্ষ্য পায়। শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকলে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, বুকে ব্যথা, মাথা ব্যথা, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, ফ্যাকাশে ত্বক ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। যদি শরীরের সমস্ত অংশে অক্সিজেন সরবরাহ করার জন্য যদি পর্যাপ্ত হিমোগ্লোবিন তৈরি না হয় তাহলে এই লক্ষণগুলো আরও তীব্র হতে থাকে।
গর্ভাবস্থায় শরীরে আয়রনের ঘাটতি যাতে না হয় সেই দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। অনেক ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার আগে ও পরেও মহিলাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকে। এই অবস্থায় ভ্রূণে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। গর্ভাবস্থায় শরীর নানাভাবে পরিবর্তন হতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে যদি শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকে তাহলে রক্তাল্পতার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়। আর যদি গর্ভাবস্থায় আপনি রক্তাল্পতায় আক্রান্ত হন, তাহলে প্রেগন্যান্সি ঝুঁকিপূর্ণ হয় এবং প্রিম্যাচিওর সন্তান প্রসবের সম্ভাবনা থাকে। তাই সময় থাকতেই এড়াতে হবে আয়রনের ঘাটতি এবং রক্তাল্পতার ঝুঁকি। এর জন্য কী-কী করবেন, দেখে নিন…
ঋতুস্রাবের সময় অত্যধিক পরিমাণে রক্তক্ষরণ হলে গর্ভাবস্থার আগেও শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। এটাও রক্তাল্পতার অন্যতম কারণ। এই অবস্থায় গর্ভধারণে ঝুঁকি তৈরি হয়। অন্যদিকে, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় রক্তাল্পতার সম্ভাবনা শরীরে আরও নানা রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। তবে এই অবস্থাকে সহজেই প্রতিরোধ করা যায়। চিকিৎসাধীন থাকলে রক্তাল্পতার ঝুঁকি এড়ানো যায়।
গর্ভাবস্থায় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। ফোলেট, ভিটামিন ১২-এর মতো পুষ্টির অভাবও রক্তাল্পতার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। এই পরিস্থিতিতে ডাক্তাররা আয়রন সাপ্লিমেন্ট, ফোলেট সাপ্লিমেন্ট দিয়ে থাকেন। এতে অনেকাংশে রক্তাল্পতার ঝুঁকি এড়ানো যায়। এছাড়াও বেশি কিছু খাবার রয়েছে যা ডায়েটে রাখলে আয়রনের ঘাটতি কমতে পারে।
রেড মিট, সামুদ্রিক মাছ, ডাক, পালং শাকের মতো শাক-সবজি, কিশমিশ, অ্যাপ্রিকটের মতো শুকনো ফল ইত্যাদি খেতে পারেন। এছাড়া ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান। এর জন্য খাদ্যতালিকায় ব্রকোলি, বাতাবি লেবু, কিউই, শাক-সবজি, লেবু, কমলালেবু, বেলপেপার, স্ট্রবেরি, টমেটো ইত্যাদি রাখতে পারেন। এছাড়াও আপনি টক দই, ওটমিল, গ্রানোলা খেতে পারেন। ব্রেকফাস্টে পালং শাকের স্মুদি পান করতে পারেন। এতে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হতে পারে।