ভারতে ক্রমশ ডায়াবেটিসে (Diabetes) আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ডায়াবেটিস একটি নন কমিউনিকেবল ডিজিজ। তবে একবার কোনও ব্যক্তির ডায়াবেটিস ধরা পড়লে তাকে সারাজীবন চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয়। প্রশ্ন হল ডায়াবেটিস অসুখটি কী? সাধারণভাবে বলা যায়, একজন ব্যক্তির দেহে স্বাভাবিকভাবে ও প্রয়োজন অনুসারে ইনসুলিন (Insulin) নামে হরমোন তৈরি না হলে দেখা দিতে পারে ডায়াবেটিস। এমনকী ইনসুলিন তৈরি হওয়ার পরেও তা কোনও কারণে কাজ করতে না পারলেও দেখা দিতে পারে ডায়াবেটিস (Blood Sugar)। এই অসুখে ইনসুলিনের অভাবে কোষে কোষে গ্লুকোজ পৌঁছতে পারে না। ফলে রক্তে বাড়ে সুগারের মাত্রা যা ধীরে ধীরে বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতিসাধন করতে থাকে।
ডায়াবেটিসের সাধারণ লক্ষণ
ডায়াবেটিস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার মত অনুসারে, ভারতে মোটামুটি ৭ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বেড়ে গেলে নানাবিধ জটিল শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। উদাহরণ হিসেবে গ্লকোমা, ক্ষত পূরণে বিলম্ব, ক্লান্তি, শ্রান্তিবোধ, বারংবার মাথা ব্যথা, ঝাপসা দৃষ্টি, ছানি, দুর্বল রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা, ঘনঘন ইউরিন ত্যাগের ইচ্ছার (এমনকী রাতেও) কথা বলা যায়।
ডায়াবেটিসের নতুন উপসর্গ
সম্প্রতি সুগারের কিছু নতুন লক্ষণের কথাও জানা যাচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, বহুবার আমাদের শরীর এই ধরনের উপসর্গ প্রকাশ করে ও ডায়েবেটিস সম্পর্কে আমাদের সচেতন করার চেষ্টা করে। তাই আসুন, নতুন ধরনের লক্ষণ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা যাক।
পায়ের দিকে লক্ষ রাখুন
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডায়াবেটিস অ্যান্ড ডাইজেস্টিভ অ্যান্ড কিডনি ডিজিজ-এর তরফে জানানো হচ্ছে, পায়ে হঠাৎ করে কোনও পরিবর্তন বা আলাদা ধরনের উপসর্গ প্রকাশ পেলে সতর্ক হন। চিকিৎসকের সঙ্গে সত্ত্বর যোগাযোগ করুন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে, প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেকের উচিত নিয়মিত পায়ের প্রতি নজর দেওয়া। কোনও পরিবর্তন চোখে এলে চিকিৎসকের পরামর্শ করা।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, পা লাল বর্ণ ধারণ করলে, গরম হয়ে পড়লে, ফুলে গেলে তা অনিয়ন্ত্রিত সুগারের প্রতি নির্দেশ করে।
ব্লাড সুগারের স্বাভাবিক মাত্রা
আট ঘণ্টা খালি পেটে থাকার পর— প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ৯৯ মিলিগ্রাম বা তার কম সুগারের মাত্রা থাকা স্বাভাবিক।
খাবার খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর বা পোস্ট প্রান্ডিয়াল সুগার — প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ১৪০ মিলিগ্রাম বা তার কম সুগার স্বাভাবিক।
কী করবেন
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের প্রথম ধাপ হল ডায়েট কন্ট্রোল। ডায়াবেটিসে ক্যালোরি গ্রহণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। বাড়তি খাদ্য মানেই বাড়তি গ্লুকোজ। তাই স্টার্চ নির্ভর খাদ্য খাওয়া কমানো প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে সুগার নিয়ন্ত্রণে সুবিধা হবে। পাতে রাখুন অনেকখানি সবুজ শাকসব্জি। সবুজ শাকসব্জিতে ক্যালোরির মাত্রা থাকে কম। অথচ পেট ভরা থাকে দীর্ঘসময়। তাই চট করে রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়ে না। এছাড়া সবুজ ও অন্যান্য রঙের শাকসব্জিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ, বিটা ক্যারোটিন এবং ম্যাগনেশিয়াম। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে এই ধরনের উপাদানগুলি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: Benefits of Litchi: ওজন কমানো থেকে লিভার ক্যানসার, লিচুর রয়েছে অনেক গুণ! জানুন