
নিউমোনিয়া (Pneumonia) একটি মারাত্মক রোগ। যা বিশ্বজুড়ে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে, একটু সচেতন হলেই এই রোগ থেকে নিজের পরিবারকে রক্ষা করা সম্ভব। আজ ১২ নভেম্বর বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস (World Pneumonia Day)। এই উপলক্ষে আপনার পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষিত রাখতে এই ৫টি সহজ অভ্যাস করা ভাল।
যে কোনও রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকা হল এক নম্বর অস্ত্র। শিশুদের জন্য বিশেষ করে। এটা নিশ্চিত করতে হবে যে আপনার সন্তানের ‘ইউনিভার্সাল ইমিউনাইজেশন প্রোগ্রাম’-এর অধীনে নিউমোকক্কাল কনজুগেট ভ্যাকসিন (PCV) ঠিক সময়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের টিকা কার্ড পরীক্ষা করে দেখুন, যেন কোনও ডোজ বাদ না পড়ে।
দূষিত বাতাস ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি করে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। বিশেষত শীতকালে যখন বায়ুদূষণ বেড়ে যায়, তখন আরও সতর্ক থাকতে হবে। তাই রান্নার জন্য কাঠ বা কয়লার পরিবর্তে এলপিজি-এর মতো পরিষ্কার জ্বালানি ব্যবহার করতে পারেন। ঘরের ভেতরে যেন পর্যাপ্ত আলো বাতাস ঢোকে, সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
নিউমোনিয়ার মতো শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ হাত দিয়েই ছড়াতে পারে। তাই নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস এই সংক্রমণ রুখতে পারে। খাবার তৈরি করা বা খাওয়ার আগে, কাশি বা হাঁচির পর এবং মুখ স্পর্শ করার আগে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে ভাল করে হাত ধোবেন। পরিবারের সকল সদস্য, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের এই অভ্যাস শেখাতে হবে।
পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের পর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন ৬৫ বছরের বেশি বয়সী এবং যারা ডায়াবেটিস বা হৃদরোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতায় ভুগছেন। তাই প্রতিরোধমূলক টিকা নেওয়া জরুরি। পরিবারের প্রবীণ সদস্যদের বার্ষিক ফ্লু শট এবং প্রাপ্তবয়স্কদের নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন নিশ্চিত করুন। ভিটামিন সি, জিঙ্ক এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। যা প্রাকৃতিকভাবে ফুসফুসকে শক্তিশালী করে।
কখনও কখনও সাধারণ কাশিও নিউমোনিয়ার গুরুতর সংক্রমণে পরিণত হতে পারে। তাই দ্রুত রোগ শনাক্ত করা খুবই জরুরি। যদি দেখেন শিশু দ্রুত শ্বাস নিচ্ছে (এক মিনিটের মধ্যে ৫০ বারের বেশি) অথবা শ্বাস নেওয়ার সময় বুকের নিচের অংশ ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে, তবে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যান। বয়স্কদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জ্বর, ঘন ঘন কফ সহ কাশি, বিভ্রান্তি বা ঠোঁট ও মুখমণ্ডল নীলচে হয়ে গেলে অবিলম্বে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।
নিউমোনিয়া প্রতিরোধে এই তিনটি প্রধান বিষয় মনে রাখুন – টিকা নেওয়া, পরিষ্কার বাতাস গ্রহণ করা এবং রোগ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা। আপনার পরিবার ও পরিচিতদের সঙ্গে এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি ভাগ করে নিন, যাতে নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা সবাই সফল হতে পারি।