Explained: সাবধান! ‘ডায়েট’ কোল্ড ড্রিঙ্ক‌‌ও নষ্ট করছে আপনার লিভার

Diet Coke: এতদিন অনেকেই ভাবতেন, মদ খেলে লিভারের হয়। কিন্তু সেই একই রকমের ক্ষতি ডেকে আনতে পারে বোতলবন্দি ঠাণ্ডা পানীয়। সম্প্রতি বার্লিনে অনুষ্ঠিত হওয়া ইউনাইটেড ইউরোপিয়ান গ্যাসট্রোএন্ট্রোলজির বার্ষিক কংগ্রেসে যে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে, তার ছত্রে ছত্রে রয়েছে বিস্ফোরক তথ্য

Explained: সাবধান! ‘ডায়েট’ কোল্ড ড্রিঙ্ক‌‌ও নষ্ট করছে আপনার লিভার

| Edited By: Purvi Ghosh

Oct 19, 2025 | 7:16 PM

পুজোয় ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে নিশ্চয় আপনিও ঠাণ্ডা পানীয় খেয়েছেন? ক্লান্ত শরীরে যেন একরাশ এনার্জি যোগ করে বোতলবন্দি কালো-কমলা বা সাদা রঙের মিষ্টি ঠাণ্ডা পানীয়। কিন্তু জানেন কি, মাত্র এক বোতল বা ক্যানবন্দী ঠাণ্ডা পানীয় লিভারের জন্য কতটা ক্ষতিকারক? তা সে ‘ডায়েট’ কোল্ড ড্রিঙ্কস হোক বা সাধারণ ফুল ফ্যাট কোল্ড ড্রিঙ্কস! সম্প্রতি এক গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে যা চমকে দিয়েছে গবেষকদেরও। এতদিন মনে করা হত, যাঁরা অনেক বেশি পরিমাণে ঠাণ্ডা পানীয় পান করেন, তাঁদেরই লিভারের রোগ হওয়ার বেশি প্রবণতা থাকে, কিন্তু সেই ধারণাকে সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণিত করে দিয়েছে সাম্প্রতিক গবেষণা।

ব্রিটেনের এক নয়া গবেষণার প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, ঠাণ্ডা পানীয় পান করলে লিভারের ভিতর অতিরিক্তি চর্বি জমা হতে থাকে। যেখান থেকে MASLD বা ‘মেটাবলিক ডিস-ফাংশন অ্যাসোসিয়েটেড স্টিয়াটটিক লিভার ডিজিজ’ জন্ম নেয়। এর সঙ্গে কম বা বেশি পরিমাণে ঠাণ্ডা পানীয় খাওয়ার যোগ নেই। মাত্র ২৫০ মিলিলিটারের ফিজি কার্বোনেটেড ড্রিঙ্কস লিভারের প্রাণঘাতী রোগ হওয়ার প্রবণতাকে এক ধাক্কায় ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়।

১,২৩,০০০ ব্রিটিশ পূর্ণবয়স্কদের উপরে বৈজ্ঞানিকরা এই গবেষণা চালান। দেখা যায়, যাঁরা কোকা-কোলা পান করেন, তাঁদের লিভারের রোগ ধরা পড়ার প্রবণতা ৫০% বেশি। তাজ্জব করা বিষয়, সাধারণ ছেড়ে যাঁরা চিনি কম খাবেন বলে ডায়েট কোক বা স্প্রাইট জিরো পান করেছেন, তাঁদের MASLD হওয়ার সম্ভাবনা ৬০% বেশি। গবেষণার ফলাফল দেখে বৈজ্ঞানিকরা বলেছেন, বোতলের গায়ে ‘ডায়েট’ লেখা থাকলেই ঠাণ্ডা পানীয় স্বাস্থ্যকর, এই ধারণা টাই ভুল। এটা বিজ্ঞাপনী প্রচার মাত্র। গবেষকদের বক্তব্য, ‘স্বাস্থ্যসচেতন বহু মানুষই আজকাল ডায়েট কোল্ডড্রিঙ্কস খেয়ে ভাবেন, বোধহয় শরীরে চিনির মাতা ঠিক রাখলেন। কিন্তু ওই ডায়েট পানীয় খেয়ে যে লিভার শেষ হয়ে যাচ্ছে সেটা অনেকেরই অজানা।’

গবেষকরা বলছেন, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বিশ্ব জুড়েই ঠাণ্ডা পানীয় গ্রহণের প্রবণতা বিপজ্জনক ও চিন্তার বিষয়। প্রতিদিন মাত্র এক ক্যান করে ‘লো’ বা ‘জিরো’ সুগারের সুইটেনড ড্রিঙ্কস প্রাণঘাতী লিভারের রোগ একধাক্কায় অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু অনেকেই সেটা জানেন পর্যন্ত না! কৃত্রিম রাসায়নিক দিয়ে মিষ্টি বানানো পানীয় থেকে দূরে থাকাটাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ, বলছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলছেন, তেষ্টা পেলে জল খান। জল মেটাবলিজম ঠিক রাখে ও লিভারের বাড়তি ফ্যাট ঝরিয়ে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে।

আসলে যে সব ঠাণ্ডা পানীয়ে চিনি থাকে, সেগুলি ব্লাড গ্লুকোজ ও ইনসুলিন লেভেলকে প্রভাবিত করে। এতে ওজন ও ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে। কিন্তু নন সুগার ড্রিঙ্কস সরাসরি ‘গাট মাইক্রোবায়াম’-এ প্রভাব ফেলে। এতে লিভারের স্বাস্থ্য খারাপ হয়। ৭ অক্টবর বার্লিনে অনুষ্ঠিত হওয়া ইউনাইটেড ইউরোপিয়ান গ্যাসট্রোএন্ট্রোলজির বার্ষিক কংগ্রেসে এই রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। ব্রিটিশ লিভার ট্রাস্ট-এর অনুমান, প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন আজ MASLD বা ‘মেটাবলিক ডিস-ফাংশন অ্যাসোসিয়েটেড স্টিয়াটটিক লিভার ডিজিজ’-এ আক্রান্ত। যাঁর মধ্যে ৮০% আক্রান্ত জানেনই না যে তাঁদের লিভারের সমস্যা রয়েছে। ডায়াবেটিস বা ওজন বেশি থাকলে অবশ্যই লিভারের টেস্ট করানো উচিত, পরামর্শ চিকিৎসকদের। তাঁরা এও বলছেন, মানুষ ভাবেন শুধু মদ খেলে লিভারের ক্ষতি হয়। কিন্তু বাড়তি মেদ ও অনিয়ন্ত্রিত ব্লাড সুগার-ও শরীরের একইরকম ক্ষতি করে।