
সোরিয়াসিস এক দীর্ঘস্থায়ী ত্বকের সমস্যা। যা অসম্ভব বেদনাদায়কও বটে। এই রোগ বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিজেই ত্বককে আক্রমণ করলে এই রোগ হয়। অর্থাৎ এক ধরনের অটোইমিউন ডিজিজ। এই রোগ হলে ত্বকে লাল ফুসকুড়ি, চুলকানি এবং সাদা স্তর দেখা দেয়। সাধারণত অ্যালোপ্যাথিতে এর যে ধরনের চিকিৎসা হয় তাতে শুধুমাত্র লক্ষণগুলি দমন করা হয়। যা রোগীকে সাময়িক স্বস্তি দেয় কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার সমাধান হয়না। এই রোগের চিকিৎসায় যুগান্তকারী পথ দেখাচ্ছে পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ। পতঞ্জলির ওষুধ দিয়ে এই রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব।
পতঞ্জলি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক পরিচালিত গবেষণাটি বিশ্বখ্যাত “টেলর অ্যান্ড ফ্রান্সিস” গোষ্ঠীর জার্নাল অফ ইনফ্ল্যামেশন রিসার্চে প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণা দেখায় যে পতঞ্জলির তৈরি সোরোগ্রিত ট্যাবলেট এবং দিব্যা তেল সোরিয়াসিসের চিকিৎসায় কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। পতঞ্জলির আচার্য বালকৃষ্ণ বলেন, পতঞ্জলির বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করে সোরিয়াসিসের মূলে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি জানান, সোরিয়াসিস একটি দীর্ঘস্থায়ী চর্মরোগ, যেখানে ত্বকে রূপালী রঙের মতো চকচকে ত্বক এবং লাল ফুসকুড়ি দেখা দেয়। এই ফুসকুড়িগুলি খুব চুলকানির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসায়, এই রোগের শুধুমাত্র লক্ষণগুলির কমানো হয়। আবার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা যায়। সোরিয়াসিস একটি গুরুতর অটোইমিউন রোগ। এখন পর্যন্ত এর কোন স্থায়ী প্রতিকারও ছিল না। পতঞ্জলি প্রমাণ করেছে সোরিয়াসিসের মতো দুরারোগ্য রোগও প্রাকৃতিক ভেষজ দিয়ে নিরাময় করা সম্ভব।
কী ভাবে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়?
সোরোগ্রিত এবং দিব্যা তেল উভয়ই আয়ুর্বেদিক ওষুধের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এতে ব্যবহৃত ভেষজ ত্বকের প্রদাহ কমায়, মৃত ত্বকের কোষ অপসারণে সাহায্য করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখে। এই চিকিৎসা কেবল লক্ষণগুলিই উপশম করে না বরং রোগের মূলেও কাজ করে, যার ফলে দীর্ঘমেয়াদী উপশম পাওয়া যায়।
অ্যালোপ্যাথিক ওষুধে অনেক সময় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা যায়। যদিও পতঞ্জলির তৈরি এই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা প্রাকৃতিক এবং এর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা রিপোর্টে উল্লেখ নেই। এটি রোগীকে শারীরিক এবং মানসিক উভয় স্তরেই ভারসাম্য প্রদান করে।
আন্তর্জাতিক স্তরে এই গবেষণার প্রকাশ প্রমাণ করে যে আয়ুর্বেদ এখন আর কেবল ভারতে সীমাবদ্ধ নয়। বরং এর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি এবং কার্যকর ফলাফল সারা বিশ্বে স্বীকৃত হচ্ছে। এটি ভারতের ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য একটি বিরাট সম্মানের বিষয়।