প্রজননের বয়সকালে ৮ থেকে ১৩ শতাংশ মহিলা ভুগছেন পিসিওএস বা পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে। মূলত দেহে পুরুষ হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে পিসিওএস-এর সমস্যা দেখা দেয়। পিসিওএস-এর জেরেই মুখে রোমের আধিক্য বেড়ে যায়, মুখ ও পিঠভর্তি ব্রণ বেরোতে থাকে, চুল পড়া বেড়ে যায়। এছাড়া ওজন বাড়তে থাকে। আর পিসিওএস-এর ক্ষেত্রে অনিয়মিত ঋতুস্রাব এবং ঋতুস্রাব সংক্রান্ত সমস্যা জোরাল হতে থাকে। পিসিওএস-এর স্থায়ী সমাধান নেই। চিকিৎসকদের মতে, স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল মেনে চললে পিসিওএস-এর উপসর্গগুলো কমানো যায়। তবে, এক্ষেত্রে আপনি আয়ুর্বেদের সাহায্যও নিতে পারেন।
আয়ুর্বেদিক ভেষজ: আয়ুর্বেদিক উপায়ে পিসিওএস-এর সমস্যাকে বশে রাখতে আপনি বেশ কিছু ভেষজ উপাদানের সাহায্য নিতে পারেন। অশ্বগন্ধা, দারুচিনি ও হলুদের মতো উপাদানকে নিত্যদিনের সঙ্গী করে তুলুন। এই তিনটি ভেষজ উপাদান কর্টিসলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, মাসিক চক্রকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং শারীরিক প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, যা পিসিওএস-এর ক্ষেত্রে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।
আয়ুর্বেদিক ডায়েট: স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইলে বিশেষ ভূমিকা পালন করে ডায়েট। আপনি কী খাচ্ছেন, কতটা পরিমাণে খাচ্ছেন এবং কখন খাচ্ছেন—এই সব বিষয়গুলো আপনার স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। আয়ুর্বেদের মতে, খাদ্যতালিকা থেকে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ কমিয়ে দিন। নুন খাওয়া কমান। এমনকী শর্করাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। তার বদলে তাজা ফল, সবজি, গোটা শস্য, বাদাম, বীজ ইত্যাদি খান। এতে দেহে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হবে এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকবে।
শরীরচর্চা: আয়ুর্বেদের মতে, পিসিওএস-এর সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গেলে শরীরচর্চা করা জরুরি। এতে দেহে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে। পাশাপাশি ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয় থাকে না। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট যোগব্যায়াম করুন। এতে আপনার ঋতুচক্র নির্দিষ্ট সময় অন্তর হবে এবং ঋতুস্রাব সংক্রান্ত সমস্যাগুলো কমবে।
মানসিক চাপ কমান: পিসিওসি-এর সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত। মানসিক চাপ আপনার দেহে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। যার জেরে একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই মানসিক চাপকে কমিয়েও আপনি পিসিওএস-এর উপসর্গকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।