SARS-Cov-2-এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন কপালে ভাঁজ ফেলেছে বিশেষজ্ঞদের। ২৪ নভেম্বর এই ভ্যারিয়েন্টের প্রথম খোঁজ মেলে দক্ষিণ আফ্রিকায়। এরপর তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে। রিপোর্ট পাওয়ার পর ২৬ নভেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওমিক্রনকে উদ্বেগের কারণ হিসেবে বর্ণনা করে। তবে এই নতুন স্ট্রেনের হদিশ পাওয়ার পর সর্বত্রই প্রশ্ন উঠছে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে। নতুন এই ভ্যারিয়েন্টকে ঠেকাতে কতটা সক্ষম ভ্যাকসিন, সেই নিয়ে উদ্বিগ্ন অনেকেই। প্রাথমিক কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাকে দুর্বল করে দিচ্ছে ওমিক্রন। যা ভয় ধরাচ্ছে বিশ্ববাসীর মনে। ডেল্টার করাল গ্রাসে পড়েছিল বিশ্বের প্রায় সব দেশই। আর সেই কারণেই পূর্ব আশঙ্কা গ্রাস করেছে মানুষকে। তবে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন, জানিয়েছেন সব বিশেষজ্ঞরাই। তবে করোনা থেকে দূরে থাকতে টিকা সকলকে নিতেই হবে। কারণ টিকা নিলে যে ঝুঁকি কিছুটা কমে তা প্রমাণিত। কিন্তু টিকা নিলেই যে সেই ব্যক্তি কোভিডে সংক্রমিত হবেন না এমন কোনও নিশ্চয়তা কিন্তু নেই। তবুও কিছু ঝুঁকি থেকেই যায়। তবে যাঁরা আগে থেকেই বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাঁদের ক্ষেত্রে কিন্তু সংক্রণমের ঝুঁকি বেশি। রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমলে যে কোনও সংক্রমণই কিন্তু অনেক দ্রুত হয়
কাঁদের সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি
সম্প্রতি মেডিক্যাল ইকনমিক্সের তরফে প্রকাশিত একটি জার্নালে বলা হয়েছে, যাঁদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম ( immunocompromised) তাঁরা কিন্তু ভ্যাকসিনের দুটো ডোজ নেওয়ার পরও আক্রান্ত হতে পারেন। ফাইজারের দুটো ডোজ নিয়েছেন এমন মানুষদের উপরই চালানো হয় এই সমীক্ষা। সেখানেই দেখা যায় যাঁদের কোনও শারীরিক সমস্যা নেই তাঁদের ক্ষেত্রে দিব্যি কাজ করছে এই ভ্যাকসিন। কিন্তু যাঁদের কিছু কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাঁদের মধ্যে .১৮ শতাংশ মানুষের মধ্যে সম্ভাবনা রয়েছে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার।
এই তালিকায় রয়েছেন তাঁরাই, যাঁরা এখন সংক্রামক কোনও ব্যাধির সঙ্গে লড়াই করছেন। কারণ একটি রোগের সঙ্গে লড়াই করতে করতেই শরীরে কমে যায় অন্য রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা। যারা HIV, AIDS, ক্যানসার, কিডনি কিংবা বাতের ব্যথায় ভুগছেন বা যাঁদের শরীরে কোনও অঙ্গ পি্রতিস্থাপন হয়েছে তাঁরা কিন্তু যে কোনও সংক্রমণে আগে ভাগেই সংক্রমিত হন। এমনকী তাঁদের টিকা দেওয়া হলেও সেই ভাবে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা গড়ে ওঠেনি শরীরে। কিন্তু ইমিউনোকম্প্রোমাইজড হলেই যে কোভিডের সংক্রমণ হতে পারে এবং মৃত্যুও হতে পারে সে রকম সম্ভাবনা কিন্তু মোটেই সবক্ষেত্রে নেই। অনেকেই শরীরে অন্যান্য অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন এবং চিকিৎসার পর সুস্থও হয়েছেন। তবে এ বিষয়ে আরও অনেক বেশি গবেষণার প্রয়োজন।
যাঁদের শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কম তাঁদের জন্য প্রয়োজন কোভিডের তৃতীয় টিকার। যেহেতু এই দুই টিকা তাঁদের সম্পূর্ণ সুরক্ষা দিতে পারছে না। আর তাই বুস্টার ডোজের হয়ে সওয়াল করছেন অনেক বিশেষজ্ঞই। এরপরও কিন্তু হাত ধোওয়া, সব সময় মাস্ক পরা, ভিড় এড়িয়ে চলা এবং প্রয়োজনীয় বাকি বিধি নিষেধ মেনে চলতে হবে।
আরও পড়ুন: WHO On Omicron: ডেল্টার থেকেও দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে ওমিক্রন, শারীরিক দুর্বলতাও অনেক বেশি