আপনি কি অত্যন্ত স্বাস্থ্য সচেতন? একই সঙ্গে ফিটনেস ফ্রিক? তাহলে নিশ্চিত প্রতিদিনই জমিয়ে ওয়ার্ক আউট করেন। যোগাসন অভ্যাস থেকে শুরু করে জিম সেশন, বাদ যায় না কিছুই। অথচ এই সবকিছুর পর নিজের শরীরের সঠিক যত্নটা নেওয়া হয়ে ওঠে না? মানে পর্যাপ্ত বিশ্রাম, ঠিকমতো ঘুম-খাওয়াদাওয়া কিছুই করেন না। তাহলে কিন্তু আদতে কোনও লাভ নেই। এমন অনিয়ম চললে শরীরচর্চার আসল ফলই পাবেন না আপনি। তাই ফিটনেসের প্রতি আগ্রহী হলে ওয়ার্ক আউটের সঙ্গে সঙ্গে পর্যাপ্ত বিশ্রামও প্রয়োজন। নাহলে আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। আর এই ক্লান্তির জেরেই অনিয়মিত হয়ে যাবে শরীরচর্চাও। তাই পোস্ট ওয়ার্ক আউট অর্থাৎ শরীরচর্চার পর কীভাবে নিজের যত্ন নেবেন, দেখে নিন।
শরীর আর্দ্র রাখুন- অর্থাৎ সঠিক পরিমাণে জল খাওয়া প্রয়োজন। তাহলেই আপনার মাসল বা পেশী সঠিক ভাবে গঠিত হবে। ডিহাইড্রেশন বা শরীরে জলের ঘাটতি যেন একেবারেই না হয় সেদিকে নজর। শরীরচর্চার ফলে ঘামের কারণে এমনিতেই শরীর থেকে বেশ কিছুটা জল বেরিয়ে যায়। তাই তখন আপনার শরীরে জলের প্রয়োজন হয়। শরীরচর্চা শুরু ২ ঘণ্টা আগে মোট ৫০০ থেকে ৭০০ মিলিলিটার জল খাওয়া দরকার। ওয়ার্ক আউট চলাকালীন প্রতি ২০ মিনিটে ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার পর্যন্ত জল খেতে পারেন। আর শরীরচর্চার পর ৫০০ থেকে ৭০০ মিলিলিটার জল খাওয়া প্রয়োজন। শুধু জল ছাড়াও ডাবের জল বা নুন-লেবুর শরবত খেতে পারেন। চিনি মেশানো পানীয় এড়িয়ে চলাই ভাল।
পোস্ট ওয়ার্ক আউট স্ট্রেচ- শরীরচর্চা করার সময় অনেক ক্ষেত্রে পা, কাঁধ, পিঠ, তলপেট কিংবা বুকের মাসল বা পেশীতে টান ধরে যায়। তাই শরীরচর্চা শেষ করে অন্তত ১০ মিনিট বিভিন্ন ধরনের স্ট্রেচিং করুন। এর ফলে হাত-পায়ের জড়তা এবং ব্যথা দুটোই কমবে। যদি নিয়মিত জিম করার অভ্যাস থাকে, তাহলে ভারী ওয়ার্ক আউটের পর হাল্কা কিছু যোগাসন করুন। এর ফলে শরীরের কোনও অংশে আঘাত বা যন্ত্রণার সম্ভাবনা থাকবে না।
সঠিক পুষ্টি- নিয়মিত যাঁরা শরীরচর্চা করেন, তা সে যোগাসন অভ্যাস হোক কিংবা জিমে গিয়ে ওয়ার্ক আউট করা, স্বাস্থ্য সচেতন এবং ফিটনেস ফ্রিক হলে একটা কথা মাথায় রাখতেই হবে যে সুস্বাস্থ্যের জন্য সঠিক পরিমাণ পুষ্টি এবং শরীরে কোনও কিছুর ঘাটতি না হওয়া খুবই প্রয়োজন। তাই কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন সবই খাবেন সম পরিমাণে। বিভিন্ন ধরনের ফল, শুকনো ফল, আমিষ প্রোটিন, দুগ্ধজাত উপকরণ খাওয়া সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন। এর পাশাপাশি শাকসবজি খাওয়ায় অনীহা আনলেও চলবে না। অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার, ভাজাভুজি এবং মশলাদার খাবার কম খাওয়াই ভাল।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম- ভারী ওয়ার্ক আউট সেশনের পর সঠিক মাত্রায় বিশ্রাম কিন্তু অবশ্যই প্রয়োজন। নাহলে সারাক্ষণ আপনার মধ্যে একটা ঝিমানি ভাব লক্ষ্য করা যাবে। কাজে এনার্জি পাবেন না। সবসময় ঘুমের ভাব থাকতে পারে। তাই শরীরকে সতেজ রাখতে জিমে গিয়ে ওয়ার্ক আউটের পাশাপাশি হাল্কা একসারসাইজ যেমন- সাঁতার, হাঁটা, হাল্কা যোগাসন, স্ট্রেচিং, জগিং এইসব করতে পারেন।
আরও পড়ুন- Yoga Mudra: অনিদ্রার সমস্যা থেকে রেহাই পেতে নিয়মিত অভ্যাস করুন ‘জ্ঞান মুদ্রা’
সঠিক পরিমাণ ঘুম- চিকিৎসক থেকে শুরু করে ফিটনেস এক্সপার্ট সকলেই বলেন পর্যাপ্ত ঘুম সুস্বাস্থ্যের অন্যতম চাবিকাঠি। আর আপনি যদি প্রতিদিন শরীরচর্চা করেন, তাহলে তো পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতেই হবে। প্রতিদিন সাত থেকে ন’ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এর ফলে আপনি যতই শরীরচর্চা করুন না কেন ক্লান্তি আসবে না।
আরও পড়ুন- World Chocolate Day 2021: কোভিড ১৯-স্ট্রেস কমানোর মোক্ষম দাওয়াই ডার্ক চকোলেট!