চ্যালেঞ্জ যা ই হোক না কেন, পুষ্টি ঠিক থাকলে শরীর যে কোনও রকমের চ্যলেঞ্জ নেওয়ার জন্যই তৈরি থাকে। গর্ভাবস্থায় এই কথাটা বিশেষভাবে মাথায় রাখা প্রয়োজন। কারণ, আপনার ভেতরে একটা প্রাণ সম্পূর্ণরূপে আপনার উপর নির্ভরশীল। খুব পরিকল্পনা করে গর্ভধারণের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ছে। এটা মায়দের যে কোনও পুষ্টির ঘাটতি দূর করার সুযোগ দেয়। গর্ভাবস্থার তিন থেকে ছয় মাস আগে যাকে ‘প্রি-কনসেপশনাল’ পিরিয়ড বলা হয়, সেই সময় খুব বেশি সচেতন থাকতে হবে।
গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড গ্রহণ:
এটি একটি ভিটামিন যা শিশুর নিউরাল টিউবের ত্রুটি থাকলে তা প্রতিরোধে সাহায্য করে। যেহেতু নিউরাল টিউবটি বিকাশের প্রাথমিক অঙ্গ, তাই গর্ভাবস্থার পরিকল্পনা করার সময় ফলিক অ্যাসিড শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই ভিটামিন গাঢ় সবুজ শাক সবজিতে ফোলেট রূপে উপস্থিত থাকে। সাধারণত রুটি এবং সিরিয়ালেও পাওয়া যায়। কিন্তু খাদ্যের উৎসগুলি পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড সরবরাহ করে না। তাই প্রতিদিন ৪০০ এমসিজির একটি ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট গ্রহণ করা উচিত।
গর্ভাবস্থায় ভিটামিন ডি:
ভিটামিন ডি -এর গুরুত্ব আরও বেড়েছে প্যান্ডেমিকের কারণে। যেহেতু বাইরে বেশি বেরনো বারণ, সেক্ষেত্রে ত্বকে সূর্যের আলো কম আসে। যার ফলে ভিটামিন ডি-এর সংশ্লেষ কম পরিমাণে হয়। সেজন্য লাল মাংস, ডিম এবং কিছু তৈলাক্ত মাছের মধ্যে পাওয়া ভিটামিন ডি শরীরে নিতে হবে। যদিও এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে না।
গর্ভাবস্থায় আয়রনের ঘাটতি রোধ:
এই খনিজের ঘাটতি খুবই সাধারণ। বিভিন্ন আয়রন সমৃদ্ধ খাবারপর্যাপ্ত পরিমাণে খেলে এই ঘাটতি দূর হতে পারে। সবুজ শাক, ডালিম, খেজুর, শুকনো ফল, বাদাম, লাল মাংসে ভাল পরিমাণে আয়রন থাকে। আয়রনের সাপ্লিমেন্টও পাওয়া যায় যা গর্ভাবস্থায় এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় খাওয়া যেতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ভিটামিন সি:
এই ভিটামিন কোষগুলিকে রক্ষা করে। পর্যাপ্ত আয়রন শোষণ করার পাশাপাশি শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ রোধ করে। এটি বিভিন্ন ধরণের ফল এবং শাকসবজিতে পাওয়া যায়। সাইট্রিক ফল, বেরি, ব্রকলি এবং আলু ভিটামিন সি এর সমৃদ্ধ উৎস।
গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়াম:
এই খনিজ হাড়, দাঁত এবং পেশীর বিকাশের জন্য অপরিহার্য। সাধারণত দুধ জাতীয় খাবারে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে। এছাড়াও রকেট পাতা, তোফু আর কিছু সবুজ শাকেও থাকে। ভারতে, যেখানে ক্যালসিয়ামের অভাব অত্যন্ত সাধারণ ঘটনা, সেখানে গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন ৫০০ মিলিগ্রামের ক্যালসিয়ামের পরিপূরক সুপারিশ করা হয়।
এগুলির পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় কী খাবেন না সেদিকেও মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন যাতে খাবারে থাকা দূষণ এবং রোগ এড়ানো যায়। গর্ভাবস্থায় এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় অ্যালকোহল, ধূমপান সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলতে হবে।
আরও পড়ুন: তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার মাঝেই দেখা দিল আবার নিপা ভাইরাসের প্রকোপ!