
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পুরুষদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসারের পরেই প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। যে কোনও ক্যানসার প্রাথমিক স্তরে ধরা পড়লে, সহজেই সেরে ওঠা যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্য হল, প্রস্টেট ক্যানসারের লক্ষণগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে অনেকেই চিনতে পারেন না। আর যখন এই ক্যানসার ধরা পড়ে, তখন অনেকটা দেরি হয়ে যায়। চিকিৎসা শুরু হলেও বেশিদিন রোগীকে সুস্থ রাখা যায় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিণাম হয় মৃত্যু।
চিকিৎসকদের মতে, পুরুষদের মধ্যে ৫০-এর পর প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। প্রস্টেট গ্রন্থির সাইজ আখরোটের মতো। এটি পুরুষাঙ্গ ও ব্লাডারের মাঝে অবস্থিত। পুরুষ প্রজনন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে, প্রস্টেট গ্রন্থির কাজ হল তরল উৎপন্ন করা যা সিমেন তৈরি করে, যখন এটি শুক্রাণুর সঙ্গে গিয়ে মেশে। এই প্রস্টেট গ্রন্থিতে যখন স্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধি হতে থাকে, এটাই ভবিষ্যতে ক্যানসারে গিয়ে দাঁড়ায়। ‘প্রস্টেট স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন টেস্ট’ বা ‘ডিজিটাল রেক্টাল টেস্ট’-এর মাধ্যমে জানা যায় প্রস্টেট গ্রন্থিতে কোনও ক্যানসারের কোষ বাসা বাঁধছে কি না। যদিও নিশ্চিত করা যায় একমাত্র বায়োপসির দ্বারা। প্রায় ৯০ শতাংশর ক্ষেত্রে প্রস্টেট ক্যানসারে রোগীর প্রাণ বাঁচানো যায়। কিন্তু রোগের প্রাথমিক লক্ষণ চিনে না রাখলে মৃত্যু অনিবার্য।
১) প্রস্রাবের পেলেও ঠিকমতো মূত্রত্যাগ না করতে পারে এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণ। এছাড়াও প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা, বার বার প্রস্রাবের বেগ আসার মতো লক্ষণগুলো প্রস্টেট ক্যানসারের। রাতের দিকে ঘন ঘন প্রস্রাব পেলে বা মূত্রত্যাগের প্রবণতায় কোনও পরিবর্তন দেখা দিলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
২) মূত্রত্যাগের সময় ব্যথা অনুভব করলে কিংবা জ্বালাভাব দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। এটি প্রস্টেট ক্যানসারের লক্ষণ।
৩) মূত্রের সঙ্গে রক্তপাত হলে সাবধান। চিকিৎসার পরিভাষায় এই অবস্থাকে ‘হিমাচুরিয়া’ বলে। কিন্তু প্রস্রাবের রং যদি লাল বা গাঢ় বাদামি হয়, তাহলে সাবধান। এটি প্রস্টেট ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।
৪) ক্যানসারের কোষ বাড়তে শুরু করলে প্রস্টেট গ্রন্থির আয়তনও বৃদ্ধি পায়। এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি দেখে বসে থাকবেন না। অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
৫) মূত্রত্যাগের সময় অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে অবশ্যই সচেতন হবে। পাশাপাশি প্রস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হলে কোমরের নিচে, পিঠের নিচে কিংবা নিতম্ব ও কুচকিতে ব্যথা হতে পারে। যদিও এগুলো অন্য কোনও রোগের লক্ষণও হতে পারে। কিন্তু অবহেলা করবেন না।