Bangla NewsHealth Rates of childhood obesity have increased study finds and Which You Need to Know
Childhood obesity: দ্রুত মোটা হয়ে যাচ্ছে আপনার শিশু? বিশেষজ্ঞের যে পরামর্শ আজই জানা দরকার
Overweight and Obesity: ফ্যাটি লিভার, ডায়াবেটিস কিংবা লিভারের সমস্যা আজকাল খুব কম বয়স থেকেই বাচ্চাদের মধ্যে জাঁকিয়ে বসছে। এ ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে সচেতন হতে হবে মা-বাবাকেই
যেমন হবে আপনার খুদের ডায়েট
Follow Us
সিম্বার বয়স যখন ১ বছরও পূর্ণ হয়নি, তখন থেকেই বেবি ফুডের পরিবর্তে বাইরের কেক-পেস্ট্রির স্বাদ মনে ধরতে শুরু করে তার। বাড়িতে যে কোনও অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যেই কেক আসা ছিল দস্তুর। আঙুলের ডগায় সামান্য ক্রিম নিয়ে তার মুখের সামনে ধরতেন বাড়ির বড়রা। দিব্যি চেটেপুটে খেয়ে নিত সিম্বা। বয়স যখন ২, তখন থেকেই বাইরের খাবারের স্বাদ বেশ বুঝে গিয়েছিল। চকোলেট আর চিপসের নেশা তখন থেকেই এমনভাবে জাঁকিয়ে বসেছিল যে, পাতে চিপস না থাকলে খেতেই চাইত না সে। বাড়ির বড়রাও বেশ খাদ্যরসিক। আর তাই-ই মটন বিরিয়ানির সঙ্গে পরিচিত হতে ওর বিশেষ সময় লাগল না। ফলে ৫ বছর যেতে না যেতেই শরীরে নানা সমস্যা। পছন্দের খাবার না পেলেই রাগ, বিরক্তি। অকারণে ঘেমে যেত সে। সেই সঙ্গে ওজন প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই বেশি। চিকিৎসকের কাছে যেতে প্রথমেই কড়া ধমক খেলেন মা-বাবা। কারণ ছেলে তখন ‘ওবেসিটি’ অর্থাৎ স্থূলতা র শিকার।
১০ বছরের ডোডোর বেশ কিছুদিন ধরে পায়ে ব্যথা। সকালের দিকে কিছুই খেতে ভাল লাগে না তার। এ দিকে, স্কুলের টিফিনে কেক, পাস্তা, পিৎজ়া ছাড়া কিছুই পছন্দ নয়। একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা যাওয়ার পর যখন চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হল, তখন প্রথমেই মা-বাবাকে ডাক্তারবাবু জানালেন ছেলে ‘ওবেসিটি’র শিকার। সঙ্গে বেশ কিছু রক্তপরীক্ষার পর জানা গেল তার ফ্যাটি লিভারের সমস্যাও রয়েছে। ওষুধের পাশাপাশি কড়া ডায়েট মেনে চলার পরামর্শ দিলেন বিশেষজ্ঞ।
শুধু সিম্বা কিংবা ডোডো নয়, এমন সমস্যা এখন শহরের অধিকাংশ শিশুদেরই। বাচ্চারা সবজি খেতেই চায় না, ব্যস্ত মা-বাবার হাতেও সময় কম। ফলে বাচ্চার পছন্দের মাংস, ডিম আর আলুতেই ভরসা রাখছেন তাঁরা। খেতে না চাইলেই ফলের পরিবর্তে চাউমিন, মাটন, আইসক্রিম, বার্গার যা চাইছে তা-ই এনে দিচ্ছেন। সব মিলিয়েই বাড়ছে ওবেসিটির সমস্যা।
বিষয়টি নিয়ে TV9 বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয় ডায়েটিশিয়ান অরিজিৎ দে-র সঙ্গে। অরিজিতের কথায়, ‘‘বাচ্চাদের ওবেসিটির সমস্যার জন্য দায়ী আমাদের পরিবেশ। প্রতিনিয়ত আমরা বাচ্চাদের প্রতিযোগিতার মুখে ঠেলে দিচ্ছি। খেলাধুলোর অভ্যাস নেই। নেই কোনও রকম অ্যাকটিভিটি। বাচ্চারা সারাক্ষণ বুঁদ মোবাইল, কম্পিউটারের স্ক্রিনে। সেই সঙ্গেই বাড়ছে ফাস্ট ফুডের প্রতি ঝোঁকও।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘কয়েক মাস আগেই আমরা ৬জন ডায়েটিশিয়ান বাজারে একটি সমীক্ষা চালাই। সেখানে অধিকাংশ মা-বাবা জানিয়েছেন, তাঁরা সবজি কেনেন নিজেদের জন্য। বাচ্চারা কোনও রকম সবজি খেতে চায় না। রোজই তাদের মাংস চাই। এবার সেই মাংসের যে হালকা-পাতলা ঝোল (যতটা সম্ভব কম মশলাযুক্ত) হচ্ছে তা নয়। রীতিমত মশলা দিয়ে কষিয়ে রান্না না হলে বাচ্চাদের মুখে তা ওঠেই না।’’
কোনও রোগের আজকাল আর বয়স নেই। ফ্যাটি লিভার, ডায়াবেটিস কিংবা লিভারের সমস্যা আজকাল খুব কম বয়স থেকেই বাচ্চাদের মধ্যে জাঁকিয়ে বসছে। এ ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে সচেতন হতে হবে মা-বাবাকেই। কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট যেমন লাল আটার রুটি, ওটস, ডালিয়া এসব বেশি করে খাওয়াতে হবে। রাতে কোনওভাবেই কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার (ভাত, রুটি, ফাস্ট ফুড, চাউমিন, পিৎজ়া, বার্গার) দেওয়া চলবে না। অরিজিতের পরামর্শ, ‘‘স্বাদ বদলের জন্য মাঝেমধ্যে ঘুঘনি বানিয়ে দিতে পারেন। মাংস কোনওমতেই রোজ নয়। সবজি দিয়ে পাতলা ঝোল বা স্ট্যু বানিয়ে দিন। দিনের মধ্যে যে কোনও একটা ফল খেতেই হবে। রোজ একটা করে কলা অবশ্যই দিতে পারেন বাচ্চাকে। এতে কিন্তু ওজন বাড়ে না। বাচ্চার বয়স ৭ বছর হলেই ওটস খাওয়ানো অভ্যাস করুন। রিফাইন্ড সুগার একেবারেই দেবেন না। তবে নিয়ম মেনে খাবার খেলেই যে বাচ্চারা ওবেসিটি, ডায়াবেটিসের হাত থেকে মুক্তি পাবে, এমন নয়। খেলাধুলোও করতে হবে। তবে ৫ বছরের নীচে যে সব বাচ্চার সুগার ধরা পড়ছে, তাদের অধিকাংশই টাইপ ১ ডায়াবেটিস (যে সব সুগারের রোগীদের ক্ষেত্রে শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয় না)-এর শিকার। টাইপ ১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।’’