ঘ্যানঘ্যানে বৃষ্টির আবহাওয়া মন-মেজাজ বিগড়ে দিলেও শীতের হাওয়া কিন্তু বেশ ভালই টের পাওয়া যাচ্ছে। ঠোঁট শুকনো হতে শুরু করেছে, হাত-পায়ে ধরছে টান, ঘুম থেকে ওঠায় আলস্য—সব মিলিয়ে শীত কিন্তু দোরগোড়ায়। শীত মানেই বাজার জুড়ে হরেক সবজির মেলা।
রঙ-বেরঙের ফল উঁকি দিচ্ছে ঝুড়ি থেকে। আর শীতের রোদে পিঠ রেখে কমলালেবু খাওয়ার মজাটাই কিন্তু আলাদা। যদিও এখন সারাবছরই কমলালেবু পাওয়া যায় কিন্তু শীতের কমলালেবুর স্বাদটাই অন্যরকম। স্যালাড থেকে জুস—কমলালেবুর ব্যবহার সর্বত্র। এছাড়াও কমলালেবুর অনেকক’টি স্বাস্থ্যকর উপকারিতাও রয়েছে।
কমলালেবুতে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ায়। শরীরকে আর্দ্র রাখতেও কমলালেবুর যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। ১০০ গ্রাম কমলালেবুতে ক্যালোরি আছে ৪৭ গ্রাম, জল ৮৭ গ্রাম, প্রোটিন ০.৯ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১১.৮ গ্রাম, সুগার ৯.৪ গ্রাম ও ফাইবার রয়েছে ২.৪ গ্রাম। পুষ্টিতে ভরপুর এহেন কমলালেবু প্রতিদিন ঠিক কতটা পরিমাণ আপনার শরীরের জন্য ভাল, জানেন?
প্রতিদিন যদি ৪ থেকে ৫টা করে কমলালেবু খান, তাহলে কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ফাইবার যায় আপনার শরীরে। এর ফলে হজমের সমস্যা, পেটখারাপ, ডায়ারিয়া, অ্যাসিডের মতো সমস্যা হতেই পারে। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে অতিরিক্ত পরিমাণ ভিটামিন সি হার্টের সমস্যা থেকে শুরু করে ঘুমের ব্যাঘাত—যে কোনও কিছুর কারণ হতে পারে।
কমলালেবুর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি থাকার জন্য তা যে স্বাদে টক, একথা সকলেই জানেন। অতিরিক্ত টক খেলেই বাড়ে অ্যাসিডের সম্ভাবনা। এছাড়াও শীতে বাড়ে অ্যাসিড রিফ্লাক্সের (Acid reflux) মতো সমস্যা। এছাড়াও বুক জ্বালা, বমি এসবের মতো সমস্যা তো থাকেই। যাঁদের হজমের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা কিন্তু কমলালেবু খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
এছাড়াও যাঁদের শরীরে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি, তাঁরাও কিন্তু কমলালেবু খাওয়ার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন। কমলালেবুর মধ্যে পটাশিয়াম যে খুব বেশি থাকে তা নয়, কিন্তু যাঁদের আগে থেকেই এই সমস্যা রয়েছে তাঁদের কমলালেবু এড়িয়ে চলাই ভাল।
কমলালেবু থেকে হতে পারে হাইপারকালেমিয়া (Hyperkalemia)। যেখান থেকে স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি হতে পারে। তাই-ই দিনে ১-২টোর বেশি কমলালেবু না-খাওয়াই ভাল। এছাড়াও কমলালেবু আমাদের ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে। পেট পরিষ্কার রাখে, যা কিন্তু ওজন কমাতে (Weight Loss) সাহায্য করে।
কমলালেবু গাজরের ডিটক্স ড্রিংক
গাজর আর কমলালেবুর আলাদা করে জুস বানিয়ে নিন। এবার এই দু’টো জুস ব্লেন্ডারে দিয়ে আবার ভাল করে মিশিয়ে নিন। এবার ওর মধ্যে এক চামচ লেবুর রস আর এক চামচ আদার রস ভাল করে মিশিয়ে খেয়ে নিন।
ভার্জিন পাঞ্চ
যে কোনও হাউস পার্টিতে ককটেল হিসেবে খুবই জনপ্রিয় এই ড্রিংক। অর্ধেক পাতিলেবুর রস, ৫০০ এমএল কমলালেবুর জুস, ৫০০ এমএল ম্যাঙ্গো জুস, ৫০০ এমএল অ্যাপেল জুস, ৪০০ এমএল লেমোনেড আর আইস কিউব দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। এবার উপর থেকে পুদিনা পাতা ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।