
প্রত্যেক বছর যে সব রোগের কারণে সবেচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয় তার মধ্যে অন্যতম হল হার্ট অ্যাটাক। যত দিন যাচ্ছে অনিয়মিত জীবন যাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস সব কিছুর কারণে বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্তের সংখ্যাও। এমনকি অল্প বয়সিদের মধ্যেও বাড়ছে এই প্রবণতা। চিকিৎসকরা বলছেন ৪০ বছরের নীচে কোনও ব্যাক্তির হার্ট অ্যাটাক হলে তার অবস্থা আরও ক্রিটিকাল হয়। হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আগে সাবধান হবেন কী ভাবে?
বিশেষজ্ঞরা কিন্তু জানাচ্ছেন, হুট করে মনে হলেও হার্ট অ্যাটাক হুট করে হয়না। শরীর আগে থেকেই জানান দেয়, হার্টের অবস্থা ভাল না। আমাদের শুধু সেই সব লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। প্রয়োজনে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কোন কোন লক্ষণ দেখলেই সাবধান হবেন?
অল্পেই হাঁপিয়ে ওঠা, অস্বাভাবিক ক্লান্তি
হার্টের রক্তনালি যখন একটু একটু করে সরু হতে শুরু করে, তখন থেকেই তার কাজ বাধাগ্রস্ত হতে থাকে। ফলে শরীর অল্প শ্রমেই কাবু হয়ে পড়ে। এমন হলে সামান্য পরিশ্রমেই আপনি হাঁপিয়ে উঠবেন। খুব ভারী কোনও কাজ না করেও আপনি অত্যধিক ক্লান্তি অনুভব করবেন। এমন অবস্থায় দু-এক তলা সিঁড়ি ভেঙে উঠতেই আপনার বেশ কষ্ট হবে।
মাথা হালকা হয়ে যাওয়া, ঠান্ডা ঘাম
হার্ট অ্যাটাকের আগে প্রায়ই খুব দুর্বল বা অসুস্থ অনুভব করতে পারেন। মনে হতে পারে, মাথার ভেতরটা বুঝি হালকা হয়ে যাচ্ছে। ঘামও হতে পারে। খুব স্বাভাবিকভাবেই আপনি এমন লক্ষণের অন্য কোনো কারণও খুঁজে পাবেন না।
বুকে চাপ
হার্ট অ্যাটাকের প্রধান লক্ষণ হলো বুকের মাঝ বরাবর প্রচণ্ড ব্যথা বা চাপ অনুভব করা। ভয়াবহ ওজনের কোনো জিনিস বুকের ওপর চেপে আছে, এমনটা মনে হতে পারে। বুকের মাঝখানে চাপ অনুভূত হয়। এটিকে ‘গ্যাসের ব্যথা’ ভেবে ভুল করলেই সর্বনাশ! ধরুন, ‘গ্যাসের চাপ’ ভেবে অ্যান্টাসিড-জাতীয় ওষুধ সেবন করে খানিকক্ষণ শুয়ে থাকলেন কেউ। বিশ্রামের ফলে ব্যথা সেরে গেল। কিন্তু তাঁর ধারণা হল, ওষুধের কারণেই ব্যথা কমেছে। অথচ ওদিকে রক্তনালি দিনে দিনে সরু হতে হতে একসময় হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
অস্বাভাবিক হৃৎস্পন্দন
স্বাভাবিক অবস্থায় আমাদের অগোচরেই ছন্দে কাজ করে চলে আমাদের হৃৎপিণ্ড। হার্টের এই চমৎকার স্পন্দন কিন্তু আমরা সচরাচর অনুভব করি না। তবে হৃৎপিণ্ডের রক্তনালি সরু হতে থাকলে তার এই ছন্দের পতন ঘটতে পারে। পুরো দেহে রক্তসঞ্চালনের কাজ করার জন্য অতিরিক্ত দ্রুততার সঙ্গে স্পন্দিত হতে পারে হৃৎপিণ্ড। এই স্পন্দন আপনি অনুভব করতে পারেন। বুক ধড়ফড় করতে পারে। বিশেষ করে সামান্য পরিশ্রমেই হৃৎস্পন্দন অত্যধিক দ্রুত হয়ে পড়ায় সেই সময় বুক ধড়ফড় করার প্রবল অনুভূতি হতে পারে কিংবা নিয়মিত ছন্দের স্পন্দন বদলেও যেতে পারে।