
বৃষ্টির কোনও দেখা নেই। স্নানের পরই ঘেমে নেয়ে একসা হচ্ছেন দক্ষিণবঙ্গবাসী। ভ্য়াপসা গরম আর প্রচণ্ড তাপে নাজেহাল অবস্থা। রাস্তায় বের হতে না হতেই নাভিশ্বাস উঠছে সকলের। রাতে এসি না চালালে ঘুম আসছে না প্রবীণ থেকে একরত্তি শিশুর। ফলে সারারাত এসি চালিয়ে, দেদার পাখা চালিয়ে, ঘর ঠাণ্ডা করে গভীর নিদ্রায় ডুব দিচ্ছেন প্রায় অধিকাংশ। এসি চালানোর অনেক সুবিধা রয়েছে, তেমনি আছে অসুবিধাও। সারারাত এসিতে ঘুমনোর নেশায় অভ্য়স্ত হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ। জীবনে একটু স্বস্তি আনতে এসি র বাজারও বেশ গরম। কিন্তু এই স্বস্তিই অনেকসময় অস্বস্তিতে পড়তে হয়। দিনের বেলায় ৪৫ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলেও রাতের বাতাসও বেশ গরম থাকছে। রাতের ঘুম নিশ্চিত করতে এয়ার কন্ডিশনারই ভরসা। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, একটানা এসির ঠাণ্ডা হাওয়ায় ঘুম দিলে স্বাস্থ্যের উপর বড়সর প্রভাব পড়ে। সেগুলি এড়িয়ে যেতে পারেন না কেউই।
১. শ্বাসকষ্ট
এসি যে ঘরে একটানা চলে, সেই ঘরের আর্দ্রতার মাত্রা অনেকটাই কমে যায়। যার ফলে সেই ঘরের বাতাস শুষ্ক হয়ে যায়। এই শুকনো বাতাস শ্বাসযন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলে অনেকটাই। বিশেষ করে যাদের আগে থেকেই অ্যাজমা বা অ্যালার্জির মতো সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এই সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এসিতে ঘুমালে নাক-গলা ফুলে যাওয়া, কাশি ও শ্বাস নেওয়ার সমস্যা বৃদ্ধি হতে পারে।
২. ত্বকের সমস্যা
এসির ঠাণ্ডা ও শুষ্ক বাতাসও ত্বকের আর্দ্রতা কমে গিয়ে শুষ্ক হয়ে যায়। তাতে ত্বকের নানারকম সমস্যা তৈরি হতে পারে।যেমন, চুলকানি, ফোলাভাব ও ডিহাইড্রেশনের সমস্যা বৃদ্ধি হয়। দীর্ঘক্ষণ ধরে এসি-তে ঘুমালে ত্বকের স্বাভাবিক জেল্লা হারিয়ে ফেলতে পারে। এছাড়া আরও নানা সমস্যা দেখা যেতে পারে।
৩. পেশি ও জয়েন্টের ব্যথা
এসির তীব্র ঠাণ্ডার কারণে পেশি ও জয়েন্টগুলি স্টিফ বা শক্ত হয়ে যেতে পারে। আর্থ্রাইটিস বা অন্যান্য জয়েন্ট বা হাড়ের ব্যথায় ভুগলে তারা বেশি সমস্যায় পড়তে পারেন। এসির ঠান্ডা বাতাসের সরাসরি প্রভাব পড়ে পেশির উপর। চরম ব্যথার শিকার হন বহু মানুষ।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
একটানা এসি-তে থাকার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও প্রভাবিত হয়। এসির ঠাণ্ডা আবহাওয়া থাকার ফলে শরীর বাহ্যিক তাপমাত্রার পরিবর্তনের প্রতি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। তাতে বার বার সর্দি, কাশির মতো সমস্যাও দেখা যায়। এছাড়া এসির ফিল্টারে জমে থাকা ময়লা, ধুলো ও ব্যাকটেরিয়া থেকে সংক্রমণেরও সম্ভাবনা দেখা যায়।
৬. চোখের সমস্যা
এসির ঠাণ্ডা বাতাস চোখের আর্দ্রতাও কমিয়ে দিতে পারে। যার কারণে চোখ শুষ্ক হয়ে জ্বালা ধরা ও চুলকানির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে যারা কন্টাক্ট লেন্স পরেন, তাদের জন্য এই সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে।