
দীর্ঘদিন ধরে গৃহবন্দি আর লকডাউনে বেশির ভাগ মানুষেরই ওজন বেড়েছে। কারণ একটাই, বাড়িতে বসে সকলেই ভালমন্দ রান্না অনেক বেশি করেছেন। বেশিরভাগই বাড়িকে বানিয়ে ফেলেছেন ছোটখাট রেস্তোরাঁ। সেখানে যেমন পাস্তার স্যালাড তৈরি হয়েছে তেমনই তৈরি হয়েছে ফুচকা, চুরমুরও। সেই সঙ্গে ওয়ার্কআউট বন্ধ। বরং মানসিক চাপ বেড়েছে অনেকখানি। আর এই মানসিক চাপ, স্ট্রেস, কোনও রকম শরীরচর্চা নেই- এই সবকিছুর যৌথ প্রভাব পড়েছে শরীরের উপর। ওজন বাড়ার সঙ্গে প্রতিবেশী হিসেবে এসেছে সুগার, প্রেসার, কোলেস্টেরল এবং ওবেসিটির সমস্যা। অনেকের আবার হরমোনজনিত সমস্যার কারণেও ওজন বেড়েছে অনেকখানি। আর এখন এই অতিরিক্ত ওজন ঝেড়ে ফেলতে বেশির ভাগ মানুষই ঝুঁকেছেন ডায়েটের দিকে। কেউ আবার শুরু করেছেন শরীরচর্চাও।
আজকাল ইন্টারনেটেই অনেক রকম ডায়েট চার্ট পাওয়া যায়। পরামর্শ দেওয়ার দক্ষতায় সকলেই ডায়েটিশিয়ান। ফলে যে যার নিজের মত ডায়েট চার্ট বানাচ্ছেন। যে বন্ধু ডায়েট করে তাড়াতাড়ি রোগা হয়েছেন তাঁরও ডায়েট চার্ট মেনে চলতে দেখা গিয়েছে অনেককে। ডায়েট মানে অনেকের কাছেই না খেয়ে থাকা। খিদে পেলেও তা চেপে রাখা। দই,শসা আর ওটসে পেটভরানো। যা আদতে কোনও কাজই করে না। বরং তখন খিদে পেলে অনেক বেশি উলটো-পালটা খাবার খাওয়া হয়। সাধারণ কিছু নিয়ম মানলেই কিন্তু সহজে ওজন কমানো যায়, সেই সঙ্গে শরীরও থাকে সুস্থ। আমরা নই, বলছে বিজ্ঞান।
রিফাইন্ড কার্বস নয়- শরীরের জন্য কিন্তু কার্বোহাইড্রেটও প্রয়োজন। তবে এড়িয়ে চলুন রিফাইন্ড কার্বস। বরং বেশি করে দানাশস্য খান। এতে পেট বেশিক্ষণ ভর্তি থাকবে, সেই সঙ্গে খিদেও কম পাবে। লো-কার্ব ডায়েট মেনে চললে ফ্যাট কমে তাড়াতাড়ি। কারণ শরীরের সঞ্চিত ফ্যাট থেকেই শক্তি পায় শরীর। সেই সঙ্গে হজম ভাল হয়। হজম ভাল হলে থেকে থেকে খিদে পাবে না।
প্রোটিন বেশি করে খান- প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় বেশি করে রাখুন প্রোটিন। শাক, সবজি বেশি খান। ফল খান। প্রোটিন খেতে হবে বলেই যে প্রতিদিন মাংস আর ডিম খাবেন এমনটা কিন্তু নয়। ব্রকোলি, ফুলকপি, পালং শাক, টমেটো, অঙ্কুরিত মুগ-ছোলা, বাঁধাকপি, লেটুস, শসা, ডাল এসব রোজ খান। অলিভ অয়েল চাইলে খেতে পরােন। এছাড়াও অল্প হলেও ঘি, মাখন খান। কারণ তা কিন্তু শরীরের কাজেই লাগে। প্রোটিন পেশির শক্তি বাড়ায়, হার্ট ভাল রাখে সেই সঙ্গে ওজন কমাতে্ও সাহায্য করে। প্রত্যেকের যা ওজন সেই অনুযায়ী প্রতিদিন ১.৫ গ্রাম করে প্রোটিন খেতেই হবে। আর যে কারণে ৫০-৬০ গ্রাম প্রোটিন প্রতিদিনই রাখুন ডায়েটে।
শরীরচর্চা করুন- নিয়মিত শরীরচর্চা জরুরি। আর তা যা খুশিই হতে পারে। মর্নিং ওয়াক, সাঁতার সবই চলতে পারে। এছাড়াও যদি জিমে যাওয়ার অভ্যাস থাকে তাও করতে পারেন। অনেকেই আছেন যাঁরা গানের তালে ডান্স পছন্দ করেন। আর এই ডান্স কিন্তু খুব ভালো শরীরচর্চা। তাই চলতেই পারে।