Periods: মাত্র ২ দিনেই শেষ হচ্ছে পিরিয়ড, গুরুতর কোনও রোগ শরীরে জাঁকিয়ে বসছে না তো?
Periods Problem: কিছু কিছু মহিলাদের পিরিয়ডস মাত্র ২ দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। সাধারণত প্রতি মাসে ৩ থেকে ৭ দিন পিরিয়ড স্থায়ী হয়। যদি হঠাৎ মাত্র ২ দিনের মধ্যে ঋতুস্রাব শেষ হয়ে যায়, তা হলে এর পিছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। জেনে নিন এটি স্বাভাবিক নাকি কোনও রোগ?

একটা সময় ছিল পিরিয়ড নিয়ে আলোচনা করতে অনেক মহিলাই লজ্জা পেতেন। ধীরে ধীরে সময়টা বদলে গিয়েছে। প্রতিটি মহিলার শরীরের একটি প্রাকৃতিক এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশ পিরিয়ড। মহিলাদের মাসিক চক্র ২১ থেকে ৩৫ দিন এবং মাসিক ৩ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হয়। তবে, বেশ কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে মাত্র ২ দিনের মধ্যে পিরিয়ড শেষ হয়ে যায়। এই পরিস্থিতি অনেক মহিলার কাছে উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠতে পারে। কখনও কখনও তা স্বাভাবিক, এমনটাই বলেন চিকিৎসকরা। তবে হঠাৎ করে মাসিকের পরিমাণ কমে গেলে তা চিন্তার বিষয়।
পিরিয়ডের সময়কাল যে কোনও মহিলার শরীর, লাইফস্টাইল এবং স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। কিছু মহিলার মাসিক সময়মতো এবং স্বাভাবিক হয়। আবার কিছু মহিলার মাসিক অনিয়মিত বা স্বল্প সময়ের জন্য হয়। যদি কোনও মহিলার মাসিক হঠাৎ করে ২ দিনের মধ্যে শেষ হতে শুরু করে এবং এটি ক্রমাগত চলতে থাকে, তা হলে এর পিছনে কোনও কারণ থাকতে পারে। যা বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসুন জেনে নেওয়া যাক মাসিক চক্র কীভাবে কাজ করে।
মাসিক চক্র কী?
সফদরজং হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের চিকিৎসক সালোনি চাড্ডা ব্যাখ্যা করেন যে, মাসিক চক্র একটি জটিল প্রক্রিয়া। যা হরমোন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। ঋতুচক্র চক্রাকারে সাধারণত ২৮ দিন হয়। তবে ২১ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে যে কোনও সময়কে স্বাভাবিক বলে মনে করা হয়। এই চক্রের চারটি প্রধান পর্যায় রয়েছে। প্রথম পর্যায় হল মাসিক পর্যায়, এই সময় জরায়ুর ভেতরের আস্তরণ শরীর থেকে বেরিয়ে আসে, যার ফলে রক্তপাত হয়। এটি সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হয়।
দ্বিতীয় পর্যায় হল ফলিকুলার পর্যায়। এই সময় ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু বিকশিত হয় এবং ডিম্বস্ফোটনের জন্য প্রস্তুত হয়। তৃতীয় পর্যায় হল ডিম্বস্ফোটন। এই সময় ডিম্বাশয় থেকে একটি ডিম্বাণু নির্গত হয় এবং যদি এটি একটি শুক্রাণুর সঙ্গে মিলিত হয়, তা হলে সেই মহিলা গর্ভবতী হতে পারে। শেষ পর্যায়টি হল লুটিয়াল ফেজ, যেখানে গর্ভাবস্থা না ঘটলে, হরমোনের পরিবর্তনের ফলে জরায়ুর আস্তরণ ভেঙে যায়, যা পরবর্তী মাসিক চক্রের সূচনা করে।
পিরিয়ড তাড়াতাড়ি শেষ হওয়ার কারণ কী?
গর্ভাবস্থা: যদি আপনার মাসিক খুব কম হয় অথবা ২ দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যায়, তা হলে এটি গর্ভাবস্থার লক্ষণ হতে পারে। যদি পিরিয়ডের মধ্যে কোনও পরিবর্তন লক্ষ্য করেন, তা হলে গর্ভাবস্থা পরীক্ষা করানো ভালো হবে।
বুকের দুধ খাওয়ালে: যেসব মহিলারা বুকের দুধ খাওয়ান, তাদের শরীরে প্রোল্যাকটিন হরমোন বেশি পরিমাণে উৎপন্ন হয়। যা তাদের পিরিয়ডের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। অনেক সময়, যে মহিলারা বুকের দুধ খাওয়ান তাদের খুব হালকা এবং স্বল্প সময়ের মাসিক হয়।
মৌখিক গর্ভনিরোধক এবং অন্যান্য ওষুধ: যেসব মহিলারা মৌখিক গর্ভনিরোধক বড়ি গ্রহণ করেন, তাদের মাসিক কম হতে পারে। এছাড়াও, কিছু ওষুধ হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে, যা পিরিয়ডের সময়কালকে প্রভাবিত করতে পারে।
চিকিৎসাগত অবস্থা: পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS), থাইরয়েড সমস্যা, রক্তাল্পতা, ডায়াবেটিস এবং এন্ডোমেট্রিয়াল অ্যাট্রোফির মতো কিছু চিকিৎসাগত অবস্থাও পিরিয়ডের সময়কাল কমাতে পারে। যদি এই সমস্যা বারবার হতে থাকে, তা হলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি।
অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা: অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, খারাপ জীবনধারা এবং স্থূলতার কারণে হরমোনের পরিবর্তন হতে পারে, যা পিরিয়ডের সময়কে প্রভাবিত করতে পারে।
সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মেনে চলতে পারেন —
- স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হব। যাতে শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি পায়।
- ধ্যান, ব্যায়াম এবং যোগব্যায়াম করতে পারেন।
- এই সমস্যা না কমলে অবশ্যই মেডিকেল চেক আপ করান।
