
খাবার খাওয়ার পর চোঁয়া ঢেকুর, গলা-বুক জ্বালার মতো শারীরিক অস্বস্তি হতে থাকে? এগুলো গ্যাস-অম্বলের লক্ষণ। অনেকেই বাড়ির খাবার খেয়েও বদহজমের সমস্যায় ভোগেন। তাছাড়া বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার নিয়মিত খেলে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা হতেই থাকে। কিন্তু গ্যাস-অম্বল হলেই অ্যান্টাসিড খেয়ে নেওয়া, মোটেই ভাল অভ্যাস নয়। তাই চিকিৎসকেরা বলেন, লাইফস্টাইলে বদল এনে বদহজমের সমস্যাকে দূর করতে। তবে, সাম্প্রতিকতম গবেষণা বলছে, হলুদ খেলে আপনার বদহজমের সমস্যা দূর হতে পারে।
পেটের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে হলে, সেটা মোটেই ভাল নয়। বাজারে গ্যাস-অম্বল নিরাময়ের ওষুধের সংখ্যাও কম নয়। কিন্তু সবসময় অ্যান্টাসিডের উপর ভরসা করে থাকাও স্বাস্থ্যের জন্য উপযুক্ত নয়। যে কারণে বদহজম থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই ঘরোয়া প্রতিকারের সন্ধানে থাকেন। সেখানে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা বলছে, হলুদ বদহজম থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম। হলুদের মধ্যে কারকিউমিন নামের একটি সক্রিয় যৌগ রয়েছে। এই প্রাকৃতিক উপাদান প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া এর মধ্যে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান রয়েছে।
১৮ থেকে ৭০ বছর বয়সি ২০৬ জন রোগীর মধ্যে এই গবেষণা করা রয়েছে। ২০৬ জনের প্রত্যেকেই দীর্ঘদিন ধরে নানা কারণে পেট খারাপে ভুগছিলেন। একে ফাংশনাল ডিপেপসিয়া বলা হয়। এই রোগীদের থাইল্যান্ডের হাসপাতাল থেকে নিয়োগ করা হয় এবং বিভিন্ন উপায়ে তাদের চিকিৎসা করা হয়। এই ২০৬ জন রোগীর প্রত্যেককেই ২৮ দিনের ট্রায়ালের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এই গবেষণাতেই দেখা গিয়েছে, পেটের রোগ কমাতে হলুদ দারুণ কার্যকর।
ওষুধের তুলনায় হলুদ কতটা বেশি কার্যকর, সেটা যাচাই করার জন্যই এই গবেষণা করা হয়েছিল। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ৩টি দলে ভাগ করা হয়েছিল। প্রথম দলের ৬৯ জনকে ছোট ড্যামি ক্যাপসুল সহ দিনে চারবার ২৫০ গ্রাম কারকিউমিন দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় গ্রুপের ৬৮ রোগীকে প্রতিদিন ওমেপ্রাজল অর্থাৎ একটি ছোট ২০ মিলিগ্রাম ক্যাপসুল এবং দিনে চারবার দুটি বড় ডামি ক্যাপসুল দেওয়া হয়েছিল। তৃতীয় দলের ৬৯ রোগীকে হলুদ এবং ওমিপ্রাজলের সংমিশ্রণ দেওয়া হয়।
এই গবেষণায় দেখা যায়, ২৮ দিনের মাথায় রোগীদের মধ্যে লক্ষণগুলো উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। বিশেষ করে ব্যথা ও শারীরিক অস্বস্তি। যাঁরা ওমিপ্রাজলের সঙ্গে হলুদ গ্রহণ করেছিলেন, ৫৬তম দিনে তাঁদের মধ্যে লক্ষণগুলো জোরাল হয়েছে। আবার অনেক সময় হজম সংক্রান্ত সমস্যা দূর করতে হলুদ দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলে। তাই হলুদ কার্যকর হলেও কতটা উপকারী তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। তবে, এ বিষয়ে আরও গবেষণায় প্রয়োজন রয়েছে।