
ঘাম হওয়া শরীরের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে, শরীর ঠান্ডা করতে এটি প্রয়োজন। কিন্তু যদি কারও সারা বছর, ঠান্ডা আবহাওয়াতেও অস্বাভাবিকভাবে অতিরিক্ত ঘাম হয়, তাহলে সেটা কিছু রোগের ইঙ্গিত হতে পারে। একে চিকিৎসার পরিভাষায় বলা হয় হাইপারহাইড্রোসিস (Hyperhidrosis)। কী কী কারণে হতে পারে এমনটা?
১। থাইরয়েড সমস্যা (হাইপারথাইরয়েডিজম):
থাইরয়েড গ্রন্থি অতিরিক্ত হরমোন উৎপাদন করলে শরীরের বিপাক হার বেড়ে যায়, ফলে ঘামও বেড়ে যায়। সঙ্গে থাকতে পারে ওজন কমা, ঘুমের সমস্যা, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া।
২। ডায়াবেটিস বা রক্তে শর্করার ওঠানামা:
ডায়াবেটিস থাকলে রক্তে সুগার কমে গেলে (হাইপোগ্লাইসেমিয়া), শরীর অতিরিক্ত ঘাম দিয়ে তা জানান দেয়। মাথা ঘোরা, দুর্বলতা ও ঝিমঝিম ভাব একসঙ্গে দেখা যায়।
৩। ইনফেকশন বা জ্বরজাতীয় সমস্যা:
দেহে কোনো ইনফেকশন বা ভাইরাল সংক্রমণ (যেমন টিউবারকুলোসিস বা HIV) থাকলে ঘাম বেড়ে যায়, বিশেষ করে রাতের বেলায়।
৪। নার্ভজনিত সমস্যা:
স্বায়ত্তশাসিত স্নায়ু (Autonomic Nervous System) ঠিকমতো কাজ না করলে ঘাম নিয়ন্ত্রণের সমস্যা হয়। এটি ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি বা পারকিনসনস ডিজিজের অংশ হতে পারে।
৫। মেনোপজ বা হরমোন পরিবর্তন:
মহিলাদের ক্ষেত্রে রজঃনিবৃত্তির সময় হরমোনের ওঠানামার কারণে ঘাম ও হট ফ্ল্যাশ হতে পারে।
৬। কিছু ওষুধ:
ডিপ্রেশনের ওষুধ, স্টেরয়েড, হরমোন থেরাপি বা পেইনকিলার থেকেও ঘাম বেড়ে যেতে পারে।
৭। টিউমার বা ক্যানসার:
কিছু বিশেষ ধরনের ক্যানসার (যেমন লিম্ফোমা) এর প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে অতিরিক্ত ঘাম, বিশেষ করে রাতের বেলায়।
ঘন ঘন ও অতিরিক্ত ঘাম শুধুই গরম লাগার ফল নয়। এটি কোনও বড় শারীরিক সমস্যার পূর্বাভাস হতে পারে। তাই উপসর্গগুলো নজরে এলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।