বিশ্বজুড়ে ক্রমেই নামতে শুরু করেছে কোভিডের গ্রাফ। কমেছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাও। বেশ কিছু রাজ্যে শিখিল হয়েছে কোভিড বিধি। আবারও যখন বিস্ব নতুন করে গুরে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন কোভিডের এই নয়া স্ট্রেন ভয় ধরিয়েছে বিশেষজ্ঞদের। গত সপ্তাহেই এই রিকম্বিন্যান্ট ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এই ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন BA.1 and BA.2-এর সংমিশ্রণ বলেই মনে করেছেন তাঁরা। এই ভাইরাসের তীব্রতা কতখানি হবে তা এখনও পর্যন্ত জানা না গেলেও এই ভাইরাসের সংক্রামক ক্ষমতা ওমিক্রনের তুলনায় প্রায় ১০ গুণ সেকথা কিন্তু আগেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
নতুন এই ভ্যারিয়েন্টকে রিকম্বিন্যান্ট (XE is a recombinant of Omicron BA.1 and BA.2) বলা হয়েছে। তবে এই রিকম্বিন্যান্টের বিষয়ে কিন্তু এর আগেও সতর্ক করেছে WHO। এর আগে ফ্লোরোনা এবং ডেল্টাক্রোন-সহ কোভিড ভাইরাসের বেশ কয়েকটি রিকম্বিন্যান্ট চিহ্নিত হয়েছে। আর এই XE-ভ্যারিয়েন্টটি হল ওমিক্রন BA1 এবং BA2 এর রিকম্বিন্যান্ট।এখনও পর্যন্ত ইংল্যান্ডে এই XE-ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছে এমন ৬৩৭টি কেস শনাক্ত হয়েছে। আর নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট কিন্তু ইংল্যান্ডে প্রথম শনাক্ত হয়েছিল গত বছর অক্টোবরে। এরপর নতুন আক্রান্তের খোঁজ মেলে এই বছরের ২৫ মার্চ।
কখন সচেতন হতে হবে?
কোভিড ভাইরাসের লক্ষণ এবং তীব্রতা কিন্তু মানুষ ভেদে ভিন্ন হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং কোভিড টিকার উপর নির্ভর করে রোগ সংক্রমণের সম্ভাবনা। কোভিডের প্রকোপ কম বলে অনেকেই কিন্তু আর কোভিড বিধি মানছেন না। এমনকী মাস্কও ব্যবহার করছেন না। ফলে সর্দি, কাশি, জ্বর, গলা ব্যথা, গলা খসখস করা, ত্বকে কোনও জ্বালাভাব থাকলে, পেটের সমস্যা, ইনফেকশন হলে কিন্তু ফেলে রাখবেন না। যত দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। প্রয়োজনে টেস্ট করান। এছাড়াও বুক ধড়ফড় করা, ক্লান্তি ককনও ভাইরাসের কারণেও হতে পারে। আবার তা হতে পারে গুরুতর কোনও স্নায়ুরোগের কারণ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯ জানুয়ারি XE-রিকম্বিন্যান্ট প্রথম শনাক্ত হয়েছিল আমেরিকায়। পরবর্তীতে আরও ৬০০ জনের শরীরে সেই সংক্রমণের হদিশ পাওয়া যায়। আবারও পরের দিকে শুধু ওমিক্রনের BA.2 ভ্যারিয়েন্টটিই সংক্রমণ ছড়ায়। যদিও বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ওমিক্রনের সংক্রমণে ভারতে যে ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছিল, জানুয়ারির শেষেই কিন্তু তা নিয়ন্ত্রণে আসে। গত কয়েকদিনে কোভিড মৃত্যুও নেই দেশে। তবে মহামারী এখনও শেষ হয়নি। দিল্লি মেডিকেল কাউন্সিলের সভাপতি ডাঃ অরুণ গুপ্তা টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে যেমন জানিয়েছেন, অতিমারী এখনও শেষ হয়ে যায়নি। চিন, হংকং, আমেরিকায় অনেক মানুষই আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে ভারতেও যে আবার চতুর্থ ডেউ আসবে না তা কিন্তু নয়। আর তাই যাবতীয় কোভিড বিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরা, টিকা নেওয়া এবং সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলা উচিত। অন্তত একবছর যদি কোনও কোভিড সংক্রম বা মৃত্যু না হয় তাহলেই বলা যাবে যে, আমরা কোভিড মুক্ত হতে পেরেছি।
তবে বিশেষজ্ঞরা এটাও বলছেন যে, এখনও পর্যন্ত এই রিকম্বিন্যান্ট ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ৬০০ জনেরই খোঁজ মিলেছে। ফলে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। কিন্তু বিষয়টির উপর কড়া নজরও আমাদের রাখতে হবে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: Coronavirus Variant: নতুন ভ্যারিয়েন্ট XE কতটা ভয়াবহ? যা জানাচ্ছেন গ্লোবাল হেলথের বিশেষজ্ঞরা