ব্রণ এমন এক ত্বকের সমস্যা যা টিনএজ থেকে শুরু করে ২৫-৩০ ঊর্ধ্ব ব্যক্তিদের মধ্যেও দেখা যায়। ব্রণ এক প্রকার ইনফ্লেমেটোরি ত্বকের অবস্থা যা প্রায়শই বয়ঃসন্ধির সময় ঘটে। তবে ব্রণ প্রাপ্তবয়স্কদেরও প্রভাবিত করে। প্রত্যেক বয়সের মানুষের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দিলেও এর কারণ গুলি এক নয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে কিছু কিছু মানুষের মধ্যে ব্রণ দু দশকেরও বেশি থাকে। আর এই সমস্যা প্রায় ৮৫ শতাংশ মহিলা এবং ১৫ শতাংশ পুরুষদের মধ্যে দেখা যায়।
এই প্রাপ্তবয়স্ক ব্রণগুলি মূলত ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস নিয়ে গঠিত হয়। কিন্তু বেশির ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক ব্রণর ক্ষেত্রে লালভাব, ফোলা, জ্বালা এবং সিস্ট ইত্যাদি লক্ষ্য করা যায়। আরেকটি অবস্থা হল রোসাসিয়া, একেও প্রাপ্তবয়স্ক ব্রণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। তাহলে আসুন প্রাপ্তবয়স্ক ব্রণর কারণগুলি সম্পর্কে জানা যাক।
সাধারণত ইনফ্লেমেটোরি এবং বন্ধ ছিদ্রের জন্য এই ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। তবে এছাড়াও কিছু কারণ রয়েছে। যেমন হরমোন। হরমোনের ভারসাম্য ত্বকের ওপর প্রভাব ফেলে যার জন্য প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও ব্রণর সমস্যা দেখা দেয়। এটি পিএইচ ভারসাম্যহীনতা, প্রদাহ, সঞ্চালনের পার্থক্য বা অত্যধিক সিবাম তেল উৎপাদনের জন্যও হয়ে থাকে। এছাড়া মহিলাদের মধ্যে ঋতুস্রাব, গর্ভাবস্থা, প্রসব পরবর্তী সময়কাল এবং স্তন্যপানের সময় ব্রণর সমস্যা দেখা দেয়।
ত্বকের ওপর প্রভাব ফেলে এমন কোনও পণ্য বা বস্তুর ত্বকের কাছাকাছি এলে, ত্বকে এই ধরণের সংক্রমণ দেখা দেয়। মানসিক চাপও ব্রণর জন্য দায়ী। আপনি যখন অত্যধিক মানসিক চাপ, উদ্বেগে ভোগেন তখন অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিগুলি স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল আরও বেশি পরিমাণে উৎপন্ন করে, যার ফলে ত্বকে ব্রণর সমস্যা দেখা দেয়।
এমনকি শারীরিক চাপও হরমোনের পরিবর্তন, দুর্বল অনাক্রম্যতা এবং প্রদাহকেও উদ্দীপিত করে। এই শারীরিক চাপ তৈরি হয় আবহাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন, অনিদ্রা, অসুস্থতা, ডিহাইড্রেশন ইত্যাদির কারণে। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যেসব ব্যক্তিদের মধ্যে এলার্জি, মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে এবং যারা অত্যধিক পরিমাণে ধূমপান করেন তাদের মধ্যে ব্রণর সমস্যা বেশি দেখা যায়।
ত্বকের মধ্যে উপস্থিত প্রোপিওনিব্যাকটেরিয়াম ব্রণ সৃষ্টি করে। এই ব্যাকটেরিয়া ত্বকের ভিতরের স্তরে থাকে। অতিরিক্ত ত্বক পরিষ্কার করলে এই ব্যাকটেরিয়া ত্বকের ওপরে উঠে আসে এবং এর ফলে ব্রণর সমস্যা দেখা দেয়।
অনেকের ধারণা ডায়েটের জন্য ব্রণর সমস্যা দেখা দেয় না। কিন্তু গবেষণা বলছে, অস্বাস্থ্যকর এবং অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার ব্রণ হওয়ার একটি কারণ। অন্যদিকে, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবেও অনেক সময় ব্রণর সমস্যা দেখা দেয়। সুতরাং একাধিক কারণে প্রাপ্তবয়স্ক ব্রণর সমস্যা দেখা দেয়। তবে ঘরোয়া পদ্ধতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন চিকিৎসার মাধ্যমে এই সমস্যার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: বাড়িয়ে দাও সাহায্যের হাত! কারোর আত্মহত্যা করার প্রবণতা রয়েছে, বুঝবেন কীভাবে?