ভারতীয় বিয়ে মানেই অঢেল রীতি-নীতি, লোক খাওয়ানো, বিয়ের পোশাক, সাজসজ্জা ও উপহার বিয়ে চরম ব্যস্ততা। চারদিন ধরে চলা বিয়ের অনুষ্ঠানে চলে নানা ফাংশন। আর সেগুলির ব্যবস্থা করতে ভারতীয়রা এতটুকু খরচ করতে কুন্ঠাবোধ করেন না। অন্যদের খুশি রাখতে গিয়ে নিজেদের নিঃস্ব করার চল ভারতীয় রীতিনীতিতে বহু বছর ধরেই বিদ্যমান। পাশাপাশি বিয়ের সূত্র ধরেই নবদম্পতি তাঁদের জীবনে দ্বিতীয় ইনিংশ শুরু হয়। উভয়ের আশা-আকাঙ্খা, উত্তেজনা, সম্পর্কের সব বিষয়েই একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে। মানসিক উত্তেজনা, উভয়ের প্রতি আজীবন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা ওভালবাসার গভীরে যাওয়া কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। বিয়ের অনুষ্ঠানকে ঘিরে নববধূ ও বর সমস্ত অনুষ্ঠানের জন্য পোশাক. সাজসজ্জা ও মেনু নির্বাচন করতেই বেশি সময় ব্যয় করেন। তারপর রয়েছে প্রাক-বিবাহ ফটোশ্যুট, মধুচন্দ্রিমার স্থান নির্বাচন করা। এত খরচ ও সময় ব্যয়ের মধ্যে যেটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে সকলে উপেক্ষা করা হয়। তা হল দম্পতির বিবাহপূর্ব স্বাস্থ্য পরীক্ষা।
বিয়ের অনুষ্ঠান কয়েকদিনের হলেও বিবাহ হল চিরকালের বন্ধন। বিবাহপূর্ব স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে দম্পতির জেনেটিক, সংক্রমণযোগ্য ও সংক্রামক রোগের মতো যে কোনও অবস্থা সনাক্ত করতে সাহায্য করে। একটি বিবাহ একটি দম্পতির জীবনের সবচেয়ে বড় ঘটনা। তাই তাদের নিশ্চিত হওয়া উচিত যে অন্যান্য পারিপার্শিক কারণের সঙ্গে তাঁদের স্বাস্থ্যেরও যত্ন নেওয়া।
পারিবারিক ইতিহাস, জেনেচিক্স, বয়স, খাদ্য ও আসক্তি- সবই ভবিষ্যতের জন্য একটি মানচিত্র তৈরিতে অবদান রাখে। বিয়ে করার কথা পাকা হলে প্রত্যেক দম্পতির যেমন নিজেদের কথা ভেবে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করার প্রয়োজন, তেমনি বিবাহ-পূর্ব স্ক্রিনিং তাঁদের সন্তানদের স্বাস্থ্য সম্পর্কেও নিশ্চিত থাকা সম্ভব। বংশগতি বুঝতে ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা বা চিকিত্সা নিয়েও সাহায্য করে এই স্ক্রিনিং।
বিয়ের আগে রাশিফল, কুন্ডুলি মেলানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোও বর্তমানে নয়া সংস্কৃতি হওয়া উচিত। শুধুমাত্র দম্পতির একে অপরের যত্ন নেওয়ার জন্য নয়, গোটা পরিবারের জন্যও এটি সুস্থ মানসিকতার পরিচয় দেয়।
প্রসঙ্গত, প্রত্যেকেরই প্রতি বছর একবার একটি প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত, বিবাহের প্রায় ছয় মাস আগে একটি বিবাহপূর্ব চেকআপ করা যেতে পারে। বিয়ের আগে নবদম্পতির কী কী চেক করা উচিত, তা একঝলকে দেখে নিন…
যৌনবাহিত রোগ: এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি এবং সি সঠিকভাবে পরীক্ষা না করলে বিবাহিত জীবনকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। সিফিলিস, গনোরিয়া এবং হারপিসের জন্যও পরীক্ষা করা উচিত।
উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত রোগ: রক্তবাহিত রোগ যেমন হিমোফিলিয়া, থ্যালাসেমিয়া, মারফান সিনড্রোম, হান্টিংটন ডিজিজ এবং সিকেল সেল বংশধরদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার উচ্চ সম্ভাবনা থাকে।
বংশবৃদ্ধি: এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ বন্ধ্যাত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত অপ্রয়োজনীয় জৈবিক, মনস্তাত্ত্বিক, সামাজিক এবং মানসিক ট্রমাগুলি কাটাতে ফার্টিলিটির সমস্যাগুলি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমাধান করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: Winter Allergy: শীতকালে অ্যালার্জি থেকে মুক্তি চান? মাথায় রাখুন এই ৫ জরুরি টিপস