Boost Haemoglobin: এই খাবারগুলো খেলেই হু হু করে বাড়বে হিমোগ্লোবিন! দূরে হটবে ‘অ্যানিমিয়া’

Blood Health: সোজা কথায় রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেন কম পৌঁছয়। ফলে দেখা যায় ক্লান্তি, দুর্বলভাব, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, হার্টের দ্রুত স্পন্দন, ফ্যাকাসে ত্বকের মতো উপসর্গ।

Boost Haemoglobin: এই খাবারগুলো খেলেই হু হু করে বাড়বে হিমোগ্লোবিন! দূরে হটবে ‘অ্যানিমিয়া’
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 12, 2022 | 11:15 PM

রক্তের (Blood) অন্যতম উপাদান হল লোহিত রক্তকণিকা। পরিণত লোহিত রক্তকণিকার মধ্যে থাকে একধরনের প্রোটিন যা অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হয়। এই প্রোটিনটিই হল হিমোগ্লোবিন (Haemoglobin)। একইসঙ্গে দেহের বিভিন্ন অঙ্গের কোষ থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড বের করে নিয়ে আসে। এরপর ফুসফুস পর্যন্ত পৌঁছে দেয় বিষাক্ত গ্যাসটিকে দেহের বাইরে বের করে দেওয়ার জন্য। সুতরাং এককথায়, স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার (Healthy Lifestyle) জন্য শরীরে পর্যাপ্ত হিমোগ্লোবিন থাকতেই হবে।

হিমোগ্লোবিনের আবার দু’টি অংশ রয়েছে— ‘হিম’ এবং ‘গ্লোবিন’। হিম অংশে উপস্থিত থাকে আয়রন। তাই হিমোগ্লোবিনের গঠনে আয়রনের ভূমিকা অপরিহার্য।

হিমোগ্লোবিন কম থাকার অর্থ কী?

সোজা কথায় রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেন কম পৌঁছয়। ফলে দেখা যায় ক্লান্তি, দুর্বলভাব, মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট, হার্টের দ্রুত স্পন্দন, ফ্যাকাসে ত্বকের মতো উপসর্গ। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা হ্রাস পাওয়ার সমস্যাকে বলে ‘অ্যানিমিয়া’ বা ‘রক্তাল্পতা’।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

উপরিউক্ত উপসর্গগুলির মধ্যে একটি বা দু’টি দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ‘সিবিসি’ বা ‘টোটাল ব্লাড কাউন্ট’ পরীক্ষাটি করালেই রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বোঝা যায় সহজে। ভারতে অ্যানিমিয়ার সমস্যায় ভোগা মানুষের সংখ্যা যথেষ্ট। বিশেষ এদেশে ঘরে ঘরে মহিলাদের মধ্যে রক্তাল্পতার অসুখ দেখা যায়।

রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা

পুরুষ: একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরষের প্রতি ডেসিলিটার রক্তে হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা ১৪ থেকে ১৮ গ্রাম।

মহিলা: একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার প্রতি ডেসিলিটার রক্তে হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা ১২ থেকে ১৬ গ্রাম।

রক্তে এই মাত্রার থেকে হিমোগ্লোবিন কম থাকার অর্থ হল আপনি রক্তাল্পতায় ভুগছেন। জানলে অবাক হবেন, খাদ্যাভ্যাসে সামান্য কিছু পরিবর্তন করেই রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ানো যায়। প্রশ্ন হল কীভাবে?

বীটরুট: প্রাকৃতিকভাবেই বীটরুটে প্রচুর পরিমাণে লোহা রয়েছে। এছাড়া আছে ম্যাগনেশিয়াম, তামা, ফসফরাস, ভিটামিন বি১, বি২, বি৬, বি১২ এবং ভিটামিন সি। এই ধরনের সব্জি পূর্ণ রয়েছে খনিজ সম্পদ ও ভিটামিন দ্বারা। ফলে নিয়মিত সব্জিগুলি খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। একইসঙ্গে রক্তে লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যাতেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়।

সজিনা পাতা: জিঙ্ক, লোহা, তামা, ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ সহ ভিটামিন এ, বি, সি দ্বারা পূর্ণ সজিনা পাতা। সজিনা শাক প্রতিদিন ভাতের সঙ্গে খাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট বেশি।

সবুজ শাকসব্জি: পালং, সর্ষে, ব্রকোলির মতো শাকসব্জিও আয়রনে পূর্ণ। এছাড়া ভিটামিন বি১২, ফোলিক অ্যাসিডও রয়েছে পর্যাপ্ত মাত্রায়। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে চাইলে শাকসব্জিগুলি পাতে রাখা যায়। ব্রকোলির কথা একটু আলাদা করে বলতে হয়। কারণ এই সব্জিতে রয়েছে আয়রন এবং বি কমপ্লেক্স ভিটামিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ফোলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম। একটা কথা মনে রাখতে হবে, সবুজ শাকসব্জিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজমে সাহায্য করে। ক্যালোরি কম থাকায় বেশি মাত্রায় খেলেও ওজন বাড়ে না। সবচাইতে বড় কথা, ডায়াবেটিকরা নিশ্চিন্তে শাকসব্জি খেতে পারেন।

খেজুর, কিসমিস, ডুমুর: খেজুর ও কিসমিস একত্রে আয়রন ও ভিটামিন সি-এর উপযুক্ত উৎস। অন্যদিকে ডুমুরে রয়েছে যথেষ্ট মাত্রায় আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন এ এবং ফোলেট। প্রতিদিন সকালে তিনটি করে খেজুর, একমুঠো কিসমিস ও শুকনো ডুমুর মিশিয়ে খেলে রক্তাল্পতার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শরীরে এনার্জিও থাকে চূড়ান্ত। তবে ডায়াবেটিকরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ধরনের খাবার খাবেন না।

তিল: কালো তিলে রয়েছে আয়রন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম এবং ভিটামিন বি৬, ই এবং ফোলেট।

একটা বাটিতে ১টেবিল চামচ তিল নিয়ে সারা রাত জলে ভিজিয়ে পরদিন সকালে খালি পেটে খেয়ে নিলে রক্তাল্পতার সমস্যা মেটে। এমনকী মধু দিয়ে তিলের নাড়ু করে খেলেও উপকার মেলে। চাইলে ওটমিল এবং ইয়োগার্টেও মিশিয়ে খাওয়া যায় রোস্টেড তিল বীজ।

আরও কিছু টিপস

ফল: প্রতিদিন আপেল, আঙুর, কলা, বেদানা, তরমুজ খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ে।

লোহার বাসন: লোহার তৈরি পাত্রে রান্না করুন ও খাবার খান। বাসনকোসনের মাধ্যমেও শরীরে অনেকখানি লোহা ঢোকে।

ভিটামিন সি: ডায়েটে রাখুন কমলালেবু, পাতিলেবু, স্ট্রবেরি, বেল পিপার, টম্যাটো, আঙুরের মতো ভিটামিন সি পূর্ণ খাদ্য।

আয়রনরোধী খাদ্য নয়: শুধু আয়রনসমৃদ্ধ খাদ্য খেলেই হবে না, তার সঙ্গে এমন কিছু খাদ্যগ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে যেগুলি শরীরে আয়রন প্রবেশকে আটকায়। অর্থাৎ পলিফেনলস, ট্যানিন, ফাইটেটস এবং অক্সালিক অ্যাসিডযুক্ত খাদ্যগ্রহণ এড়িয়ে চলতে হবে। তাই চা, কফি, কোকো, সয়া প্রোডাক্ট, ওয়াইন, বিয়ার, কোলাজাতীয় খাদ্য, অ্যালকোহল গ্রহণ সম্পূর্ণভাবে বাদ দিতে হবে।

আরও পড়ুন: Diabetes: আপনি কি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত? রোগ নিরাময়ের জন্য ডায়েটিশিয়ান না এন্ডোক্রিনোলজিস্ট, কার কাছে যাবেন?