পিরিয়ড মিস করে গিয়েছেন? বা দেরিতে হচ্ছে? অনিয়মিত হয়ে গিয়েছে ঋতুচক্র? এমন সমস্যা হলে মোটেই বিষয়টিকে হেলাফেলা করা যাবে না। এমন ঘটনার পিছনে দায়ী থাকতে পারে একাধিক কারণ। উদাহরণ হিসেবে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (পিসিওএস)-এর কথা বলা যায়। এছাড়া অনির্ণীত থাইরয়েডের সমস্যাও দায়ী থাকতে পারে এমন ঘটনার পিছনে। এমনিতে প্রেগন্যান্সি, বাচ্চাকে ব্রেস্টফিডিং করানোর সময় এবং মেনোপজের পর্যায়ে পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়। তবে এই অবস্থাগুলি ছাড়া অন্য সময়ে মেনস্ট্রুয়েশন বন্ধ হয়ে গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শরীরে কফের ও বাতের ভারসাম্যের অভাব হলে এই ধরনের গণ্ডগোল দেখা দিতে পারে। যে পথ ধরে মেনস্ট্রুয়াল ব্লাড আসে তা অবরুদ্ধ হয়ে যেতে পারে। ফলে এন্ডোমেট্রিয়ামে যতখানি পুষ্টি উপাদান পৌঁছনোর কথা তা পৌঁছয় না। এর ফলে পিরিয়ড হয়ে পড়ে অনিয়মিত। মাত্রাতিরিক্ত উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তার কারণেও এমন সমস্যা হাজির হতে পারে।
আমেনোরিয়া প্রতিরোধে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য খেতে হবে। তবে খাদ্য নির্বাচন করতে হবে সতর্ক হয়ে যাতে পিত্ত বাড়ে। তাই রান্নায় ব্যবহার করতে হবে রসুন, জিরা, ধনে বীজ, মৌরি, মেথি, কালো তিল, হলুদ, পিপলি, কালো মরিচ। এছাড়া কফ ও বাত দোষ বাড়ায় এমন খাদ্য এড়িয়ে চলাই ভালো। তাই ঠান্ডা খাদ্য, পেট ভার করে এমন খাদ্য, প্রসেসড ফুড, সফট ড্রিংকসের মতো পানীয় সেবন করা যাবে না।
অনিয়মিত পিরিয়ডের জন্য আয়ুর্বেদিক ভেষজ
• শতভরিকে বলা হয় ভেষজের রানি। মহিলাদের প্রজননতন্ত্রের পক্ষে অত্যন্ত উপযোগী এই ভেষজ। দুধের সঙ্গে চিনি বা মধু ও গুঁড়ো শতভরি মিশিয়ে খেলে তা পিরিয়ড নিয়মিত করতে সাহায্য করে।
• জবা ফুলে রয়েছে একাধিক ভেষজ গুণ। মহিলাদের প্রজননতন্ত্রের নানা কাজ স্বাভাবিক করতে বিশেষ উপযোগী এই ভেষজটি। জবাফুলের চা করে পান করা যায় নিয়মিত। এছাড়া ২ থেকে ৩টি জবাফুল ঘিয়ে ভেজে গরম দুধের সঙ্গেও পান করা যেতে পারে।
• গুড়ের সঙ্গে কালো তিলের বীজ সেবনে ঋতুচক্র ক্রমশ স্বাভাবিক হতে থাকে। এছানা প্রজনেনের জন্য দায়ী নানা হরমোনের ক্ষরণেও সাহায্য করে।
• একগ্লাস জলে দুই চামচ মৌরি নিয়ে সারা রাত ভিজতে দিন। সকালে উঠে খালি পেটে ওই জল ছেঁকে পান করুন। পিরিয়ডের সমস্যায় উপকার পাবেন।
• পিরিয়ড নিয়মিত করতে অ্যালভেরা অত্যন্ত উপকারী ভেষজ। একটি অ্যালভেরার পাতা কাটুন। জেল বের করুন। এক চামচ মধুর সঙ্গে মেশান এবং প্রতিদিন সকালে খালি পেটে সেবন করুন।
• আনারস ও পেঁপে খান নিয়মিত।
• যেভাবেই হোক স্ট্রেস কমান। তাই প্রতিদিন দশমিনিট করে ধ্যানে বসুন। উপকার পাবেন।
• পদ্মাসন, হলাসন, ধনুরাসন, সর্বাঙ্গাসন, শলভাসন, ভুজঙ্গাসন, পশ্চিমোত্তাসনের মতো আসনগুলি নিয়মিত অভ্যেস করলে তা ঋতুচক্র নিয়মিত করে ও সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।