রবিবার রাতের জমাটি খাওয়া-দাওয়া সেরে যখন সোমবার সকালে ঘুম চোখে উঠে অফিসের জন্য তৈরি হতে হয় তখন Monday blues-এর পাশাপাশি গ্যাস, অম্বল, চোঁয়া ঢেকুর এসব সমস্যাও থাকে। উইকএন্ড মানেই জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া, মধ্যরাত পর্যন্ত পার্টি চলতেই থাকে। পার্টিতে চিকেন স্ট্যু আর ফ্রুট স্যালাড খুব কমই খাওয়া হয়। একের পর এক খাওয়া চলতেই থাকে। তেস-মশলাদার খাবার, পছন্দের পানীয়ই পাল্লাতে ভারি। রাত করে এসব খাবার খেলে শরীরে একাধিক সমস্যা দেখা যায়। তার মধ্যে প্রথমটিই হল গ্যাস। গ্যাস হলে শরীরে অস্বস্তি লেগেই থাকে। সঙ্গে খাওয়ার কোনও রকম ইচ্ছে থাকে না। শরীরে অসেবস্তি নিয়ে কোনও কাজই মন দিয়ে করা যায় না। মুঠো মুঠো অ্যান্টাসিড সব সময় সমস্যার সমাধান নয়। নিজের শরীর নিয়ে সাবধান হতে হবে নিজেকেই। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে কোন খাবার থেকে সমস্যা বেশি হচ্ছে।
পছন্দের খাবার খেয়ে পেট ভরানোরও কিছু নিয়ম আছে। আর এই নিয়ম মেনে খেতে পারলে সমস্যা অনেকস কম হয়। কিছু খাবারের কম্বিনেশন এমন থাকে যা খেলে গ্যাস-অম্বল হবেই। আবার নির্দিষ্ট কিছু খাবার আছে যা খেলে যে কোনও মানুষই পড়তে পারেন বদহজম জনিত সমস্যায়। তেমনই কিছু খাবার চিহ্নিত করেছেন গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজিস্টরা।
দুধ- দুধ থেকে তৈরি যে কোনও খাবার থেকেই হতে পারে গ্যাসের সমস্যা। যে কারণে দুধের খাবার থেকেই পেটের গন্ডগোল বেশি হয়। পনির, আইসক্রিম, চিজ যে কোনও কিছু থেকেই হতে পারে এই সমস্যা। গ্যাস হতে পারে সন্দেশ, রসমালাই, মিষ্টি দই থেকেও। কারণ দুগ্ধজাত যে কোনও খাবারের মধ্যেই ল্যাকটোজের পরিমাণ বেশি। আর এই ল্যাকটোজ বিশ্বের ৭০ শতাংশ মানুষের অ্যালার্জির কারণ। যে কারণে দুধের তৈরি যে কোনও খাবার থেকে গ্যাস হয় তাড়াতাড়ি। আর গ্যাস হলেই শরীর ফুলে থাকে, খাওয়ার ইচ্ছে থাকে না।
কম ক্যালোরির মিষ্টি- সুস্থ থাকতে এবং সচেতনতার খাতিরে অনেকেই মিষ্টি ছেড়ে সুগার ফ্রি বা কম মিষ্টি রয়েছে এমন খাবার বেশি খান। এই সব খাবার হয়তো শরীরে সুগারের মাত্রা কম রাখে। কিন্তু প্রভাব ফেলে অন্ত্রে। অ্যালকোহলের মধ্যে সুগারের পরিমাণ কম থাকে। যে কারণে অ্যালকোহল আর সুগার একসঙ্গে মিশলে এই সমস্যা বেশি হয়। একই সমস্যা হয় যে কোনও ফ্রুট জুসের ক্ষেত্রেও। যে কারণে অ্যালকোহল থেকে সহজেই বদহজম, গ্যাস-অম্বলের মত সমস্যা হয়।
এই সমস্যা রুখতে যা করবেন-
প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান। এক্ষেত্রে চলতে পারে কিমচি বা কম্বুচা। অ্যালকোহল খেলে তার সঙ্গে অতিরিক্ত ডিপ ফ্রায়েড কোনও কিছুই চলবে না। বুঝে খেতে হবে। স্বাস্থ্যকর কোনও পানীয় বানিয়ে নিতে পারেন টকদই দিয়ে। কম তেল-মশলার খাবার খেতে হবে। শাক, সবজি, ফল এসব বেশি করে খান। প্রতি সপ্তাহে অন্তত নিয়ম করে ৩০ রকম শাক, ফল, সবজি, বাদাম এইসব খান। এতেই শরীর ভাল থাকবে। রোজ একবাটি করে ডাল অবশ্যই খাবেন। এর পাশাপাশি শরীরচর্চা আবশ্যক। শরীরে কোনও অস্বস্তি মনে হলেই বেশি করে হাঁটাহাঁটি করুন। উপকার পাবেন।