ওমিক্রনের (Omicron) সুনামি থেকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বিশ্ববাসী। তার মধ্যেই মাথায় বাজ ভেঙে পড়ার মত সতর্কবার্তা দিল চিনের উহান ইউনিভার্সিটি (Wuhan University)। কারণ উহান বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বিশ্বব্যাপী ওমিক্রনের দাপটের মধ্যেই ফের একবার করোনার নয়া স্ট্রেনের (COVID variant) হদিশ মিলেছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া গিয়েছে করোনার নয়া প্রজাতির ভাইরাস। যে কিনা নিওকোভ (NeoCov) নাম দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাসের আতুঁড়ঘর উহানের বিজ্ঞানীদের (Wuhan scientists) আশঙ্কা, এই নয়া স্ট্রেনের মারাত্মক প্রভাবে বাড়বে মৃত্যুসংখ্যা (Deathtoll)। প্রতি তিনজন আক্রান্তের মধ্য়ে একজনের মৃত্যু হবে এই নয়া স্ট্রেনে।
রাশিয়ার নিউজ এজেন্সি স্পুটনিকের এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্যে জানা গিয়েছে, উহানের বিজ্ঞানীরা দক্ষিণ আফ্রিকায় পাএয়া নয়া প্রজাতির করোনাভাইরাস নিওকোভ আসলে ওমিক্রনের থেকেও মারাত্মক সংক্রমণযোগ্য ও ভয়ংকর। নয়া সমীক্ষায় এখনও পরিস্কার কিছু না জানলেও যে টুকু অপ্রত্যাশিতভাবে হাতে এসেছে, তা হল, নিওকোভ ও এর বংশধর পিডিএফ-২১৮০-কোভ (PDF-2180-CoV) দ্রুত বেগে মানবশরীরে সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম। নিওকোভের সঙ্গে মার্স-কোভ (MERS-CoV)একসঙ্গে মিলিত হয়ে দাপিয়ে বেড়াবে এই মারণ ভাইরাস। ফলে মৃত্যুসংখ্যা বাড়বে। বর্তমানে সার্স -কোভ-২ করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি, এমনটাই জানিয়েছেন গবেষকরা।
নিওকোভ কি কোভিড১৯ এর একটি নয়া রূপ?
স্পুটনিকের রিপোর্ট অনুসারে, দক্ষিণ আফ্রিকায় হদিশ পাওয়া নিওকোভ ভাইরাসটি নতুন নয়। এবং এটি বেশ কিছুদিন ধরেই রয়েছে। ভাইরাসটি মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম মার্স-কোভের সঙ্গে সম্পর্কিত। ২০১২ ও ২০১৫ সালে এর প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা গিয়েছিল। এটি সার্স-কোভিড২ এরসঙ্গে অনেক দিন বিদ্য়মান। ফলে সার্স কোভ-২ এর ন্যায় মানবদেহে ছড়িয়ে দেয় দ্রুতগতিতে। তবে এখনও পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার বাদুড়ের মধ্যে এই মারণ ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে।
কারা এই ভাইরাসে বেশি প্রভাবিত হবেন?
নতুন করোনভাইরাস সম্পর্কিত সম্ভাব্য বিপদের কথা বলতে গিয়ে বিজ্ঞানীদের মত, এটি ACE2 রিসেপ্টরের সঙ্গে কোভিড -১৯ ভাইরাসের চেয়ে ভিন্ন উপায়ে আবদ্ধ। যাদের শ্বাসযন্ত্রের সমস্য়া রয়েছে ও তাঁদের SARS-CoV-2-এর বিরুদ্ধে মোকাবিলা করার জন্য টিকা দেওয়া হলেও শরীরের মধ্যে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি বা প্রোটিন অণুগুলি সফলভাবে এর বিরুদ্ধে কোনও কাজ করবে না। একইভাবে NeoCoV ও MERS-CoV এর সম্মিলিত সংক্রমণে মৃত্যুর হার রেকর্ড গড়ার আশঙ্কা দেখেছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ এই স্ট্রেনের কারণে গড়ে প্রতি তিনজনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হতে পারে।
বিজ্ঞানীরা কী বলছেন?
উহান ইউনিভার্সিটি এবং চিনা একাডেমি অফ সায়েন্সেসের ইনস্টিটিউট অফ বায়োফিজিক্সের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন যে ভাইরাসটি মানুষের কোষে অনুপ্রবেশ করতে সক্ষম হওয়ার জন্য শুধুমাত্র একটি মিউটেশনই যথেষ্ট। ভাইরোলজি এবং বায়োটেকনোলজির ভেক্টর রাশিয়ান স্টেট রিসার্চ সেন্টারের বিশেষজ্ঞরা প্রকাশনার প্রতিক্রিয়ায় NeoCov সম্পর্কে বলার পরে বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি জারি করেছেন।