Death during Pregnancy Or Childbirth: সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে প্রতি ২ মিনিটে মৃত্যু একজন প্রসূতির, আশঙ্কা ভারতকে নিয়েও

United Nations: ২০২০ সালে প্রতিদিন কমপক্ষে ৮০০ জন মহিলার মৃত্যু হয়েছে গর্ভাবস্থায় বা প্রসবকালীন অবস্থায়। অর্থাৎ প্রতি দু'মিনিটে একজন মহিলা মারা গিয়েছেন।

Death during Pregnancy Or Childbirth: সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে প্রতি ২ মিনিটে মৃত্যু একজন প্রসূতির, আশঙ্কা ভারতকে নিয়েও
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 24, 2023 | 5:17 PM

সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে কিংবা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বিশ্বজুড়ে প্রতি দু’মিনিটে একজন মহিলার মৃত্যু হয়। সম্প্রতি এই তথ্য প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। গর্ভাবস্থায় বা প্রসবকালীন জটিলতায় মহিলাদের মৃত্যু যে হারে বেড়ে চলেছে, তাতে মহিলাদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। গত ২০ বছরে এই মৃত্যুর হার এক তৃতীয়াংশ কমলেও, বর্তমান পরিস্থিতি উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে। এই চিত্র গোটা বিশ্বের। সেখানে ভারতের অবস্থাও সঙ্কটজনক। রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রকাশিত পরিসংখ্যান বলছে, ভারত সেই তিনটি দেশের তালিকায় রয়েছে যেখানে গর্ভাবস্থায় বা প্রসবকালীন জটিলতায় ১০,০০০ মহিলার মৃত্যু হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের যৌথ উদ্যেগে এই পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে। এখানে ২০০০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্তরে প্রসূতি মৃত্যুর হার গণনা করা হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী প্রায় ২,৮৭,০০০ জন মহিলার মৃত্যু হয়েছে। ২০১৬ সালে প্রসূতি মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩০৯,০০০। বর্তমানে সংখ্যাটা কম হলেও বিষয়টা উদ্বেগ তৈরি করছে বিশ্বজুড়ে। যদিও ২০২০ সালে প্রতিদিন কমপক্ষে ৮০০ জন মহিলার মৃত্যু হয়েছে গর্ভাবস্থায় বা প্রসবকালীন অবস্থায়। অর্থাৎ প্রতি দু’মিনিটে একজন মহিলা মারা গিয়েছেন। ২০০০ সালে প্রতি ১ লক্ষে ৩৩৯ জন মহিলার মৃত্যু হয়েছে। এই সংখ্যাটাই ২০২০ সালে কমে হয়েছে প্রতি ১ লক্ষে ২২৩ জন।

ভারতের অবস্থায় শোচনীয়। ২০২০ সালে ভারতে প্রসূতি মৃত্যুর সংখ্যা ২৪ হাজার। নাইজেরিয়ার পরই রয়েছে ভারতের স্থান। ওই বছর নাইজেরিয়ায় ৮২ হাজার মহিলা মারা গিয়েছেন সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে বা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়। ২০২০ সালে প্রসবকালীন জটিলতায় যে সব মহিলার মৃত্যু হয়েছে, তার ৭০ শতাংশ সাহারা সংলগ্ন আফ্রিকায়, যা অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের তুলনায় ১৩৬ গুণ বেশি। রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই প্রতিবেদন বলছে, ২০০০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ভারতে প্রসূতি মৃত্যুর ৭৩.৫ শতাংশ কমেছে।

ইউরোপ, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ানের বিভিন্ন অঞ্চলে সমীক্ষা চালানো হয়। সেখানে ২০১৬ থেকে ২০২০ পর্যন্ত প্রসূতি মৃত্যুর হার ১৭% ও ১৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড, এবং মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় ৩৫% ও ১৬% হারে প্রসূতি মৃত্যু কমেছে। এই সমগ্র পরিসংখ্যাটি বিশ্বের ৩১টি দেশ নিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে।

UNICEF-এর এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর ক্যাথেরিন রাসেল প্রসূতি মৃত্যুর প্রসঙ্গে বলেছেন, “লক্ষ-লক্ষ পরিবারের কাছে সন্তানের জন্মের আনন্দ পরিণত হয়েছে প্রসূতি মৃত্যুর মতো দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায়। সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য বিশ্বের কোনও মায়েরই ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই। বিশেষত, যখন চিকিৎসা বিজ্ঞান ও সরঞ্জাম উপলব্ধ। বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুন না কেন, প্রত্যেক জননী স্বাস্থ্য পরিষেবা পাবেন এবং নিরাপদভাবে সুস্থ সন্তানের জন্ম দেবেন।” বিশ্বের প্রত্যেক মহিলা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যাতে যথোপযুক্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা পান, তার উপরই জোর দিচ্ছেন হু-র প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস। তিনি মনে করেন, প্রজনন সংক্রান্ত যাবতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়া অধিকার প্রত্যেক মহিলার। এই কথায় আশ্বাস মিললেও রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিসংখ্যানকে হালকাভাবে নেওয়া যায় না।

মূলত গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, উচ্চ রক্তচাপ, গর্ভপাত সংক্রান্ত জটিলতা, এইচআইভি-এইডসের মতো সংক্রমণ প্রসূতি মৃত্যুর জন্য দায়ী। কিন্তু এই প্রত্যেকটি স্বাস্থ্য অবস্থাই চিকিৎসাযোগ্য। যদিও ২৭০ মিলিয়ন মহিলা কোনও রকম পরিকল্পনা ছাড়াই গর্ভবতী হন, যা তাঁদের মৃত্যুর মুখে ঢেলে দেয়। আর প্রান্তিক অঞ্চলে আয়, শিক্ষার মতো বিষয়গুলোও প্রসূতি মৃত্যুর জন্য দায়ী।