সোনার চেনে কাটল ভ্যাকসিনের ভয়

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের বাড়াবাড়িতে ভেজালের ভয় রয়েছে। তবে চিরাচরিত সনাতনী সূঁচ ফোটানোর ভয় কী করে কাটবে?

সোনার চেনে কাটল ভ্যাকসিনের ভয়
ভ্যাকসিনেশন। পাশে সোনার চেন।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 26, 2021 | 6:04 AM

প্রীতম দে: ভ-এ ভয়, ভ-এ ভ্যাকসিন। এখন আবার ভ-এ ভেজাল।

একেবারে শুরুর দিকে এক প্রকার ভয়েতেই অনেকে ভ্যাকসিন এড়িয়ে গিয়েছেন। তাঁদের কারও-কারও মনের ভাবটা ছিল এরকম: “এই বেশ ভাল আছি।” ভ্যাকসিন নিলে যদি আবার উল্টো কীর্তি হয়। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের বাড়াবাড়ি সেই ভয় কাটিয়ে দিয়েছে। এখন আবার ভেজাল ভয় রয়েছে। তবে চিরাচরিত সনাতনী সূঁচ ফোটানোর ভয় কী করে কাটবে? মনকে অন্য দিকে ব্যস্ত রাখতে হবে। তার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা খোশগল্প করেন কিংবা ছেলেভোলানো কথা বলেন। তবে ভেবেচিন্তে একটা অভিনব উপায় বের করলেন বরানগরের স্বর্ণশিল্পীদের সংগঠন। প্রথমে যাঁদের ভয় পায়, তাঁদের আলাদা করা হল। সূঁচ ফোটানোর সময় চোখের সামনে রাখা হল কয়েক কেজি সোনার চেন। উদ্যোক্তা এসএসআলম হেসে বললেন, “সোনার গয়না কে না পছন্দ করেন? আর এটা নিয়েই যেহেতু আমাদের কারবার, তা-ই খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। কিছু-কিছু ক্ষেত্রে কাজে দিয়েছে ভাল।”

ভ্যাকসিনেশন চলছে।

যেমন এই রিতু ঘোষ। ছোটবেলা থেকেই ইনজেকশনে যত ভয়। কান্নাকাটি জুড়ে দেন। বিয়ের আগে শেষ ইঞ্জেকশন নিয়েছিলেন। “আমি চেঁচামেচি,  কান্নাকাটি করি। তাই-ই মা-দিদিরা সঙ্গে থাকে ইনজেকশন নেওয়ার সময়। এখন স্বামী সঙ্গে আছে,” শুকনো মুখে বলেন দোহারা চেহারার রিতু। নিতে গিয়ে চোখে জল এল, কিন্তু আগে যতটা হত, ততটা হল না কারণ চোখ ছিল সোনায় মোড়া।

মৌসুমি বেরা। ভ্যাকসিনের লাইনে দাঁড়িয়ে ছটফট করছিলেন ভয়ে। “ইনজেকশন নিতে গেলে আমি গণেশ ঠাকুরের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে স্মরণ করি,” বলে মৌসুমি তাঁর গলার সোনার গণেশের লকেট দেখান। তার মানে সোনাতেও মন টানে। নিজে ইনজেকশন দিয়ে নিজেই অবাক। যন্ত্রনা লাঘব করেছে কিলো-কিলো সোনার চেন।

আমাদের মন সুঁচের ডগায় কেন্দ্রীভূত হয়ে যায়। সেখান থেকে মনকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব মনের মত কিছু পেলে। এই ধারণাকেই কাজে লাগিয়ে কেজিখানেক সোনার চেনের হার চোখের সামনে হাতের কাছে নিয়ে বসা হল। অমনি ভয় কে জয়। যিনি ইনজেকশন দিচ্ছেন, তিনি এক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী। মজা করে বললেন,”কাজ করছে ব্যাপারটা। তবে কি ওগুলো পুরো গিফট করে দিলেই ভয় চিরদিনের জন্য বিদায় নেবে মন থেকে?”