শিশুদের মন বুঝে খাওয়ানোর কী ঝক্কি, তা বাবা-মায়েরা হাড়ে হাড়ে টের পান। শুধু পেট ভরানোর জন্য নয়, পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোই মূল উদ্দেশ্য। বর্তমানে খুব কম বয়সেই শিশুরা অত্যন্ত বুদ্ধিমানের উদাহরণ দিয়ে দেয়। ফলে তাঁর বুদ্ধি ও মানসিক বিকাশের জন্য উপযুক্ত খাবার কোনগুলি, তা অধিকাংশ বাবা-মায়েরা বুঝে উঠতে পারেন না।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার মতে, নর্থফোক কাউন্টি কাউন্সিলের সহযোগিতায় ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট অ্যাংলিয়া (ইউইএ) হেলথ অ্যান্ড সোশ্যাল কেয়ার পার্টনার্স দ্বারা পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শিশুরা ফল ও শাকসবজির সঙ্গে ভাল খাবার খেতে ভালোবাস। আর তাতেই তাদের মানসিক বিকাশে উন্নতি ঘটে। মার্কিন দেশের স্কুলগুলিতে শিক্ষার্থীদের উপর একটি গবেষণায় দেখানো হয়েছে. কীভাবে বিশেষ করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অধিক ফল ও শাকসবজির খাওয়ার সঙ্গে সুস্থতার সম্পর্ক রয়েছে। যে সব শিশুরা দিনে পাঁচ বা তার বেশি সময় ফল ও শাকসবজি খায়, তাদের মানসিক সুস্থতার পরিচয় বেশি দিয়েছে।
একটি শিশু যে পরিবেশে বাস করে, কীভাবে তাকে ভালবাসা, যত্নে লালনদ-পালন করা হয়, সেইসব মিলিয়ে সংযোগ ও পরিবর্তনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্তনদুগ্ধ খাওয়ানোই শুধু গুরুত্বপূর্ণ নয়, কারণ মায়ের দুধ অবশ্যই শিশুর ক্ষেত্রে প্রথম খাবার, কিন্তু বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় মায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ শিশুকে নিরাপত্তা, বন্ধন, আনন্দদায়ক মুহূর্ত কাটাতে সাহায্য করে।
মস্তিষ্কের সুস্থ বিকাশের জন্য শিশুদের কী খাওয়া উচিত?
হাভার্ড রিপোর্ট অনুযায়ী, বয়স হিসেবে শিশুদের জন্য পুষ্টিকর, ভিটামিন সমৃদ্ধ ও খনিজগুলিকে গঠনমূলকভাবে ভাগ করে নেওয়া দরকার।
প্রোটিন- ছোলা, কুইনো, ডিম, দুধ , চিকেন, মুসুর ডাল, বাদাম, সয়াবিন, পনির, চিনাবাদাম, পিনাট বাটার ইত্যাদি খাবারে প্রোটিনের ভাগ বেশি থাকে। মূলত বেশিরভাগ বাদাম, বীজ, দুগ্ধ, হাঁস-মুরগি, মাংসে থাকে।
জিঙ্ক- মাংস, মাছ, দুগ্ধজাত খাবার, বাদামে রয়েছে জিঙ্কের পরিমাণ।
আয়রন- মাংস, মটরশুটি এবং মসুর ডাল, মাশরুম, রাজমা, ছোলা,ভাত, ছানা ভাজা, শুকনো এপ্রিকট, কাজু, পালং শাক, মেথি শাক এবং বেকড আলু আয়রনের সেরা উৎসগুলির মধ্যে অন্যতম।
কোলিন- মাংস, দুগ্ধ এবং ডিমগুলিতে প্রচুর কোলিন থাকে। তবে অনেক শাকসবজি এবং অন্যান্য খাবারেও কোলিন থাকে।
ফোলেট- গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এই উপাদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লিভার, পালং শাক, সিরিয়ালস, রুটিতে পাওয়া যায়।
আয়োডিন- সামুদ্রিক শৈবাল আয়োডিনের একটি বড় উৎস, কিন্তু আমরা এটি আয়োডিনযুক্ত লবণ, সামুদ্রিক খাবার, দুগ্ধজাত দ্রব্য এবং সমৃদ্ধ শস্য থেকেও পাই।
ভিটামিন এ- লিভারের পাশাপাশি গাজর, মিষ্টি আলু এবং পালং শাক এই ভিটামিন এ-য়ের ভাল উৎস।
ভিটামিন ডি- সকালের সূর্যের আলোয় রয়েছে ভিটামিন ডি। সকালের দিকে শরীরে এই ভিটামিন পেতে বাইরে ত্বকে রোদ লাগানো উচিত। এছাড়া, চর্বিযুক্ত মাছের মাংস যেমন আছে, তেমনি মাছের লিভারের তেল, এবং এর সাথে শক্তিশালী পণ্য, যেমন দুধ।
ভিটামিন বি ১২- প্রাকৃতিকভাবে মাংস, মাছ, ডিম এবং দুগ্ধজাত প্রাণীর পণ্যগুলিতে পাওয়া যায়।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড- খুব সহজেই ফ্যাটি মাছ এবং মাছের তেলের মধ্যে পাওয়া যায় কিন্তু কিছু অন্যান্য তেলে পাওয়া যায়, এবং অনেক খাবারেও সুরক্ষিত থাকে।
আরও পড়ুন: Foot Pain: পায়ের অসহ্য ব্যাথায় কাবু? এই ৫ সহজ ব্যায়ামেই মিলবে মুক্তির পথ