
কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট—এই তিনটে জিনিসই সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য জরুরি। রোজের খাদ্যতালিকায় এই তিন ধরনের খাবারই দরকার। দ্রুত ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও এই তিনটে খাবারের পরিমাণ সঠিক হওয়া জরুরি। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেকেই অতিরিক্ত পরিমাণে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেয়ে ফেলেন। সেক্ষেত্রে জেনে রাখা ভাল যে, অতিরিক্ত পরিমাণে প্রোটিন খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। পুষ্টিবিদদের মতে, শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী প্রোটিন খাওয়াই ভাল। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্কের প্রতি কেজি ওজনে ০.৮ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। যাঁরা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, জিম করেন তাঁদের প্রতি কেজি ওজনে ১.৩ গ্রাম থেকে ১.৬ গ্রাম প্রোটিন দরকার হয়। কিন্তু এর চেয়ে বেশি প্রোটিন সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
কীভাবে বুঝবেন শরীরে প্রোটিনের মাত্রা বেড়ে গিয়েছে?
১) যত বেশি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাবেন, শরীরে জলের চাহিদাও বাড়বে। প্রোটিনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জল পান করতে হয়। অতিরিক্ত তৃষ্ণার্ত বোধ করলে বুঝবেন বেশি পরিমাণে প্রোটিন খাওয়া হচ্ছে।
২) অতিরিক্ত পরিমাণে প্রোটিন খেলে রক্তে নাইট্রোজেনের মাত্রা বেড়ে যায়। কিডনি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে অতিরিক্ত নাইট্রোজেন বের করে দেয়। এতে কিডনির উপর চাপ পড়ে এবং শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দেয়। তাছাড়া এতে কিডনিরও ক্ষতি হয়।
৩) অন্যদিকে, শরীরে জলের অভাব দেখা দিলে মাথা ঘোরা, ক্লান্তি, মাথাব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। এই সমস্যা অতিরিক্ত প্রোটিন খাওয়ার ফলেও দেখা দেয়।
৪) অতিরিক্ত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করলে ওজন বেড়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে ডায়েট সঠিক না রাখলে ওজন কমানো মুশকিলের হতে পারে।
৫) প্রোটিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি যদি কার্বোহাইড্রেট গ্রহণের পরিমাণ কমে যায় তাহলে শরীরে কিটোসিসের সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে মুখ দিয়ে দুর্গন্ধ ছাড়ে। এক্ষেত্রে মাজন কিংবা মাউথ ফ্রেশনারে কাজ দেয় না।
৬) বেশি পরিমাণে প্রোটিন ও কম পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার অর্থ শরীরে ফাইবারের পরিমাণও কমে যায়। আর ফাইবার যত কম গ্রহণ করবেন, তত বেশি হজমের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অন্যান্য রোগ দেখা দেবে।
৭) প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার হিসেবে যদি রেড মিট বেশি খান তাহলে কোলেস্টেরল, হৃদরোগের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর যদি দুগ্ধজাত পণ্য খান সেক্ষেত্রে ডায়ারিয়া হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। উদ্ভিজ্জ প্রোটিনে খুব একটা সমস্যা দেখা দেয় না যদি আপনি খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাটের পরিমাণ বজায় রেখে চলেন।