
তৃষ্ণা মেটাতে বা খাবারের সঙ্গে অনেকেই কোল্ড ড্রিংক্স পান করে থাকেন। বিশেষ করে গরমকালে ঠান্ডা কোমল পানীয় যেন নিত্যসঙ্গী হয়ে ওঠে। কিন্তু এই অভ্যাস দীর্ঘদিন ধরে চললে শরীরে ধীরে ধীরে নানা ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে শুরু করে। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতিদিন কোল্ড ড্রিংক্স খাওয়া একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।
১. ওজন বৃদ্ধি ও স্থূলতা
কোল্ড ড্রিংক্সে চিনি থাকে প্রচুর পরিমাণে। একটি ছোট বোতলেই প্রায় ৫–৭ চামচ চিনি থাকে, যা অতিরিক্ত ক্যালোরি জোগায়। এই ক্যালোরি শরীরে জমে গিয়ে ওজন বাড়ায় ও স্থূলতার কারণ হয়।
২. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি
প্রতিদিন চিনি সমৃদ্ধ পানীয় খেলে শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। এর ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
৩. হাড় ক্ষয় ও ক্যালসিয়ামের ঘাটতি
কোল্ড ড্রিংক্সে থাকা ফসফরিক অ্যাসিড শরীর থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ কমিয়ে দেয়। এর ফলে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে, অস্টিওপরোসিস ও হাড় ভাঙার ঝুঁকি বাড়ে।
৪. দাঁতের ক্ষতি ও ক্যাভিটি
এই পানীয়তে থাকা অ্যাসিড ও চিনি দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে এবং ক্যাভিটির সৃষ্টি করে। শিশু ও কিশোরদের ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি ক্ষতিকর।
৫. লিভারের ক্ষতি
বেশি ফ্রুক্টোজ গ্রহণ লিভারে চর্বি জমার কারণ হতে পারে, যা ফ্যাটি লিভার ডিজিজ-এর ঝুঁকি বাড়ায়। রোজ কোল্ড ড্রিংক্স খাওয়ার ফলে লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে।
৬. ডিহাইড্রেশন ও জলশূন্যতা
অনেকে ভুল করেন কোল্ড ড্রিংক্সকে জল ভেবে। এতে শরীরে পানি না গিয়ে বরং ডিহাইড্রেশন হতে পারে। কারণ এতে ক্যাফেইন বা সোডা উপাদান থাকে, যা ডিউরেটিক হিসেবে কাজ করে।
৭. কিডনির ক্ষতি
নিয়মিত সোডা পান করলে কিডনিতে স্টোন বা অন্যান্য সমস্যার সম্ভাবনা বাড়ে, কারণ এতে ফসফরাস ও উচ্চ সোডিয়াম থাকে।
রোজ কোল্ড ড্রিংক্স খাওয়ার ফলে তাৎক্ষণিকভাবে ঠান্ডা লাগলেও, দীর্ঘমেয়াদে শরীরে নানাবিধ ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে শিশু, কিশোর ও ডায়াবেটিস রোগীদের একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত। বিকল্প হিসেবে লেবুর জল, ডাবের জল, ফলের রস বা হালকা হার্বাল পানীয় গ্রহণ করাই অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।