হরমোন আমাদের শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রাসায়নিক বার্তাবাহক হিসেবে কাজ করে এই হরমোন। বৃদ্ধি,প্রজনন থেকে শুরু করে বিপাক সবেতেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এই হরমোনের। আর হরমোনের ভারসাম্যহীনতা থেকে ক্যানসারও হতে পারে। মহিলাদের শরীরে দুটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন হল ইস্ট্রোজেন আর প্রোজেস্টেরন। মহিলাদের শরীরে যৌন হরমোন হল ইস্ট্রোজেন এবং অ্যান্ড্রোজেন। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন অনুসারে মেয়েদের শরীরে অ্যান্ড্রোজেন বেশি উৎপন্ন হলে সেখান থেকে একাধিক সমস্যা হতে পারে। অ্যালোপেসিয়া, ব্রণ, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম এবং বেশ কিছু প্রজনন-গত সমস্যার পিছনে দায়ী হল এই অ্যান্ড্রোজেন হরমোন। ডিম্বাশয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত অ্যান্ড্রোজেন উৎপন্ন হলে সেখান থেকে অতিরিক্ত পরিমাণ টেস্টোস্টেরন তৈরি হয়। এর ফলে মহিলাদের মধ্যে পুরুষের বৈশিষ্ট্য প্রকট হয়। মহিলা এবং পুরুষ উভয়ের শরীরেই এই অ্যান্ড্রোজেন তৈরি হয়। মহিলাদের শরীরে অ্যান্ড্রোজেনের ২০০টিরও বেশি কাজ রয়েছে।
মহিলাদের শরীরে যদি প্রয়োজনের অতিরিক্ত অ্যান্ড্রোজেন উৎপন্ন হয় তাহলে এই কয়েকটি লক্ষণ দেখা দেয়-
অনিয়মিত মাসিক বা পিরিয়ড টানা কয়েক মাসের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়া
শরীরে অতিরিক্ত চুল
মুখে বেশি চুল গজায়
পেশী মোটা হয়ে যায়
ওজন বাড়ে সেই সঙ্গে আকৃতিগত পরিবর্তনও আসে
ব্রণর সমস্যাও দেখা দেয়
আজকাল PCOS-এর সমস্যায় প্রচুর মেয়ে ভুগছে। মহিলাদের মধ্যে অ্যান্ড্রোজেনের আধিক্য PCOS-এর অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত পরিমাণে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খেলে সেখান থেকেও সমস্যা হতে পারে। এই হরমোন নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রথমেই যা করতে হবে তা হল চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়াও নিয়মিত ব্যায়াম, ডায়েট আর শরীরচর্চা করতেই হবে। সেই সঙ্গে চিকিৎসকেরা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িও খেতে দেন। প্রাথমিক ভাবে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে। আজকাল অধিকাংশ মেয়ের মধ্যেই এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাই এই পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম থাকলে বছরে দুবার প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা করিয়ে রাখবেন।