
শনিবার নিজের ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু। সামান্থার বাম হাতের রক্তনালিতে চ্যানেল করা, তার মধ্যে দিয়ে ওষুধ চলছে। ছবির সঙ্গে সামান্থা লেখেন তিনি মায়োসাইটিট নামে এক রোগে আক্রান্ত। মূলত এটি একটি অটোইমিউন রোগ। সেখানেই তিনি তাঁর অসুস্থতা বিষয়ে প্রথম মুখ খোলেন। সোফায় বসে সামান্থা। হাতে তাঁর চ্যানেল করা। এর আগে এরকমও গুজব শোনা গিয়েছিল যে, সামান্থা অসুস্থতার কারণে দেশের বাইরে চলে গিয়েছেন। তবে সামান্থা এদিন পরিষ্কার করে জানান তাঁর রোগের নাম, কোন বিরল রোগে আক্রান্ত তিনি। ভেবেছিলেন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে তবেই পুরো বিষয়টি জানাবেন। তবে সেই সুযোগ তাঁর হয়নি।
কী এই মায়োসাইটিস?
মায়োসাইটিস বিরল এবং বেদনাদায়ক। এই রোগে পেশী ক্লান্ত হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে পেশী দুর্বল হয়ে যায়। শরীরে অস্বাভাবিক ক্লান্তি ঘিরে বসে। এই রোগ শরীরের সব টিস্যুকেই ধীরে ধীরে আক্রমণ করে। এছাড়াও ত্বকে ফুসকুড়ির সমস্যা হয়। সব সময় মায়োসাইটিস যে ধরা পড়ে এমনও নয়। প্রাথমিক লক্ষণের মধ্যে থাকে পেশীতে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, খাবার গিলতে সমস্যা হওয়া, ক্লান্তি ইত্যাদি। অনেকেই তা এড়িয়ে যান। মায়োসাইটিস শিশু আর প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের ক্ষেত্রেই হতে পারে। তবে পুরুষদের তুলনায় মহিলারাই এই রোগে বেশি আক্রান্ত হন।
মায়োসাইটিসের লক্ষণ
পেশী দুর্বল হয়ে যাওয়া
পেশীতে তীব্র ব্যথা
ক্লান্তি
দৈনিক কাজকর্মে সমস্যা
খাবার গিলতে সমস্যা
বিষন্ন বোধ করা
সামান্থা তাঁর পোস্টে লেখেন, ‘যশোধা ট্রেলারে আমাকে ভালবাসা উগরে দেওয়ার জন্য। আপনাদের সকলকেই আমি জানাচ্ছি যে জীবন আমাকে একখানা আস্ত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। কয়েক মাস আগে আমার মায়োসাইটিস নামে একটি অটোইমিউন রোগ ধরা পড়ে। ভেবেছিলাম সব সেরে যাবে। তবে আপাতত আমার সুস্থ হতে সময় লাগবে। শরীর এখন প্রচণ্ড দুর্বল। তবে আমার বিশ্বাস আমি ধীরে ধীরে সেরে উঠব। আমি রোজ লড়াই করছি। চিকিৎসকেরাও আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন। খুব তাড়াতাড়ি আমি সুস্থ হয়ে উঠতে পারব। এক একটা মুহূর্তে আমি আর নিজেকে সামলে রাখতে পারি না। কিন্তু আমাকে পারতেই হবে। তবে এই অবস্থা কিছুতেই দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না। আমি ক্রমশ সুস্থ হচ্ছি। ভালবাসা আমার সব বাধা বিপত্তি দূর করে দেবে’।
আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে বলা হয় ইমিউনিটি। শরীরে বাইরে থেকে কোনও জীবাণু প্রবেশ করলে তখনই শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়। এর ফলে শরীর তার নিজের অঙ্গকেই অন্য কোনও রোগ হিসেবে ভেবে বসে। বাইরের কোনও জীবাণুর প্রভাবে নয়, শরীর নিজেই নিজের ক্ষতি করতে থাকে। চিকিৎসা পরিভাষায় এই মায়োসাইটিসের অর্থ হল পেশীর প্রদাহ। বিরল এই রোগে পেশী দুর্বল হয়ে যায়। আর তাই সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা শুরু করাও ভীষণ রকম জরুরি।