
ডেঙ্গি হোক বা ম্যালেরিয়া, কিংবা জিকা বা হলুদ জ্বর মশা থেকে অজস্র রোগ শুধু ছড়ায় না, বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী প্রাণী এই পতঙ্গ। আসছে শীত, মশাদের এবার পৌষমাস! মশাকে বলা হয় মানবসভ্যতার সবচেয়ে বড় শত্রু। বর্ষায় পরিবার বাড়িয়ে মশাদের এখন পোয়া বারো! এ বার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ঝোড়ো ব্যাটিং এর পালা। জানেন মশারা কোন কোন ব্যক্তিকে টার্গেট করে? এই নিয়ে গবেষণায় যে ফল বেরিয়েছে, তা শুনলে যে কেউ চমকে যাবেন।
গবেষণা বলছে, কয়েকটা জিনিস মেনে চললেই আপনার পিছনে যেভাবে মশা ঘুরঘুর করে, তা এড়ানো যাবে। আর মশার জ্বালায় অতিষ্ট হতে হবে না। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কিছু লোককে মশা সত্যিই বেশি ভালবাসে।
কাদের ‘পছন্দ’ মশার?
ঘামের গন্ধে ঘুরঘুর করে মশার দল!
যাঁদের ঘাম থেকে ল্যাকটিক অ্যাসিড, ইউরিক অ্যাসিড, অ্যামোনিয়া বেশি বেরোয়।
মশার ‘খাদ্য’ AB এবং O গ্রুপের রক্তের মানুষ
যাঁদের রক্তের গ্রুপ O এবং AB, অন্যদের তুলনায় তাঁদের মশা বেশি কামড়ায়।
চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলেন, ‘কোন মানুষের ল্যাকটিক অ্যাসিড বেশি, কোন মানুষের কম, সেগুলো খুঁজে বের করা খুব ব্যয়সাপেক্ষ ও সহজ নয়। তাই মশার বংশবিস্তার আটকানোর কিছু ব্যবস্থা আছে, সেগুলোর দায় সরকার, পুরসভা ও সাধারণ মানুষ সকলেরই।’
একজনের চামড়ায় বা ত্বকে কতটা পরিমাণ ব্যক্টেরিয়া রয়েছে, তার উপর নির্ভর করে মশার কামড়। যেখানে ব্যক্টেরিয়া বেশি, সেখানে মশার আকর্ষণও বেশি। তাই ব্যক্টেরিয়া বেশি থাকার জন্য পা ও গোড়ালিতে বেশি কামড় দেয় মশারা। সেইসঙ্গে বিজ্ঞান বলছে মশার কামড় বেশি খাওয়ার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে জিনও। মশার কার্বন ডাই অক্সাইড বোঝার ক্ষমতা মারাত্মক। ১০০ ফুট দূর থেকেও মশা CO2 টের পায়।
কলকাতা পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস বলছেন, ‘লম্বা ও মোটা মানুষের বিপদ বেশি। একটি সাধারণ মানুষের থেকে লম্বা ও মোটা মানুষদের শরীর থেকে বেশি মাত্রায় কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয়। আর বেশি পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হওয়ার অর্থ মশাকে বেশি করে আকৃষ্ট করা।’
মদ খাওয়ার পর ঘাম থেকে বেরোয় ইথানলের গন্ধ। আর সেই ইথানলের গন্থ টেনে আনে মশাদের। কলকাতা পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস আরও বলেন, ‘বেশি মদ খেলেই বেশি ঘাম হয়, আর ঘাম হওয়ার অর্থই তাতে বেশি ল্যাকটিক অ্যাসিড থাকে। এই ল্যাকটিক অ্যাসিড ডেঙ্গির মশায় এডিসকে আকৃষ্ট করে।’