বেড়েই চলেছে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। দ্বিতীয়বার টিকা নেওয়ার পরও যেমন একাধিক মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন তেমনই কিন্তু যিনি ডেল্টায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনিও ফের আক্রান্ত হচ্ছেন ওমিক্রনে, এমন নজিরও রয়েছে। কোভিডের এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার তুলনায় কয়েক গুণ দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে একদিনের মধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যাটা দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। যে ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তাতে প্রমাদ গুণছেন চিকিৎসকেরা। আর তাই কোভিড টিকার বুস্টার ডোজের জন্য সওয়াল করেছেন সব বিশেষজ্ঞরাই। ইতিমধ্যে পশ্চিমের দেশগুলিতে বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে। শীঘ্রই বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হবে এদেশেও।
মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে গবেষক লুই ম্যানস্কি যেমন বলেছেন, কোভিড ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতেই বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়েছে এই সব ভ্যাকসিন। শরীরে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা আরও বেশি জোরদার করার জন্য দেওয়া হচ্ছে বুস্টার ডোজও।
যাঁরা ফাইজার কিংবা মর্ডানার ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাঁদের মধ্যে এখনও প৪যন্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন পরীক্ষাতেই উঠে এসেছে এই তথ্য। এমনকী ওমিক্রন প্রতিরোধেও খুব ভাল কাজ করছে এই ভ্যাকসিনগুলি। এছাড়াও এখনও পর্যন্ত ভাইরাস প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিনও। এছাড়াও যাঁরা ফাইজার কিংবা মর্ডানার বুস্টার ডোজ নিয়েছেন তাঁদের ক্ষেত্রেও শরীরে পুনরায় তৈরি হয়েছে কোভিডের অ্যান্টিবডি।
টিকা নেওয়ার পরও অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের ক্ষেত্রে ভাইরাল লোড বেশি। আর ভাইরাল লোড বেশি হলেই কিন্তু সংক্রমণ তুলনায় কম হয়। তবে যাঁরা টিকা নেননি তাঁদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি কিন্তু জটিল হচ্ছে। তাঁরা অনেক বেশি সমস্যায় ভুগছেন। বুস্টার ডোজ নেওয়ার পর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ছে। তৈরি হচ্ছে অ্যান্টিবডি। ফলে যাঁদের বুস্টার-সহ দুটো ডোজ নেওয়া তাঁরা কিন্তু চট করে আক্রান্ত হচ্ছে না । কারণ রোগ প্রতিরোধী অ্যান্টিবডির ভেতর দিয়ে ভাইরাসের আক্রমণ করাটা অত সহজ নয়।
তবে টিকা নেওয়ার পরও আপনি আক্রান্ত হবেন তখনই যখন আপনি নিজে যাবতীয় কোভিড বিধি মেনে চলবেন না। টিকা নিয়েছেন বলেই কিন্তু অনেকে মাস্ক এড়িয়ে গিয়েছেন। বার বার ভিড় জায়গায় গিয়েছেন, সামাজিক দূরত্ব বিধিও মানেই। বড়দিন আর নিউ ইয়ারের মরশুমে প্রচুর মানুষ বাইরে বেড়াতে গিয়েছেন। সেখানে মাস্ক ছাড়াই নিজের মত করে ঘুরেছেন। অনেকের সঙ্গে আড্ডা দিয়েছেন মাস্কদীন ভাবে। কোভিড টিকা নেওয়ার পরও যদি এই সাধারণ বিধি নিষেধ না মেনে চলতে পারেন তাহলে কিন্তু সংক্রমণ ঠেকানো মুশকিলের। ওমিক্রনের রোগ লক্ষণের সঙ্গে সাধারণ ফ্লুয়ের মুল থাকায় অনেকেই বুঝতে পারছেন না যে তিনি আদৌ আক্রান্ত কিনা। আর এই উপসর্গহীন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলেই কিন্তু পরিস্থি আরও জটিল হচ্ছে। যে কারণে ওমিক্রণকে হালকা ভাবে না নেওয়ার পরামর্শ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার।
আরও পড়ুন: Covid-19: ওমিক্রন সাধারণ ফ্লু নয়, একে হালকা ভাবে নেবেন না, পরামর্শ WHO-এর