শেষ একমাস ধরে হু হু করে বাড়ছে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। একদিনেই আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। তবে এবার কোভিডের উপসর্গ আর সাধারণ ফ্লু এর উপসর্গের মধ্যে মিল থাকার অনেকেই বুঝতে পারছেন না যে তিনি আদৌ কোভিড আক্রান্ত কিনা। সর্দি, কাশি, হাঁচির সমস্যা তো এখন ঘরে ঘরে। এছাড়াও শীতে বাড়ে ঠান্ডা লাগার সমস্যা। আর এখানেই বিপত্তি।
এবারের কোভিড আক্রান্তেরা বাড়িতে থেকেই সেরে উঠছেন। তিন দিনের বেশি জ্বরও থাকছে না। ফলে অনেকেই পরীক্ষা করাচ্ছেন না। যে কারণে বাড়ছে উপসর্গহীন আক্রান্তের সংখ্যা। আর সেখান থেকে বাড়ছে কোভিডের গ্রাফও। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ, জ্বর না আসলেও যদি সর্দি বা হাঁচি-কাশির সমস্যা থাকে তাহলেও কিন্তু কোভিড পরীক্ষা করে নেওয়া বাঞ্ছনীয়। এতে যেমন আপনি নিরাপদে থাকবেন তেমনই আপনার আশপাশে যাঁরা আছেন তাঁরাও সুরক্ষিত থাকবেন।
ডেল্টা কিংবা প্রথমবারের তুলনায় এবারের কোভিডের উপসর্গ তুলনায় মৃদু। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কথা তেমন কেউ বলেননি। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছে এরকমটাও শোনা যায়নি। বেশিরভাগই বাড়িতে থেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে এরকম অভিযোগও তেমন আসেনি। কোভিড আক্রান্ত হয়ে যাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাঁদের শারীরিক কোনও অসুবিধে রয়েছে। নইলে তাঁদের কোভিড টিকা নেওয়া নেই। তবে এবার কোভিডকে অনেকেই তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। সর্দি-কাশির সমস্যা নিয়েই বাইরে ঘোরাফেরা করছেন। সামাজিক দূরত্ববিধি মানছেন না। মুখে মাস্কও নেই। ফলে সংক্রমণও অনেক বেশি হচ্ছে।
আমেরিকার ZOE কোভিড অ্যাপের প্রধান প্রফেসর টিম স্পেক্টরের মতে, ‘যাঁদের হালকা ঠান্ডা লাগা, সর্দির সমস্যা থাকছে তাঁদের কিন্তু অবিলম্বে কোভিডের পরীক্ষা করানো উচিত। ওমিক্রনের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হয়েছিল ইংল্যান্ডে। ঠান্ডার কারণে দ্রুতই সেখানে প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হচ্ছিলেন। তবে আক্রান্তের সংখ্যা যে বাড়ছে তা কিন্তু ধরা পড়েছে কোভিডের পরীক্ষাতেই। কোভিডের সংক্রমণ রুখতেই পরীক্ষা জরুরি’। সম্প্রতি দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।
কোভিড আক্রান্ত কিনা তা জানতে পরীক্ষা ছাড়া কিন্তু কোনও গতি নেই। উপসর্গহীন এবং আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা করতে এই পরীক্ষা খুবই জরুরি। সেই সঙ্গে আক্রান্ত ব্যক্তির দ্রুত চিকিৎসা করা যায়। শারীরিক জটিলতার সুযোগ থাকে না। আর পরীক্ষা করালে চিকিৎসকরাও বুঝতে পারেন এই ভাইরাসের রোগ-উপসর্গ সম্বন্ধে। সর্বপরি সংক্রমণ রুখতেই কিন্তু কোভিড পরীক্ষা করানো ভীষণ জরুরি।
কোভিড হয়েছে কিনা জানতে দুটো পরীক্ষা হয়। অ্যান্টিজেন টেস্ট ও আরটি-পিসিআর। নাক এবং গলার থেকে সোয়াব নিয়ে এই পরীক্ষা করা হয়। এখন কোভিড পরীক্ষার হোম কিটও এসে গিয়েছে। তবে rapid antigen test-এর পরিবর্তে RT-PCR পরীক্ষা করে নিতে পারলেই কিন্তু ভাল। Rapid antigen পরীক্ষায় অনেক সময়ই ভুল ফলাফল আসে। আর অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করলে কিন্তু তাতে অ্যাক্টিভ করোনা ইনফেকশন ধরা পড়ে না। ১৪ দিনের আইসোলেশনের পরও যদি সংক্রমণ না কমে তখনই এই পরীক্ষা করা হয়।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: Covid-19: হতাশা, উদ্বেগ বা বিষণ্ণতায় ভুগছেন? হতে পারে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি!