
হাঁপানি (Asthma) দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসযন্ত্রজনিত রোগ। এই রোগের সবচেয়ে বড় জ্বালা হল কখন যে সেটি ফিরে আসবে তা বলা মুশকিল। একবার হাঁপানির টান উঠলে শ্বাসনালী অতিসংবেদনশীল হয়ে পড়ে। বিভিন্ন উদ্দীপকের প্রতিক্রিয়ায় তা সংকুচিত হয়ে যায়। আর বর্ষাকালে এই সমস্যাটি যেন বেশি প্রকট হয়ে ওঠে। এর পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ। কেন এমনটা হয়?
১। আর্দ্রতা ও ঠান্ডা বাতাস হাঁপানির অন্যতম প্রধান কারণ। বর্ষার সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ অত্যধিক বেড়ে যায়, যা শ্বাসনালীর প্রদাহ ও সংকোচন বাড়িয়ে দেয়। এতে রোগীর শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, বুকে চাপ অনুভব করেন এবং কাশির পরিমাণ বেড়ে যায়।
২। বর্ষার সময় আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তন হাঁপানির জন্য মারাত্মক হতে পারে। কখনও গরম, কখনও ঠান্ডা — এই ধরণের ওঠানামা শ্বাসযন্ত্রে চাপ ফেলে এবং হাঁপানির ঝুঁকি বাড়ায়। তার উপর যতই বৃষ্টি পড়ুক কমছে না ঘাম। তাই সবে মিলিয়ে আবহাওয়ার পরিবর্ত সঙ্গে ঘাম এই নিয়ে ঠান্ডা লাগলেই হয়েছে। শুরু হয় হাঁপানি। বিশেষ করে কেউ যদি সিওপিডির রোগী হন তাহলে আরও বেশি করে সাবধান হওয়া উচিত।
৩। এই মরসুমে ঘরে ও বাইরে ছত্রাক ও ফাঙ্গাস বেড়ে যায়। ভেজা কাপড়, ভিজে দেওয়াল, পচা কাঠ বা জমে থাকা জলে ছত্রাক জন্মায়। তা বাতাসেও ছড়িয়ে পড়ে। হাঁপানির রোগীরা এই ছত্রাকের স্পোর (Spores)-এর সংস্পর্শে এলেই এলার্জি বা হাঁপানির অ্যাটাক হতে পারে।
৪। বর্ষাকালে ঘরবাড়ি বন্ধ রাখা হয় বলে ঘরের ভেতরে ধূলিকণা, পোষা প্রাণীর লোম ও কেমিক্যাল জমে যায়। ইনডোর অ্যালার্জেন হাঁপানির রোগীদের জন্য বড় বিপদ হয়ে দাঁড়ায়।
৫। বর্ষায় ভাইরাল সংক্রমণও বেড়ে যায়। সাধারণ ঠান্ডা, সর্দি, জ্বরের মতো সংক্রমণ হাঁপানির লক্ষণকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
কী করবেন?
ঘর শুকনো ও পরিষ্কার রাখুন, ছত্রাক এড়িয়ে চলুন। ভেজা জামাকাপড় বা বিছানার চাদর ব্যবহার করবেন না।
ডাক্তার পরামর্শ অনুযায়ী ইনহেলার বা ওষুধ নিয়মিত নিন। ঠান্ডা বা ধুলো এড়িয়ে চলুন। শরীর ভেজা অবস্থায় বেশিক্ষণ থাকবেন না।