গণেশ চতুর্থীর (Ganesh Chaturthi 2022) অপর নাম বিনায়ক চতুর্থী। হিন্দু ধর্মের (Hindu Festival) বিশ্বাস অনুসারে এই পবিত্র তিথিতেই প্রভু গণেশ (Lord Ganesh) পৃথিবীতে পদাপর্ণ করেছিলেন। সেই উপলক্ষ্যে এই তিথি উদ্যাপন করা হয়। এই পবিত্র তিথিতে সারা দেশের ভক্তেরা প্রার্থনা করেন এবং আয়োজন করেন উৎসবের (Ganesh Festival)। ভগবান গণেশ সমৃদ্ধি, উন্নতি এবং নতুন করে শুরু করার দেবতা। সুতরাং আপনিও যদি জীবনে সুখ লাভের আশায় প্রভু গণেশের পুজো দিতে চান তাহলে অবশ্যই কতকগুলি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। একইসঙ্গে, প্রতিটি আলাদা রাশির ব্যক্তির জন্য রয়েছে ভিন্ন নিয়ম। রাশি অনুসারে তাই গণেশপুজো করলে প্রসন্ন হবেন দেবতা। মিলবে কাঙ্ক্ষিত ফল।
গণেশ মূর্তি
পুজোর জন্য আমরা সকলেই গণেশের মূর্তি কিনি। তবে মূর্তি কেনার সময় কোনও তাড়াহুড়ো করবেন না। বেশ কিছু বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখবেন—
ভঙ্গি: দেওয়ালে প্রভু গণেশকে রাখলে অবশ্যই বসা অবস্থায় থাকা মূর্তি কিনুন। এই আসনকে বলে ললিতাসন। এই ভঙ্গিতে প্রভুর থাকার অর্থ হল তিনি শান্ত অবস্থায় উপবিষ্ট রয়েছেন। ফলে গৃহে শান্তি বজায় থাকবে।
হেলান দেওয়া: প্রভুর এই অবস্থায় থাকার অর্থ হল, আরাম এবং সম্পদবৃদ্ধি হওয়া।
মূর্তির রং
শুভ্র
যাঁরা জীবনে শান্তি ও উন্নতির খোঁজ করছেন তাঁরা অতিঅবশ্যই গণেশ ঠাকুরের শুভ্র মূর্তি ঘরে আনুন। এমনকী গণেশ ঠাকুরের শুভ্র ফোটোও একইরকমভাবে শুভ।
লাল
নিজের উন্নতি চাইলে অবশ্যই ঘরে আনুন লাল গণেশ মূর্তি।
শুঁড়
আসনে উপবিষ্ট অবস্থায় প্রভু গণেশের শুঁড় যেন বামদিকে বেঁকে থাকে। এই ভঙ্গি উন্নতি ও আনন্দকে চিহ্নিত করে।
• গণেশ মূর্তির শুঁড় ডান দিকে বেঁকে থাকলে তা সূর্যের মতো ক্ষমতাকে নির্দেশ করে। ফলে এমন রুদ্র মূর্তির পুজো করে গণেশজিকে প্রসন্ন করা একটু কঠিন। এছাড়া পুজার নিয়মও যথেষ্ট কড়া।
মনে রাখার বিষয়—
যে মূর্তির সঙ্গে বাহন ইঁদুর এবং মোদক থাকবে না সেই মূর্তি নেবেন না। ইঁদুর গতিময়তা ও ধৈর্যের প্রতীক। আর মোদক প্রভু গণেশের প্রিয় মিষ্টি।
মূর্তি স্থাপনের দিক
পশ্চিম, উত্তর এবং উত্তরপূর্ব দিক হল প্রভু গণেশের মূর্তি স্থাপনের আদর্শ দিক। খেয়াল রাখবেন প্রভু গণেশের মুখ যেন এই দিকগুলির দিকে হয়।
• উত্তরমুখী মূর্তি সবচাইতে পবিত্র। কারণ ওই দিকে বাস করেন মহাদেব। ফলে গৃহে শান্তি ও সমৃদ্ধির প্রবেশ ঘটে।
• এছাড়া খেয়াল রাখুন প্রভু গণেশের মূর্তির পিছনদিক বা ফটোর পিছন দিক যেন গৃহে প্রবেশের প্রধান দরজার দিকে থাকে।
প্রতিটি রাশির জন্য মন্ত্র—
প্রভু গণেশের স্তুতির মন্ত্র পাঠে ইতিবাচক শক্তির অন্তঃপ্রবাহ সৃষ্টি হয়। ফলে জীবনে আসে সুখ ও সমৃদ্ধি
মেষ রাশি: ওম বিঘ্নেশ্বরায় নমঃ।
বৃষ: ওম শিবপুত্রায় নমঃ।
মিথুন: ওম লম্বোদরায় নমঃ।
কর্কট: ওম গৌরীপুত্রায় নমঃ।
সিংহ: ওম ভক্তবাসায় নমঃ।
কন্যা: ওম লম্বোদরায় নমঃ
তুলা: ওম সর্বকল্যাণহেত্বে নমঃ।
বৃশ্চিক: ওম একদন্তায় নমঃ।
ধনু: ওম উমা সুতায় নমঃ।
মকর: ওম বিঘ্ন হরায় নমঃ।
কুম্ভ: ওম দুখহর্তা নমঃ।
মীন: ওম পার্বতীপুত্রায় নমঃ।
প্রতিটি রাশির ভক্তের উচিত এই মন্ত্র অন্ততপক্ষে ১০৮ বার জপ করা।
রাশি অনুসারে কী নিবেদন করবেন?
১০৮টি দুর্বা অবশ্যই নিবেদন করুন প্রভু গণেশকে। একইসঙ্গে প্রতিটি ভিন্ন রাশির চাইলে গণেশ ঠাকুরকে নিবেদন করতে পারেন—
মেষ – ডালিম কিংবা শুকনো খেজুর এবং লাল গোলাপ।
বৃষ – মুগডালের লাড্ডু এবং সবুজ এলাচ।
কর্কট – চালের পুডিং এবং সাদা গোলাপ।
সিংহ – শুকনো খেজুর, কলকে ফুল।
কন্যা – মুগ ডালের লাড্ডু এবং কিশমিশ।
তুলা – কলা, সাদা ফুল এবং সুগন্ধি।
বৃশ্চিক – ডালিমের তৈরি লাড্ডু অথবা শুকনো খেজুর এবং লাল গোলাপ।
ধনু – হলুদ রঙের মিষ্টি এবং কলা।
মকর – তিলের লাড্ডু।
কুম্ভ – খোয়া এবং সিঁদুরের সঙ্গে জুঁই ফুলের তেল।
মীন – বেসনের লাড্ডু এবং আমন্ড।