
পরিষ্কার এবং পরিচ্ছন্ন পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এবার আরও বড় পদক্ষেপ রেলের। রেলকর্মীদের নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম, ব্যাটারি চালিত ভ্যাকুম ক্লিনার, ব্যাকপ্যাকের মতো হাই প্রেসার জেট ক্লিনিং মেশিন, ১০ মিনিটের ডেডলাইনের মতো একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে। যাতে পরিষেবা আরও মসৃণ হয় এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকে তাই ক্লিন ট্রেন স্টেশন (CTS) প্রকল্পের উপর ফের জোর দিচ্ছে সরকার।
২০০২ সালে ট্রেন পরিষেবায় পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রেলমন্ত্রক প্রথম লঞ্চ করে এই CTS প্রকল্প। বিশেষ করে ট্রেনের কোচ এবং বাথরুম নোংরা হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ আসছিল। তাই সেই সমস্যা সমাধানে নেওয়া হয় ক্লিন ট্রেন স্টেশন উদ্যোগ।
এই প্রকল্পের অধীনে প্রধান প্রধান রুটে কিছু বিশেষ স্টেশনকে চিহ্নিত করতে হবে। এবার সেই স্টেশনগুলিতে ট্রেন থামার সময় যান্ত্রিকভাবে তা পরিষ্কার করা হবে।
জানা যাচ্ছে, প্রথম পর্যায়ে ৬৮৩টি ট্রেনের জন্য ২০টি স্থানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেনের টয়লেট পরিষ্কার থেকে বেসিন পরিষ্কার করা হবে। ডাস্টবিন এবং অনান্য আবর্জনা পরিষ্কার করার জন্য থাকবে আলাদা লোক। থাকবে বাথরুম এবং অনান্য অংশ পরিষ্কার এবং শুকনো করে মোছার জন্য বিশেষ লোক।
সাফাই-কর্মীদের কাজের সুবিধার জন্য দেওয়া হবে ব্যাকপ্যাকের মতো ব্যাগ, ব্যাটারি চালিত স্বয়ংক্রিয় হাই প্রেসার জেট ক্লিনিং মেশিন। ওই মেশিনের মধ্যে থাকবে ১০-১৫ লিটারের একটি জলের ট্যাঙ্ক। দেওয়া হবে ব্যাটারি অপারেটেড ভ্যাকুম ক্লিনার। আরও উন্নত প্রযুক্তির সাফাইয়ের সরঞ্জাম।
১২ জুন, ২০২৫ তারিখের মন্ত্রণালয়ের চিঠি অনুসারে, সাফাইকর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য উন্নত সরঞ্জামের সঙ্গে দিতে হবে নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম। থাকতে হবে অ্যাপ্রন, উপযুক্ত ট্রাউজার।
ওই নির্দেশে এও জানানো হয়েছে যে এই সমগ্র পরিষ্কার করার কাজটি মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। যাতে যাত্রীদের ওঠা নামায় বা স্টেশনে চলাফেরা করতে কোনও অসুবিধা না হয়। ওই সময়ে ট্রেনের ট্যাঙ্কে জল ভরে দিতে হবে।
উত্তর রেলওয়ে কর্তৃক পরিচালিত একটি পাইলট গবেষণার পরে সিটিএস পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মোট ৮ জোনকে বেছে নেওয়া হয়েছে। পূর্ব মধ্য রেলওয়ে, উত্তরপূর্ব ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ে, উত্তর রেলওয়ে, দক্ষিণ পূর্ব মধ্য রেলওয়ে, দক্ষিণ মধ্য রেলওয়ে, দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে, দক্ষিণ রেলওয়ে এবং পশ্চিম মধ্য রেলওয়ে।
এই প্রকল্পের অধীনে এই মুহূর্তে ২০টি স্টেশন বেছে নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে বিহাররে পাটনা, পাটলিপুত্র। অসমের বদরপুর এবং লামডিং, উত্তরপ্রদেশের বারাণসী, পঞ্জাবের ভাটিন্ডা, পুরনো দিল্লি রেল স্টেশন, মধ্যপ্রদেশের চিন্ডওয়ারা জংশন, হায়দরাবাদের কাচেগুড়া, ঝড়খন্ডের রাঁচি ইত্যাদি।
উদাহরণসরূপ ধরুন নিউ দিল্লি পুরবত্তর সম্পর্ক ক্রান্তি এক্সপ্রেস পরিষ্কার করা হবে পাল্টিপুরা জংশনে। কামাখ্যা এক্সপ্রেস পরিষ্কার করা হবে পাটনা স্টেশনে। এই ট্রেন দুটি শিলচর থেকে নিউ দিল্লি স্টেশনে যাত্রা করে।
শিয়ালদহ কাঞ্চজঙ্ঘা এক্সপ্রেস পরিষ্কার করা হবে লামডিংয়ে। কোয়েম্বাটুর এক্সপ্রেস পরিষ্কার করা হবে বদরপুর জংশনে।