হায়দরাবাদ: ১৬ বছরের জন্মদিন ছিল ছেলেটির। জন্মদিন পালন করা নিয়ে উৎসাহে টগবগ করে ফুটছিল সে। বাড়ির লোকজনও তার জন্মদিন পালন করার জন্য বিরাট আয়োজন করেছিল। উদযাপন করতে তাদের বাড়িতে জড়ো হয়েছিলেন ছেলেটির কিন্তু, আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে জন্মদিনের দিনই মৃত্যু হল ছেলেটির। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার (১৯ মে), তেলঙ্গানার আসিফাবাদ জেলায়। ছেলেটির মৃত্যুর পর, তার বাবা-মা গোটা গ্রামের লোকজনকে ডেকে ছেলেটির দেহের সামনেই তার জন্মদিনের কেক কেটে তার জন্মদিন উদযাপন করেন।
জানা গিয়েছে, নিহত ছেলেটির নাম সিএইচ সচিন। আসিফাবাদের মানচেরিয়াল এলাকার বাবাপুর গ্রামে তার বাড়ি। ১৯ মে তার ১৬ বছরের জন্মদিন ছিল। এই উপলক্ষ্যে বিশাল আয়োজন করেছিলেন তার বাড়ির লোকজন। কেক তো কেনা হয়েছিলই, সেই সঙ্গে সচিনের বিভিন্ন ছবির ফ্লেক্স ছাপিয়ে, সেগুলি দিয়ে সাজানো হয়েছিল গোটা বাড়িটি। জন্মদিনের একদিন আগে, ১৮ মে সে বাড়ির লোকজনের সঙ্গে তার জন্মদিনের কেনাকাটা করতে আসিফাবাদ শহরে গিয়েছিল। কেনাকাটা চলাকালীনই আচমকা সে জানায় তার বুকে ব্যথা করছে। তারপরই সে সংজ্ঞা হারিয়েছিল। তাকে দ্রুত নিকটবর্তী এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। অবস্থার অবনতি হলে, সচিনকে নিয়ে যাওয়া হয় মানচেরিয়াল সরকারি হাসপাতালে। সেখানেই পরদিন তার মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর পর সচিনের দেহ তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। শোকাহত পরিবারের লোকজন গোটা গ্রামের লোককে ডেকে সচিনের জন্মদিন পালন করেন। ১৯ মে মধ্যরাতে মৃত সচিনের হাত ধরে কেক কাটেন তার বাবা গুণবন্ত রাও এবং মা ললিতা। প্রতিবেশি শিশুরা ‘হ্যাপি বার্থডে’ গান করে। এদিকে, গ্রামবাসীরা সচিনের স্মরণে মোমবাতি জ্বালিয়েছিলেন। এরপর বাদাপুর গ্রামের শ্মশানে সচিনের শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। গোটা গ্রামের মানুষ সেখনে উপস্থিত ছিলেন। সচিনের দুই দাদা আছে বলে জানা গিয়েছে। তাঁরাই শোকাহত গুণবন্ত এবং ললিতাকে সামলাচ্ছেন।
গত কয়েক বছরে ভারতে অল্পবয়সীদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ক্রমে বাড়ছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে মধ্ঠযপ্রদেশের ইন্দোরে স্কুলের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ১৬ বছরের এক ছাত্রীর। বৃন্দা ত্রিপাঠী নামে একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী আচমকা সংজ্ঞা হারিয়েছিল। প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানের মহড়া দিতে স্কুলে গিয়েছিল সে। মহড়া চলাকালীনই সে আচমকা লুটিয়ে পড়েছিল। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চিকিৎসকরা চেষ্টা করেও তাকে রক্ষা করতে পারেননি।