কিন্নর: উদ্ধারকারী দলের আশঙ্কাই ক্রমশ সত্যি হচ্ছে। উদ্ধারকার্য যত এগোচ্ছে, ততই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। হিমাচল প্রদেশের কিন্নরে ধসের জেরে যে পর্যটক বোঝাই বাস ও গাড়িগুলি আটকে পড়েছিল, সেখান থেকে এ দিন সকালে ফের দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হল। এই নিয়ে ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৫-এ।
বুধবার দুপুরে ১২টা ৪৫ মিনিট নাগাদ হিমাচল প্রদেশের কিন্নর জেলার নেইগাল সারিতে ধস নামে। ধসের জেরে আটকে পড়ে হিমাচল প্রদেশ ট্যুরিজ়মের একটি বাস, একটি ট্রাক ও কয়েকটি ছোট গাড়ি। ধসের খবর পেতেই উদ্ধারকার্যে নামে পুলিশ ও রাজ্য় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। পরে সেনাবাহিনী, আইটিবিপি ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরেও খবর দেওয়া হয়। সে দিন দুপুর থেকেই শুরু হয় উদ্ধারকার্য।
বুধবার রাত অবধি মোট ১১টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় ঘটনাস্থল থেকে। আইটিবিপির তরফে জানানো হয়, ধসের জেরে ট্রাকটি সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বাসের অর্ধেক অংশও নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে। বাস ও পাথর চাপা পড়া গাড়ি মিলিয়ে কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০জন আটকে রয়েছে বলে সন্দেহ। পরে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে পুনরায় উদ্ধারকার্য শুরু হয়, তখনই খোঁজ মেলে বাসটির। রাস্তা থেকে ৫০০ মিটার নীচে ও সুতলেজ নদী থেকে ২০০ মিটার উপরে আটকে থাকতে দেখা যায় বাসের অর্ধেক অংশ। নীচে পড়ে যাওয়ায় এবং বাসের উপর প্রচুর সংখ্যক বোল্ডার এসে পড়ায় উদ্ধারকাজে বেগ পেতে হচ্ছিল। ওই বাসের ভিতর আটকে থাকা যাত্রীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনাও ক্ষীণ বলে মনে করছেন উদ্ধারকারী দল।
তবে বেলা গড়াতেই আরও দুটি দেহ উদ্ধার হয়, মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩-এ। কিন্তু গতকালও ফের ওই জায়গাতেই ফের ধস নামে। পাহাড় থেকে ক্রমাগত গড়িয়ে পড়তে থাকে বোল্ডার-পাথর। এর জেরে উদ্ধারকার্য বন্ধ করে দিতে হয়। বিকেল থেকেই ফের উদ্ধারকার্য শুরু হলেও তা বেশিক্ষণ চালানো যায়নি। এরপর এ দিন ভোর চারটে থেকে ফের উদ্ধারকার্য শুরু হয়। ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে আরও দুটি দেহ উদ্ধার করা হয়।গতকালই ধস কবলিত এলাকা আকাশপথে পরিদর্শন (aerial survey) করতে যান মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর (Jairam Thakur)। তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহেরও। তারা দুজনেই পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। বারংবার হিমাচল প্রদেশে ধস নামার কারণ হিসাবে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি বেআইনিভাবে নির্মাণকার্যকেও দায়ী করা হয়েছে। আরও পড়ুন: চলছে যমে-মানুষে টানাটানি! চিমনির ভিতরে রঙ করতে ঢুকেই ৪০ ফুট গভীরে আটকে ৭ শ্রমিক