
নয়া দিল্লি: পাক অধিকৃত কাশ্মীরের দখল এখনও পাকিস্তানের হাতেই। কিন্তু, কাশ্মীরের এই অধিকৃত অংশের জন্যও জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় ২৪টি আসন সংরক্ষণ করা হল। অর্থাৎ, ভবিষ্যতে কোনোদিন অধিকৃত কাশ্মীর ভারতের সঙ্গে যুক্ত হলে, জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় ২৪টি আসন থাকবে বর্তমানের পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে। বুধবার (৬ ডিসেম্বর) লোকসভায় এই ঘোষণা করে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রীতিমতো হুঙ্কারের সুরে বললেন, ‘পাক অধিকৃত কাশ্মীর আমাদের’। লোকসভায় এদিন জম্মু ও কাশ্মীর সংরক্ষণ বিল, ২০২৩ এবং জম্মু ও কাশ্মীর স্বীকৃতি বিল, ২০২৩-এর উপর আলোচনা করেন অমিত শাহ। আলোচনার সময় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এর মধ্যে অধিকৃত কাশ্মীরের জন্য বিধানসভায় আসন সংরক্ষণের পাশাপাশি, কাশ্মীর থেকে বিতাড়িত সম্প্রদায়ের জন্য আসন সংরক্ষণের মতো বিষয়ও রয়েছে।
অমিত শাহ জানিয়েছেন, কাশ্মীর থেকে বিতাড়িত সম্প্রদায়ের জন্য ২টি আসন সংরক্ষণ করা হবে। পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে যারা পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন, তাঁদের জন্যও ১টি আসন সংরক্ষণ করা হবে। আর তফসিলি জাতি ও উপজাতির জন্য ৯টি আসন সংরক্ষণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, “এর আগে জম্মুতে ৩৭টি আসন ছিল। এখন রাজ্য বিধানসভায় জম্মুর ৪৩টি আসন থাকবে। কাশ্মীরের আগে ৪৬টি আসন ছিল। এখন তার জায়গায় আসন সংখ্যা দাঁড়াবে ৪৭। আর যেহেতু পাক অধিকৃত কাশ্মীরও আমাদের, তাই এই এলাকার জন্য়ও বিধানসভায় ২৪টি আসন সংরক্ষিত থাকবে।” তিনি আরও দাবি করেন, ৭০ বছর ধরে যে মানুষদের অপমান করা হয়েছে, অবহেলা করা হয়েছে, এবং যারা অবিচারের শিকার হয়েছেন, তাঁদের ন্যায্য অধিকার দেবে এই দুই বিল। মোদী সরকার ২০২৪-এ ক্ষমতা ধরে রাখবে বলে আশা প্রকাশ করে, অমিত শাহ জানিয়েছেন ২০২৬-এর মধ্যেই জম্মু-কাশ্মীর পুরোপুরি সন্ত্রাসবাদ-মুক্ত হবে।
তিনি জানান, ভারতের সংবিধানে বলা হয়েছে, সমাজে বঞ্চিতদের সামনের সারিতে তুলে আনতে হবে। কিন্তু, তা করতে গিয়ে তাদের যেম অপমন না করা হয়, সেই দিকেও নজর রাখা উচিত। আর সেই কাজটাই করবে এই দুই বিল। তিনি আরও দাবি করেন, পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে ৪১,৮৪৪টি পরিবার ভিটেছাড়া হয়েছেন। আর ১৯৮০-র পর থেকে, সন্ত্রাসবাদের দাপটে কাশ্মীর ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল ৪৬,৬৩১টি পরিবার। এই মানুষদেরই প্রাপ্য অধিকার দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে এই বিলে।
পাক অধিকৃত কাশ্মীর হাতছাড়া হওয়ার জন্য এদিন ফের ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে দায়ী করেন অমিত শাহ। তিনি দাবি করেন, নেহরু দুটি বড় ভূল না করলে, আজ অধিকৃত কাশ্মীর ভারতের হাতেই থাকত। কী সেই দুই ভুল? প্রথমত ভারতীয় সেনা যখন পাক সেনার বিরুদ্ধে জয়ের মুখে, সেই সময় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিলেন নেহরু। আরও দুইদিন অপেক্ষা করলেই, পাকিস্তানকে পরাস্ত করতে পারত ভারতীয় সেনা। দ্বিতীয় ভুল ছিল, জম্মু-কাশ্মীর ইস্যুকে রাষ্ট্রপুঞ্জে টেনে নিয়ে যাওয়া। জওহরলাল নেহরুকে দোষারোপ করতেই বিরোধী সাংসদরা হইহই করে ওঠেন। কংগ্রেস সাংসদরা কক্ষত্যাগ করেন।