Bengaluru dog meat row: ৯০টি বাক্সে শহরে এল ২৭০০ কেজি মাংস! কীসের, কুকুরের নাকি?
Bengaluru dog meat row: পাঁঠা বলে কি বেআইনিভাবে বিক্রি হচ্ছে কুকুরের মাংস? গত শুক্রবার জয়পুর থেকে ৯০টি ইনস্যুলেটেড বাক্সে এসেছিল ২,৭০০ কেজি মাংস। আর তা থেকেই বিতর্কের শুরু। ডানপন্থী সংগঠনগুলির বিক্ষোভে ছড়িয়েছিল উত্তেজনা। তবে রবিবার (২৮ জুলাই), এই বিতর্ক এক নতুন মোড় নিল।
বেঙ্গালুরু: শহরে কি পাঁঠা বলে বেআইনিভাবে বিক্রি হচ্ছে কুকুরের মাংস? গত শুক্রবার থেকে এই প্রশ্নে উত্তাল ছিল কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরু। এর সূত্রপাত ঘটে বেঙ্গালুরু সিটি রেলওয়ে স্টেশনে আসা ৯০টি মাংস ভরা ইনস্যুলেটেড বাক্স। শুক্রবার সকালে জয়পুর থেকে এসেছিল বাক্সগুলি। সব মিলিয়ে ২,৭০০ কেজি মাংস ছিল। প্রশ্ন উঠতেই বাক্সগুলি বাজেয়াপ্ত করেছিল সরকার। তবে, ওই দিন সন্ধ্যায় ওই মাংস কুকুরের বলে দাবি করে স্টেশন ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিক্ষোভ দেখান বিভি্ন্ন ডানপন্থী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক কর্মী। তারা অভিযোগ করেছিল, রাজস্থান থেকে কুকুরের মাংস এনে সেগুলি বেঙ্গালুরুতে পাঁঠার মাংস বলে বেআইনিভাবে বিক্রি করা হচ্ছে। এই ঘটনা নিয়ে গোটা বেঙ্গালুরু জুড়েই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। তবে রবিবার (২৮ জুলাই), এই বিতর্ক এক নতুন মোড় নিল। খাদ্য নিরাপত্তা কমিশনারেটের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই মাংস পাঁঠারই।
খাদ্য নিরাপত্তা কমিশনার, কে শ্রীনিবাস স্পষ্ট জানিয়েছেন, বেঙ্গালুরুতে কুকুরের মাংস বিক্রি হচ্ছে না। পার্সেলে যে মাংস এসেছে, তা ছাগল বা পাঁঠার মাংস। তবে, তা কোনও সাধারণ ছাগলের মাংস নয়। ওই মাংস ছিল, সিরোহি নামে এক বিশেষ জাতের ছাগলের। এই ছাগল মূলত রাজস্থান এবং গুজরাটের কচ্ছ-ভুজ এলাকায় পাওয়া যায়। ছাগলগুলির লেজ সাধারণ ছাগল বা পাঁঠার থেকে সামান্য লম্বা হয়। গায়ে বিশেষ ধরনের দাগ থাকে। তাই, অনেকেই মৃত অবস্থায় ওই ছাগলকে কুকুর বলে ভুল করে থাকতে পারে। তবে, জয়পুর থেকে আসা ওই মাংস পারে, বেঙ্গালুরুর কিছু ব্যবসায়ী আনিয়েছিলেন। কারণ, এই মুহূর্তে কর্নাটকে, বিশেষ করে বেঙ্গালুরুতে ছাগলের মাংসের অভাব রয়েছে। এই অবস্থায় রাজস্থান থেকে ওই মাংস এনে তা বেঙ্গালুরুতে সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি করতে চেয়েছিলেন কিছু স্থানীয় ব্যবসায়ী।
বেঙ্গালুরুর গান্ধী কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের, প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক, বিএল চিদানন্দ বলেছেন, কর্নাটকের নিজস্ব প্রজাতির কোনও ছাগল নেই। এখানে ভেড়া রয়েছে। এই মুহূর্তে রাজ্যে, বিশেষ করে বেঙ্গালুরুতে, চাহিদা অনুযায়ী ছাগলের মাংসের ঘাটতি আছে। সেই ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ ঘাটতি পূরণের জন্যই বাইরে থেকে কম দামে ছাগলের মাংস নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, শুক্রবার সন্ধ্যার ঘটনা প্রবাহের প্রেক্ষিতে ওই দিন রাতেই তিনটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছিল পুলিশ। প্রথম এফআইআরটি ছিল মাংস নিয়ে আসার বিরুদ্ধে। কারণ, সন্দেহ করা হয়েছিল, ওই মাংসের সঙ্গে কুকুরের মাংস মেশানো থাকতে পারে। দ্বিতীয়টি ছিল, ‘গো-রক্ষক’ হিসেবে পরিচয় দেওয়া পুনীত কেরেহাল্লির বিরুদ্ধে। তিনি খাদ্য গুণমান বিভাগের কর্মকর্তাদের কাজে বাধা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তৃতীয় এফআইআরটিও পুনীত এবং তাঁর আরও চার সাগরেদের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত করা হয়েছে। সর্বজনিক স্থানে বেআইনি ভাবে লোক জড়ো করার জন্য। খাদ্য নিরাপত্তা কমিশনারের রিপোর্টের পর, প্রথম এফআইআরটি নিঃসন্দেহে প্রত্যাহার করা হবে। তবে, বাকি দুটির বিষয়ে পুলিশ কী ব্যবস্থা নেয়, সেটাই দেখার। এর পাশাপাশি, সোশ্যাল মিডিয়াতেও চলছে বিভ্রান্তিকর প্রচার।