MLA Sofia Firdous: ওড়িশা বিধানসভায় প্রথম মহিলা মুসলিম MLA, মাত্র ৩০ দিনে কামাল দেখান সোফিয়া
MLA Sofia Firdous: প্রচারের জন্য হাতে মাত্র একমাস পেয়েছিলেন। এই গরমেও প্রচারের ক্ষেত্রে এক মুহূর্ত নষ্ট করতে চাননি সোফিয়া। তিনি বলেন, সকাল ৬টায় প্রচার শুরু হত। দুপুর ২টা পর্যন্ত চলত প্রচার। তারপর আবার বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়তেন সোফিয়া।

ভুবনেশ্বর: নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথাই ছিল না তাঁর। ভোটে দাঁড়ানোর কথা ছিল তাঁর বাবার। প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন বাবার হয়ে প্রচার করার। কিন্তু, সেখানেই প্রার্থী হতে হল তাঁকে। প্রচারের জন্য সময় পেলেন মাত্র ৩০ দিন। আর সেই ৩০ দিনেই প্রচারে ঝড় তুলে ওড়িশার বিধানসভা নির্বাচনে ইতিহাস গড়লেন বছর বত্রিশের সোফিয়া ফিরদৌস। বারাবতী-কটক আসনে বিজেপির পূর্ণচন্দ্র মহাপাত্রকে ৮ হাজার ১ ভোটে হারিয়ে প্রথম মুসলিম মহিলা হিসেবে ওড়িশার বিধানসভায় পা রাখতে চলেছেন সোফিয়া।
সোফিয়ার বাবা মহম্মদ মোকিম ২০১৯ সালে কংগ্রেসের টিকিটে বারাবতী-কটক আসনে জয়ী হন। মোকিম রিয়েল এস্টেট সংস্থা মেট্রো গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। এবার তাঁরই প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, ওড়িশা রুরাল হাউসিং ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের ঋণ প্রতারণা মামলায় তাঁর তিন বছরের কারাদণ্ড হয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, সুপ্রিম কোর্ট তাঁর কারাদণ্ডের উপর স্থগিতাদেশ না দেওয়ায় এবার নির্বাচনে লড়তে পারেননি তিনি। তাঁর জায়গায় কংগ্রেস টিকিট দেয় তাঁর কন্যা সোফিয়াকে। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে বাবার নির্বাচনী প্রচারে দেখা গিয়েছে সোফিয়াকে। সোশ্যাল মিডিয়া এবং বাড়ি বাড়ি প্রচারের বিষয়টি দেখভাল করতেন তিনি। ফলে তাঁর উপরই আস্থা রাখে কংগ্রেস নেতৃত্ব।
সোফিয়ার নির্বাচনী প্রচার-
প্রচারের জন্য হাতে মাত্র একমাস পেয়েছিলেন। এই গরমেও প্রচারের ক্ষেত্রে এক মুহূর্ত নষ্ট করতে চাননি সোফিয়া। তিনি বলেন, সকাল ৬টায় প্রচার শুরু হত। দুপুর ২টা পর্যন্ত চলত প্রচার। তারপর আবার বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়তেন সোফিয়া। তাঁর কথায়, “মানুষের কাছে পৌঁছনোর জন্য মাত্র একমাস হাতে ছিল। ২৪ এপ্রিল বিধানসভা নির্বাচনে লড়ার টিকিট পাই। আমার কেন্দ্রে ভোট ছিল ২৫ মে। তাই, বাড়ি-বাড়ি প্রচারে বেশি জোর দিয়েছিলাম। আমার জন্য তা সত্যিই কাজে দিয়েছে। তাছাড়া আমার বাবার ভাল কাজের রিপোর্ট কার্ড গর্বের সঙ্গে শেয়ার করেছি।”
২০১৩ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নন্দিনী সতপথী সোফিয়ার অনুপ্রেরণা। ওড়িশার লৌহমানবী নন্দিনীর পথেই এগিয়ে যেতে চান ওড়িশার প্রথম মুসলিম মহিলা বিধায়ক।
ওড়িশা বিধানসভায় এখনও পর্যন্ত ১৪১ জন মহিলা বিধায়ক হয়েছেন। তার মধ্যে এই প্রথম কোনও মুসলিম মহিলা বিধায়ক হলেন। এই নিয়ে সোফিয়া বলেন, “একজন মুসলিম মহিলা হিসেবে ইতিহাস সৃষ্টি করেছি। কিন্তু, আমাদের বিধানসভায় মহিলাদের সংখ্যা খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। ১৪৭ আসনের বিধানসভায় এবার মাত্র ১১ জন মহিলা। এই সংখ্যা বাড়া উচিত। রাজনীতি-সহ সব ক্ষেত্রে মহিলাদের আরও এগিয়ে আসা উচিত। মহিলারা আমাকে রোল মডেল ভাবতে পারেন। আমার কাছে আদর্শ রাজনীতিবিদ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নন্দিনী সতপথী।”
