কোচি: নতুন পিলার তৈরির জন্য গর্ত খুঁড়তে নেমেছিল ছয়-সাতজন শ্রমিক। আচমকাই উপর থেকে হুড়মুড়িয়ে নামতে শুরু করল কাদামাটি। চিৎকার করার আগেই গলা অবধি কাদায় ভর্তি হয়ে গেল গর্তটা। কিছুক্ষণ বাদে ওই নির্মীয়মান বহুতলের নিরাপত্তারক্ষী কর্মীদের কোনও আওয়াজ না পেয়েই দেখতে আসেন, তখনই তিনি দেখতে পান কাদার মধ্যে আটকে রয়েছেন শ্রমিকরা। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় দমকল বাহিনীতে। তারা কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় কাদা সরাতে সক্ষম হলেও, ততক্ষণে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে চার পরিযায়ী শ্রমিকের। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে আরও তিনজন শ্রমিককে। জানা গিয়েছে, মৃত ওই চার শ্রমিকই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে কেরলের কোচিতে।
শুক্রবার বিকেলে কোচির কালামাস্সেরিতে দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দা ও দমকলবাহিনীর তৎপরতায় তিনজন শ্রমিককে উদ্ধার করা হয় এবং তাদের পার্শ্ববর্তী একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্যদিকে কাদার মধ্যেই আটকে, দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় চারজন শ্রমিকের। এখনও অবধি একজন শ্রমিকের খোঁজ মেলেনি, তার খোঁজে এখনও তল্লাশি অভিযান চলছে। জানা গিয়েছে, মৃত চারজন শ্রমিকই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কালামাস্সেরিতে ইলেকট্রনিক সিটিতে একটি নতুন বহুতল তৈরির কাজ চলছিল। তার জন্য পিলার তৈরি করতেই গর্ত খুড়েছিল শ্রমিকরা। লোহার কাঠামোটি যাতে ঠিকঠাকভাবে বসে, তার জন্য গর্তের মধ্যেই নেমেছিলেন ছয়জন শ্রমিক। সেই সময়ই পাশে জমে থাকা নরম কাদামাটি হুড়মুড়িয়ে গর্তের মধ্যে পড়তে শুরু করে। শ্রমিকেরা বেরিয়ে আসার আগেই কাদামাটিতে প্রায় পুরো গর্তটাই বুজে যায়। এক নিরাপত্তারক্ষী শ্রমিকদের দেখতে না পেয়ে বিপদ আঁচ করেন এবং দমকল বাহিনীতে খবর দেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। তাদের সাহায্যেই গর্ত থেকে শ্রমিকদের উদ্ধার করার কাজ শুরু করে দমকল বাহিনী।
রাজ্য় শিল্পমন্ত্রী পি রাজীব জানিয়েছেন, ওই নির্মীয়মান বহুতলে নিরাপত্তাবিধি সঠিকভাবে মানা হচ্ছিল না। ইতিমধ্যেই কনট্রাক্টরদের আটক করা হয়েছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, মৃত শ্রমিকদের নাম ফিজুল মন্ডল, নৌজেশ আলি, নুর আমিন মন্ডল ও কুদ্দুস মন্ডল। এর্নাকুলামের জেলাশাসক জাফর মালিক জানিয়েছেন, শীঘ্রই ওই শ্রমিকদের দেহ পশ্চিমবঙ্গে ফেরত পাঠানো হবে। কেরল সরকারই যাবতীয় খরচ বহন করবে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসন ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখে শ্রমিকদের সুরক্ষায় কোথায় কোথায় ঘাটতি রয়েছে, তাও খুঁজে বের করা হবে। শীঘ্রই রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে।