মুম্বই: বড় বড় ব্যবসায়ীদের বেআইনি লেনদেন ধরতে চালানো হত তল্লাশি অভিযান। পুলিশের এক শীর্ষকর্তাকে নিয়ে মূলত চারজনের দলই তল্লাশি চালাত, কিন্তু সেখান থেকে যে টাকা বাজেয়াপ্ত করা হত, তা আর সরকারি কোষাগারে জমা পড়ত না। এক ব্যবসায়ীর চিঠিই ফাঁস করল তল্লাশি অভিযানের পিছনে লুকিয়ে থাকা আসল রহস্য। মহারাষ্ট্রের থানের চার পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে এক ব্য়বসায়ীর কাছ থেকে ৬ কোটি টাকা ‘লুঠ’ করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ দায়ের হতেই থানের পুলিশ কমিশনার গোটা বিষয়টির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দিলীপ ওয়ালসে পাটিল ও থানের পুলিশ কমিশনার জয়জিৎ সিংয়ের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগ জানান ফয়জ়ল মেনন নামক এক ব্যবসায়ী। চিঠিতে তিনি জানান, অভিযুক্ত চার পুলিশকর্মী তাঁর কাছ থেকে জোর করে ৩০ কোটি টাকা আদায় করে নিয়েছেন। ওই ব্যবসায়ী অনুরোধ করার পর ওই পুলিশকর্মীরা তাঁকে ২৪ কোটি টাকা ফেরত দেন। নিজেদের জন্য ৬ কোটি টাকা সরিয়ে রাখেন তাঁরা।
অভিযোগকারী জানিয়েছেন, গত ১২ এপ্রিল মুম্বই পুলিশ স্টেশনের ইন্সপেক্টর, দুই সাব-ইন্সপেক্টর ও থানার এক কর্মী ফইজল মেননের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালাতে যান। তাঁদের সঙ্গে পুলিশকর্মী নন, এমন তিন ব্যক্তিও গিয়েছিলেন। বম্বে কলোনির ওই বাড়ি থেকে পুলিশ ৩০টি বাক্স উদ্ধার করে। প্রতিটি বাক্সের ভিতরেই ১ কোটি টাকার প্যাকেট ছিল। সমস্ত প্যাকেট বাজেয়াপ্ত করে মুম্বরা পুলিশ স্টেশনে নিয়ে আসা হয়। থানায় ওই ব্যবসায়ীকে প্রশ্ন করা হয় যে তিনি কোথা থেকে এত টাকা পেয়েছিলেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, ব্যবসায়ী মেনন জানান যে পুরোটাই তাঁর কষ্টার্জিত টাকা। কিন্তু পুলিশ অফিসার শেভালে ও তাঁর সহকারীরা তাঁর কথা শোনেননি এবং তাঁকে গালিগালাজ করেন। পুলিশকর্মীরা তাঁকে ওই টাকার অর্ধেক দিতে বলা হয়। ওই ব্যবসায়ী অনুরোধ করেন, এমনকি পুলিশকর্তাকে ২ কোটি টাকা দিতেও রাজি হন। এরপরে পুলিশকর্মীরা তাঁকে বাইরে অপেক্ষা করতে বলেন। কিছুক্ষণ পরে তাঁরা ৬ কোটি টাকা সরিয়ে বাকি ২৪ কোটি টাকা ব্যবসায়ীকে ফেরত দিয়ে দেন। অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার কোনও এক শীর্ষ কর্তাকে ফোন করে ৬ কোটি টাকায় রফা হওয়ার কথা জানালে, ও প্রান্ত থেকে ‘ভেরি গুড’-ও বলা হয় বলে অভিযোগ জানান ব্যবসায়ী। ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করা হয়েছে।